সংবাদদাতা, বাঁকুড়াঃ- হাতির হামলায় এবার প্রান গেল বন কর্মীরই। এই নিয়ে প্রথম দুটি মাসে হাতির হামলায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো আটে।
গত শুক্রবারই গঙ্গাঁজলঘাঁটিতে এসে বনমন্ত্রী রাজিব ব্যানারজী বলেন, হাতির পাল ঠেকাতে দক্ষিনবঙ্গেঁর জেলা গুলিতে যত সংখ্যক বনকর্মী প্রয়োজন, তা অমিল। তাই তিনি বারে বারে জঙ্গঁল লাগোওয়া গ্রাম গুলিতে ‘হাতি-মানুষ’ দন্দ মেটাতে, এলাকাবাসী কে সচেতন হবার ওপর জোর দেন। পাশাপাশি, মন্ত্রী বন কর্মীদের নির্দেশ দেন – জঙ্গঁল এলাকার পাশে থাকা লোকালয় গুলিতে যাতে বুনো হাতি ঢুকে না পরে, তার জন্য হাতির পালের ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে।
রবিবার ভোরে বন দপ্তরের কর্মী ভাগ্যধর মান (৫২) একটি সাইকেলে চড়ে বেলিয়াতোড় রেঞ্জের শিরষা গ্রাম লাগোওয়া এলাকায় হাতির গতিবিধির ওপর নজরদারি করছিলেন। তখনই একটি দলছুট দাঁতাল আচমকাই তার ওপর চড়াও হয়। তাকে শুঁড়ে তুলে আছাড় মারে। প্যাঁ দিয়ে থেঁতলে দেয় তার মাথাটিও। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
বারবার হাতির হামলায় মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বিগ্ন বন দপ্তরের পাশাপাশি ‘হাতি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবিতে সংগ্রামী গনমঞ্চ’ নামে একটি সংগঠনও। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বাঁকুড়া (উত্তর) বিভাগীয় বনাধিকারিক কে সংগঠনটি ৯ দফা দাবি সম্বলিত একটি ডেপুটেশন দেয়। তাতে দাবি করা হয়- বাংলা-ঝাড়খন্ড সীমান্তের মুয়ূর ঝর্ণা প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করে জঙ্গঁলের হাতিগুলি কে সেখানে ফেরৎ পাঠাতে হবে। পাশাপাশি, হাতির হামলায় মৃতের পরিবার কে সরকারি চাকরি দিতে হবে। সংগঠনের সম্পাদক শূভ্রাংশু মুখারজী বলেন, “বছরের পর বছর জেলার বিভিন্ন প্রান্তে হাতির হামলায় মানুষ মরছে আর প্রশাসন দায় সারা ভাব নিয়ে বসে আছে। এ ভাবে চলতে পারে না”।
বড়জোড়ার বিধায়ক সুজিৎ চক্রবর্তী ইতিমধ্যেই হাতির তান্ডবের বিষয়টি রাজ্য বিধানসভায় উত্থাপন করে সমস্যার দ্রুত সমাধান চেয়েছেন। তিনি বলেন, “হাতি বাঁকুড়া জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার জ্বলন্ত সমস্যা। মুখ্যমন্ত্রী গত সপ্তাহে বাঁকুড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে এলেন বটে, তবে হাতি সমস্যা নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারন করলেন না”।
শুক্রবার রাত্রেও জামগাড়ি গ্রামে ১৫ টি হাতির পাল হামলা চালায়। ফসল নষ্টের পাশাপাশি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় দুটি পাকা বাড়ির দেওয়াল। গত কয়েকদিন ধরে বাঁকুড়া (উত্তর) বন বিভাগের সোনামুখি, গঙ্গাঁজলঘাঁটি, বড়জোড়া ও বেলিয়াতোড় রেঞ্জ এলাকায় হাতির উপদ্রব বিস্তর বেড়েছে। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এলাকার মানুষ।