eaibanglai
Homeএই বাংলায়বিদ্যুৎ মহার্ঘ্যঃ দলে দলে ডিভিসি ছেড়ে রাজ্যের বিদ্যুৎ নিচ্ছে লোহা কারখানাগুলি

বিদ্যুৎ মহার্ঘ্যঃ দলে দলে ডিভিসি ছেড়ে রাজ্যের বিদ্যুৎ নিচ্ছে লোহা কারখানাগুলি

স্টাফ রিপোর্টার, দুর্গাপুরঃ- ইউনিট পিছু বিদ্যুতের দাম বেশি, তাই ডিভিসি (দামোদর ভ্যালী কর্পোরেশন)র বিদ্যুৎ ছেড়ে এবার রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার দিকেই ঝুঁকছেন শিল্পোদ্যোগীরা। পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা দুটির অন্ততঃ ১৮টি শিল্প সংস্থা গত এক মাসে ডিভিসি’র বিদ্যুৎ ছেড়ে রাজ্য সরকারি সংস্থার বিদ্যুৎ নেওয়ার জন্য আবেদনপত্র জমা দিয়েছে, যার মধ্যে ৩টি সংস্থাকে নতুন সংযোগও দিয়ে দিয়েছে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা (এস.ই.ডি.সি.এল)।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে ‘বিদ্যুৎ সংযোগ মেলা’র আয়োজন করে বর্ধমান ভবনে ডিভিসির বরিষ্ঠ আধিকারিকেরা জানান, পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খন্ডের বিভিন্ন শিল্প সংস্থাকে ডিভিসি ৩০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করে এবং এক বছরে যা বেড়ে ৪৫০০ মেগাওয়াট হবে। দাম কমানো হবে ইউনিট পিছু বিদ্যুতেরও। সেই লক্ষে ডিভিসির এ রাজ্যের ২২টি ও প্রতিবেশী ঝাড়খন্ডে ২৭টি সাবশ্টেশনে জোর কদমে পরিকাঠামো উন্নয়ন করা হচ্ছে। শিল্প ক্ষেত্রে ডিভিসির ইউনিট পিছু বিদ্যুতের দাম এ রাজ্যে ৪.৭০ টাকা থেকে গত ৬মাসে আচমকাই বাড়িয়ে করা হয়েছে ৬.৫০ টাকা। ঝাড়খণ্ডে আবার একই সংস্থা ইউনিট পিছু ৪.২৫ টাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে কলকারখানাগুলিতে। কিন্তু, মাইথন, আসানসোল, জামুড়িয়া, রানিগঞ্জ, বড়জোড়া, দুর্গাপুর, পানাগড়ের গুচ্ছ গুচ্ছ স্পঞ্জ আয়রন, ফেরো অ্যালয়, রোলিংমিলগুলিতে গত এপ্রিল মাস থেকে পর পর দু’মাসে ইউনিট পিছু ৫.৩০ টাকা ও তারপর থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৬.৫০ টাকা প্রতি ইউনিট হিসেবে বিল পাঠাচ্ছে ডিভিসি। এ রাজ্যের স্টিল রোলিংমিলস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান বিবেক আদুকিয়া বলেন, ”ওদের এইরকম খামখায়েলীপনায় আমাদের সংস্থাগুলিতে যাকে বলে চরম সংকটের সৃষ্টি হয়। আমাদের অ্যাসোসিয়েশনের ছাতার তলায় ১১০টি বড় ও মাঝারি লোহা কারখানা আছে, যাদের মাথায় বাজ পড়ল ডিভিসি’র এই তুঘলকিপনায়।” এ প্রসঙ্গে দুর্গাপুরস্থিত ডিভিসি’র এক পদস্থ কর্তা বলেন, “বিদ্যুৎ মাশুল বাড়াতে আমরা বাধ্য হয়েছি। কারণ, বিদেশ থেকে আমদানি করা কয়লার দাম যথেষ্ট বেড়ে গেছে এক বছরে। দাম না বাড়ালে আমাদের আর উপায় নেই।”

দাম বৃদ্ধির দরুন ডিভিসি ছাড়তে চাওয়া শিল্প কারখানাগুলির জন্য হাট করে দরজা খুলে দিয়েছে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। গত পাঁচ মাসে এস.ই.ডি.সি.এল শিল্প ক্ষেত্রে তাদের ইউনিট পিছু বিদ্যুতের দাম ৬.৯১ টাকা থেকে কমিয়ে ৬ টাকা করে দিয়েছে। আর এই মোক্ষম চালেই দলে দলে কারখানাগুলি এখন রাজ্য সরকারি সংস্থার দরজায় কড়া নাড়ছে। রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান রাজীব সিনহা বলেন, “রাজ্য সরকারের পরিচালনাধীন ইন্ডাসট্রিয়াল পার্কগুলির যেখানে যেখানে ডিভিসি বিদ্যুৎ সরবরাহ করে, সেখানে সেখানে আমরা বিদ্যুতের দাম আরো কমাবো। পুরুলিয়ার রাঘুনাথপুর, দুর্গাপুরের পানাগড়ের শিল্পতালুকে এই সুবিধা দ্রুত লাগু করা হবে।” ইতিমধ্যেই জামুড়িয়ার দুটি, মঙ্গলপুরের একটি, পানাগড়ের দুটি সংস্থা ডিভিসি’র সংযোগ ছেড়ে এস.ই.ডি.সি.এলের সংযোগ নিয়ে নিয়েছে। “আমাদের কাছে এই মুহূর্তে আরো ১৮টি কারখানায় আবেদন জমা পড়েছে। দ্রুত সে গুলিকে সংযোগ দেওয়া হবে। আসলে, এখন আমাদের বিদ্যুৎ ডিভিসির তুলনায় ইউনিট পিছু ৪৯পয়সা সস্তা। তাই আত আবেদন জমা পড়ছে,” বললেন রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বর্ধমান জোনাল ম্যানেজার পার্থ প্রতিম দত্ত।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments