নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– বিশ্বের মূল্যবান রত্নগুলির মধ্যে অন্যতম পান্না। ভারতীয় জ্যোতিষশাস্ত্র মতেও পান্না খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি রত্ন। জ্যোতিষমতে নব রত্নের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রত্ন পান্না। সবুজ রঙের এই পাথর তার সৌন্দর্যের জন্যও জগৎবিখ্যাত। তবে ১০ থেকে ৩০ গ্রামের পান্না সাধারণত দেখা যায়। এবার আফ্রিকা মহাদেশের জাম্বিয়া দেশের কাজেম খনি থেকে উদ্ধার হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পান্না যার ওজন প্রায় দেড় (১.৫০৫) কেজি। আর যার বাজারদর ১৫ কোটি টাকারও বেশি। বিশ্বের সর্ববৃহৎ পান্নাটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘চিপেমবেল’।
আর বিশ্বের এই বৃহত্তম পান্না আবিষ্কার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন দুর্গাপুরের বাঙালি যুবক তথা ভূতাত্ত্বিক মানস বন্দ্যোপাধ্যায়। এত বড় পান্না এ গ্রহে এর আগে কখনও আবিষ্কার হয়নি। সম্প্রতি এই রত্নের খোঁজ জায়গা করে নিয়েছে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও। তার পর থেকেই বাঙালি এই ভূতাত্ত্বিককে নিয়ে শুরু হয়েছে মাতামাতি।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই পান্নাটি উদ্ধার হয়েছে গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের জুলাই মাসে। বাঙালি ভূতাত্ত্বিক মানস বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও ওই পান্না খোঁজের দলটির মধ্যে ছিলেন খনি বিশেষজ্ঞ রিচার্ড কাপেটা সহ ৬ জন। গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের তরফে এই গোটা দলটিকেই কৃতিত্ব দেয়া হয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম পান্না আবিষ্কারের জন্য।
দুর্গাপুরের বিধাননগরের বাসিন্দা হলেও মানসের শৈশব ও স্কুল বেলা কেটেছে শিল্পাঞ্চলেরই ডিএসপি টাউনশিপে। বাবা ছিলেন ডিএসপি’র কর্মী। সেখানে কাশীরাম দাস স্কুলে পড়াশুনা। পরে দুর্গাপুর গভর্নমেন্ট কলেজ থেকে স্নাতক হয়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূতত্ত্ব নিয়ে এমএএমসি পাশ করেন। এরপর কিছুদিন মুম্বইতে চাকরি করেন। পরে উড়ে যান সৌদি আরব। সেখানে এক খনি সংস্থায় রত্ন পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ শুরু করেন। চার বছর ওই সংস্থার সঙ্গে কাজ করেন মানস। এরপর গত বছর খনি বিশেষজ্ঞ রিচার্ড কাপেটা ও তাঁর দলের সঙ্গে দক্ষিণ-মধ্য আফ্রিকার জাম্বিয়া দেশে পাড়ি দেন রত্নের সন্ধানে। আর সেখানেই মেলে এই সাফল্য। বর্তমানে স্ত্রীর সঙ্গে দুর্গাপুরেই রয়েছেন মানস। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে তিনি যোগ দিয়েছেন অন্য একটি সংস্থায়। তবে বিশ্বের সর্ববৃহত পান্না উদ্ধার করেও ক্ষান্ত নন দুর্গাপুরের এই যুবক। আরও বড় ও অমূল্য রত্নের খোঁজে ইতিমধ্যেই গবেষণা শুরু করে দিয়েছেন তিনি।