নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুরঃ– শিক্ষক দিবস- শিক্ষকদের জন্য একটি দিন, যে দিনটিতে মানুষ গড়ার কারিগরদের সম্মান জানানো হয়। স্কুল কলজ সহ নানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও এদিন জাতীয় স্তরে ও রাজ্য সরকারি স্তরেও গুণী শিক্ষকদেরও সম্মানিত করা হয়। কিন্তু এদিন দুর্গাপুরের একটি পশুপ্রেমী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সম্মান জানালো অন্য এক শিক্ষককে। না, তিনি কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তথাকথিত শিক্ষক নন। তবুও তাকেই মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে স্বীকৃতি দিল দুর্গাপুরের স্বেচ্ছা সেবী সংগঠনটি। সংগঠনটির কর্তৃপক্ষের মতে তিনি আমাদের সমাজের তথাকথিত শিক্ষক না হলেও কচিকাঁচাদের হাতে নানা যন্ত্রপাতি তুলে দিয়ে তাদের ভিবষ্যতের কারিগর হিসেবে গড়ে তুলছেন। তিনি দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গির সুখেনবাবু। তবে তিনি এলাকায় সুখেন কাকু বা সুখেন দা হিসেবেই বেশী পরিচিত। দীর্ঘদিনের মেকানিক। আর তিনিই এলাকার দুঃস্থ পথ শিশু কিশোরদের সুস্থ জীবন উপহার দিতে তাদের এই কঁচি বয়স থেকেই কারিগর হিসেবে গড়ে তুলছেন। যাতে ভবিষ্যতে এই কচিকাঁচাদের কখনও বেকারত্বের সম্মুখীন হতে না হয় এবং দুবেলা দুমুঠো খাবার জোগাড় করে বেঁচে থাকার জন্য কোনও অসৎ উপায় অবলম্বন করতে না হয়। অনেকের কাছেই ওই ছোট হাতে বই খাতার বদলে যন্ত্রপাতি তুলে দেওটা অনুচিৎ মনে হতে পারে, কিন্তু সুখেনবাবুর মতে পড়শুনা শিখে শিক্ষিত হওয়া প্রয়োজন কিন্তু ওই পড়শুনা বেকারত্বের মুখোমুখি না হওয়ার গ্যারেন্টি দিতে পারে না। কিন্তু তাঁর শেখানো হাতের কাজের জেরে এই সব কচিকাঁচারা ভবিষ্যতে কোনও দিন বেকার থাকবে না। সৎ উপারে অন্তত নিজের খাবার টুকু উপার্জন করতে সক্ষম হবে। তাই ওরা কোনো দিন বেকারত্বকে ভয় পাবে না। আর এই হাতের কাজ বা কারিগরি শিক্ষার সাথে তথাকথিত শিক্ষার মিশেলে হয়তো কেউ এতটাই সক্ষম হয়ে উঠবে যে আরও পাঁচজনের কর্ম সংস্থানের উপায় করে দিতে পারবে।
এহেন সুখেনবাবুকে শিক্ষক দিবসের দিন সম্মান জানাতে পেরে নিজেদের ধন্য বলে মনে করছেন পশুপ্রেমী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির কর্তৃপক্ষ। আর তাদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন শহরের সাধারণ মানুষও। অন্যদিকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়ে এদিন তাদের পাশে দাঁড়ান ফরিদপুর ফাঁড়ির পুলিশ আধিকারিক মদনমোহন দত্ত।