নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– প্রতি বছর ২৬ মার্চ দিনটি এপিলেপসি বা মৃগী রোগ নিয়ে সচেতনতার জন্য বিশ্ব জুড়ে ‘পার্পল ডে’ পালন করা হয়। যেখানে মৃগী রোগ নিয়ে সচেতনতার পাশাপাশি মৃগী রোগীদের পাশে থাকার বার্তা নিয়ে সকলে পার্পল রঙের পোশাক পড়ে। রবিবার দুর্গাপুরে বি ওয়ান মোড়ে অবস্থিত একটি বেসরকারি নিউরো ক্লিনিকের পক্ষ থেকে বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটি পালন করা হয়। আলোচনা সভার পাশাপাশি আয়োজন করা হয়েছিল ‘ওয়াক ফর এপিলেপসি’ শীর্ষক বিশেষ র্যালির। এদিনের এই অনুষ্ঠানে দুর্গাপুরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের প্রায় জন ১০০ নার্সিং পড়ুয়ারা অংশগ্রহণ করেছিল। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ, মহকুমা শাসক সৌরভ চ্যাটার্জী, দুর্গাপুর পৌর নিগমের পুর-প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপারসন অনিন্দিতা মুখার্জি, বিশিষ্ট নিউরো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রবীণ কুমার যাদব সহ বিশিষ্টজনেরা।
প্রসঙ্গত এই ‘পার্পল ডে’ তে এপিলেপসি বা মৃগী রোগ নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও ভুল ধারণা দূর করার চেষ্টা করা হয়। অনেকেই মনে করেন মৃগীরোগ মানসিক সমস্যা । কিন্তু চিকিৎসকদের মতে এটি শুধুই শারীরিক সমস্যা। এবং এই রোগ সংক্রামক নয়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতি বছর প্রায় ৬ কোটি মানুষ এই এপিলেপসি বা মৃগী রোগে আক্রান্ত হয়। চিকিৎসকদের মতে যদি ঠিক সময়ে এই রোগ ধরা পড়ে ও চিকিৎসা শুরু হয় তাহলে সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এছাড়াও মৃগীরোগ সম্পর্কে বিভিন্ন দেশে নানা ভুল ধারণা প্রচলিত রয়েছে। সেই কারণে অনেক সময়ই মৃগী রোগীদের সমস্যায় পড়তে হয় এবং এই রোগ সারানো কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাই এই রোগ নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর উপর জোর দেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকদের মতে, সাধারণ রোগীদের চেয়ে মৃগী আক্রান্তদের অকালে মৃত্যুর আশঙ্কা তিনগুণ বেশি। সেই কারণে এই রোগের বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি। মৃগীরোগ অবহেলা করা চলবে না। এখনও পর্যন্ত মৃগীরোগ পুরোপুরি সারানোর কোনও উপায় খুঁজে বের করতে পারেননি গবেষকরা। তবে ওষুধের মাধ্যমে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
২০০৮ সাল থেকে ‘পার্পল ডে’ পালন শুরু হয়। আমেরিকার বাসিন্দা মৃগীরোগে আক্রান্ত এক মহিলা ক্যাসিডি মেগান এই দিনটি পালন করার উদ্যোগ নেন। তাঁর এই উদ্যোগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় দ্য এপিলেপসি অ্যাসসোসিয়েশন অফ দ্য মেরিটাইমস। এরপর ২০০৯ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে দিনটি।