নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- অখণ্ড ভারতের বার্তা নিয়ে সাইকেলে কেদারনাথ ভ্রমণ করে শনিবার শহরে ফিরলেন দুর্গাপুরের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের দামোদর কলোনির বাসিন্দা শিবু ঘোষ। ৫২ দিনের যাত্রা শেষে এদিন তিনি শহরে ফিরতেই বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে অভ্যর্থনা জানায় শহরবাসী। এদিন দুর্গাপুরের গ্যামন ব্রিজ মোড় থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহকারে শিবুকে স্বাগত জানানো হয়। এলাকার যুবক শিবু ঘোষকে বরণ করে নিতে উপস্থিত হয়েছিলেন দুর্গাপুর পশ্চিমের প্রাক্তন বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল।
অখণ্ড ভারতের বার্তা নিয়ে গত ১৩ এপ্রিল একটি সাধারণ সাইকেল কেদারনাথের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন শিবু। সেখানে পৌঁছে কেদারনাথ, বদ্রিনাথ, তুঙ্গনাথ দর্শন করে, ফেরার পথে অযোধ্যা রামমন্দির দর্শন করে ফের নিজের শহরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন দুর্গাপুরের এই যুবক। তবে এই যাত্রা খুব একটা সহজ ছিল না। বিশেষত কেদারনাথে যাওয়ার জন্য যে ২২ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ ট্রেকিং করতে হয়, ওই পথ সাইকেলে যাওয়া অসম্ভব বলে জানিয়েছিলেন অনেকেই। কারণ ওই পথ এতটাই খাড়া ও দুর্গম যে অধিকাংশ যাত্রীরা ঘোড়ায় চড়ে ওই পথ এতিক্রম করেন। স্থানীয় প্রশাসনও প্রথমে বাধা দিয়েছিল। যদিও শেষে তার উৎসাহ ও আত্মবিশ্বাস দেখে অনুমতি দেয়। তবে এর কৃতিত্ব ভোলেবাবা আর স্থানীয়দের দিয়েছেন দুর্গাপুরের এই সাহসী যুবক। শিবুর কথায় ভোলে বাবার কৃপা ও স্থানীয়রা তার পাশে না থাকলে তিনি ওই দুর্গম পথ সাইকেল নিয়ে অতিক্রম করতে পারতেন না। পাশাপাশি এই যাত্রা পথে মানুষের মানবিকতা ও ভালোবাসার কথাও তুলে ধরেন শিবু। তিনি জানান উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ বিহার সব রাজ্যের মানুষের সহযোগীতা পেয়েছেন তিনি। বিশেষ করে উত্তরাখণ্ডের মানুষের কাছে। অনেক সময় দুর্গম জঙ্গল কিংবা পাহাড়ি নদির পাশে রাত কাটাতে হয়েছে তাকে। আর তখন তার খাওয়া দাওয়া থাকার ব্যবস্থা করে দিতেন স্থানীয়রাই। যেখানে হিন্দু মুসলমান বা জাত পাত কোনও বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। ধর্ম জাতপাতের উপরে যে মানবিকতা ও ভালোবাসা এই দীর্ঘ যাত্রায় তিনি তা অনুভব করেছেন বলেও জানান শিবু।
কিন্তু কেন অখণ্ড ভারতের বার্তা? শিবু জানান ব্রিটিশরা নিজেদের স্বার্থে জাতপাত ধর্মের জিগির তুলে আমাদের বিশাল ভারতবর্ষকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিয়ে গেছে। আমরা যদি ফের একত্রিত হতে পারি তবে অখণ্ড ভারত একদনি বিশ্বের সবথেকে শক্তিশালি দেশ হিসেবে আত্নপ্রকাশ করবে।