eaibanglai
Homeএই বাংলায়আয়া সাপ্লাই'র নামে দুর্গাপুরে কি এবার 'দুয়ারে কলগার্ল' পরিষেবা ? চাঞ্চল্য

আয়া সাপ্লাই’র নামে দুর্গাপুরে কি এবার ‘দুয়ারে কলগার্ল’ পরিষেবা ? চাঞ্চল্য

স্টাফ রিপোর্টার, দুর্গাপুরঃ- বিউটি পার্লারে পুলিশের এখন কড়া নজর, তাই ‘আয়া সেন্টার’ খুলে যৌন দাসী সরবরাহ এক ‘নয়া ধান্দা’ ফুলে ফেপে উঠেছে শহরের মুলতঃ বিধাননগর, সিটিসেন্টার ও বেনাচিতি এলাকায়, বলে তথ্যাভিজ্ঞ মহল থেকে জানতে পেরেছেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা আধিকারিকেরা। সুত্রমারফত জানা গেছে কলগার্লের হোম ডেলিভারি বা ‘দুয়ারে যৌনকর্মী’ বিষয়টি নিয়ে জোর কদমে তদন্তও শুরু করেছে গোয়েন্দা বিভাগ।

পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, “আয়া সেন্টারের আড়ালে বেশ সাজিয়ে গুছিয়েই সেক্স পার্টনার বা কলগার্ল সাপ্লাই শুরু হয়েছে দুর্গাপুর শহরের কয়েকটি জায়গা থেকে। সম্প্রতি বিউটি পার্লারগুলিতে রেইড হওয়ার পরই এই নতুন ধান্দার উৎপত্তি শুরু হয়েছে এখানে।” তিনি আরো জানান , “এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ এখনো পুলিশের হাতে আসেনি ঠিকই, তবে আমাদের গোয়েন্দা দপ্তর কয়েকটি জায়গা থেকে বেশ কিছু ইনফরমেশন পেয়েছে। দুর্গাপুজোর সময় লক্ষ্য করে দেখা গেছে – সুস্থ মানুষেরাও সন্ধ্যার পর ফোন করে ‘আয়া’ বুক করছেন। এসব তথ্য এখন আমাদের হাতে এসেছে।”

বিগত দু’বছর ধরে দুর্গাপুরের সিটিসেন্টার, বিধাননগর, ইস্পাত নগরী, বেনাচিতি এলাকাগুলিতে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠেছে অন্ততঃ ৩০টি আয়া সেন্টার। এদের কাজ মূলতঃ বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, শিশুদের দেখভাল করার পাশাপাশি অসুস্থ রোগীদের সেবা’র পরিষেবা দান করা। একেকটি আয়া সেন্টারে কম করে এক ডজন করে নথিভুক্ত আয়া রয়েছেন। আয়ার কাজ করতে যারা এইসব উটকো সেন্টারগুলিতে নাম নথিভুক্ত করেছেন, তারা মূলতঃ আসছেন শহরের এবং শহর লাগোওয়া বস্তি এবং উদ্বাস্তু কলনীগুলি থেকে। এরা মূলতঃ নিম্নবিত্ত শ্রেণীর গৃহবধূ অথবা অবিবাহিতা যুবতী। রোগীদের সহায়তা দেওয়ার জন্য একজন নার্সের যেমন প্রশিক্ষণ থাকে, এই সব আয়াদের কিন্তু সে সব নেই। আয়া সেন্টারগুলির তরফে সেসব প্রশিক্ষণের কোন ব্যবস্থা বা পরিকাঠামোও নেই। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ শেখ মহম্মদ ইউনুস বলেন, “আয়াদের প্রশিক্ষণের কোন ব্যবস্থা সরকারিভাবে নেই বা এইসব আয়া সেন্টার চালানোর কোন রকম অনুমোদনও রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর দেয় না। নেই কোনো গাইডলাইনও। ডাঃ ইউনুস বলেন, “আয়া সেন্টারের নামে দেহ ব্যবসা চালানোর কোনো অভিযোগ আমরা এখনো অব্দি পাইনি।”

সরকারি ছাড়পত্র, প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষণই নেই, অথচ রমরমিয়ে চলছে আয়া সেন্টার গুলি। কেন? এ প্রশ্নে গলা মিলিয়েছেন সিটিসেন্টারের ‘নন্ কোম্পানি রেসিডেন্টস্ অ্যাসোসিয়েশনে’র সহ-সভাপতি পিযূষ মজুমদারও বলেন, “এখানেও এরকম কয়েকটি আয়া যোগান দেওয়ার কোম্পানি ব্যবসা করছে। আমাদের কানেও এসেছে এদের ব্যবসার আড়ালে নোংরা কারবারের কথা।” তার দাবি, “আমরা তো এসব কাজ বন্ধ করার অধিকারি নয়। এসব দেখার কথা তো এলাকার কাউন্সিলার বা পুলিশের। তাই, সব দেখে শুনেও আমরা অসহায়। আশারাখি এ ব্যাপারে পুলিশ সক্রিয় হবে।” বিষয়টি নিয়ে পুলিশ যে হাতগুটিয়ে বসে নেই তা অবশ্য স্পষ্টই বোঝা গেল দুর্গাপুর পুলিশের ডেপুটি কমিশনার(পূর্ব) অভিষেক গুপ্তার কথায়। তিনি বললেন, “অবৈধ দেহ ব্যবসার ব্যাপারে আমাদের একেবারে ‘জিরো টলারেন্স’ রয়েছে। এখনো কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। তবে, বিষয়টিতে নজর রাখছি আমরাও”

শুধু সিটিসেন্টার, বিধাননগর, বেনাচিতিই নয়, ইস্পাত নগরীর জয়দেব এভিন্যু, ভারতী রোড এলাকাতেও ব্যবসা চালাচ্ছে হরেক আয়া সেন্টার। এরকমই এক আয়া সেন্টারের মালিক মধ্য ৩০-র এক যুবক বলেন, “কাস্টমারকে তার চাহিদামতো খুশ করাই আমাদের কাজ। আমরা শুধু সেবার পরিষেবা দিই। কারোর বাড়ীতে গিয়ে আয়া কোন কোন কাজে সম্মত হচ্ছে তা আমরা কি করে জানব? আমাদের কাছে আজ পর্যন্ত কোনো আয়া অভিযোগ করেনি।”

আয়া সেন্টার গুলির স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমোদন না থাকলেও, এরা দুর্গাপুর নগর নিগম থেকে ট্রেডলাইসেন্স নিয়েছে যথারীতি। কিন্তু, এক ব্যবসার আড়ালে অন্য ব্যবসার বিষয়ে নগরনিগমও হতবাক। নগর নিগমের প্রশাসক মন্ডলীর স্বাস্থ্য বিষয়ক অধিকর্তা রাখি তেওয়ারী বলেন, “আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগের থেকে ওরা কোন ছাড়পত্র নেয়না। শুধু ট্রেডলাইসেন্স করায়। অসুস্থ মানুষের সেবার নামে দেহ ব্যবসার অভিযোগ তো মারাত্মক ব্যাপার। আগামী ২৮অক্টোবর আমাদের প্রশাসক বোর্ডে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। তারপরই দেখবো কি করা যায় এদের নিয়ে।”

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments