নিউজ ডেস্ক, এই বাংলায়ঃ দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত দুর্গাপুর নগর নিগমের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত সগরভাঙ্গার ঘোষ মার্কেটের বাসিন্দা কিশোর সোনার। পেশায় গাড়ি চালক কিশোর ভেবেছিলেন দলের সক্রিয় কর্মী হিসেবে দীর্ঘ দিন ধরে দলের সঙ্গে যুক্ত থাকায় দল ক্ষমতায় এসে হয়তো তার একটা চাকরির ব্যবস্থা হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। প্রতিশ্রুতির পর প্রতিশ্রুতি মিললেও দীর্ঘ ১৭ বছর পেরিয়ে গেলেও কোনও কাজ মেলেনি। তাই দলের প্রতি চরম হতাশ হয়ে চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে কিশোর সোনার। বৃহস্পতিবার নিজের বাড়িতেই কুয়োর রডে গলায় দড়ি নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে কিশোর। বাড়ির সদস্যদের ঠিক সময়ে নজরে পড়ে যাওয়ায় দ্রুত তাকে উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিশোর নামে ওই তৃণমূলকর্মী। কিশোরের মা রেখা দেবীর বয়ান অনুযায়ী, দীর্ঘদিন তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছেলে বেশ কিছুদিন ধরেই একটা কাজ না পাওয়ায় হতাশায় ভুগছিল। সেই হতাশা থেকেই এই চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে। বর্তমানে কিশোরের চিকিৎসার জন্য অর্থের প্রয়োজন, কিন্তু দলের তরফে কোনও সাহায্য করা হয়নি। অন্যদিকে শুক্রবার সকালে বিরোধী দলের সদস্যের বর্তমান অবস্থা জানতে এবং পরিবারের পাশে দাঁড়াতে কিশোরের বাড়িতে পৌঁছান জেলার বিজেপি সভাপতি লক্ষণ ঘড়ুই এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। সেখানে রাজনৈতিক বিরোধকে দূরে সরিয়ে কিশোরের পরিবারের হাতে তিন হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য তুলে দেন লক্ষ্মণ ঘরুই। তিনি জানান, এলাকায় দলের সদস্য পদ সংগ্রহের কর্মসূচী চলাকালীন কিশোরের এহেন অবস্থার কথা জানতে পেরে দলীয় কর্মীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে সংগৃহীত অর্থ কিশোরের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে বিজেপির তরফে ঘটনাটিকে সৌজন্যের রাজনীতি বলে দাবি করা হলেও বিজেপির এহেন পদক্ষেপকে মোটেও ভালো ভাবে নেননি জেলার তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখার্জি। তাঁর অভিযোগ, রাজনৈতিক স্বার্থেই কিশোরের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে বিজেপি। তিনি জানান দলীয় কর্মীরা কিশোরের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছে। দীর্ঘদিনের কর্মী কিশোরের পাশে তৃণমূল কংগ্রেস সবসময় রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।