সংবাদদাতা, আসানসোল:- ৫৫ জন যক্ষা রোগীকে চিকিৎসা চলাকালীন টানা ছয় মাস ধরে খাবার দেওয়ার এক অভিনব উদ্যোগ নিল আসানসোল জেলা হাসপাতালে চিকিৎসক ও কর্মীরা। জানা গেছে, এই মুহুর্তে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় প্রায় ৩ হাজার যক্ষা আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। এইসব রোগীর চিকিৎসা চলছে জেলার বিভিন্ন ব্লক ও আসানসোল জেলা হাসপাতালে।
শুক্রবার রাজ্যের মধ্যে এই প্রথম আসানসোল জেলা হাসপাতালে সাধারণ কর্মী থেকে নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক, ডেপুটি সুপার ,সহকারি সুপার একযোগে নিজেদের বেতনের টাকা দিয়ে ৫৫ জন যক্ষা রোগীকে খাবার দিলেন। কিছু চিকিৎসক ও কর্মী একাধিক রোগীকে একাই খাবার দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন। যতদিন তাদের ওষুধ চলবেই ততদিন তারাই এই খাবার দিয়ে যাবেন।
এই উপলক্ষে শুক্রবার দুপুরে আসানসোলে জেলা হাসপাতালে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিলো। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম বর্ধমান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বা সিএমওএইচ ডাঃ ইউনুস খান, জেলা হাসপাতাল সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাস, ব্লাড ব্যাঙ্কের ইনচার্জ ডাঃ সঞ্জিত চট্টোপাধ্যায়, চিকিৎসক ডাঃ গৌতম মন্ডল, ডেপুটি সুপার কঙ্কন রায়, সহকারী সুপার ডাঃ দেবদীপ মুখোপাধ্যায়, সৃজিত মিত্র, ভাস্কর হাজরা, মমতাজ চৌধুরী, জেলা যক্ষা আধিকারিক ডাঃ অভিষেক রায়। এই অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করতে গিয়ে কিভাবে সবাই এগিয়ে আসেন তার ব্যাখ্যা দেন ডাঃ সঞ্জিত চট্টোপাধ্যায়।
সিএমওএইচ ডাঃ ইউনুস খান বলেন, এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে একজন সাধারণ কর্মী থেকে শুরু করে এতজন স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মী ও আধিকারিকরা এমন একটি ভালো কাজে এগিয়ে এসেছেন। এই অনুষ্ঠান চলাকালীন জানতে পেরে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন রাজ্যের স্টেট টিউবারকিউলোসিস অফিসার তথা চিকিৎসক সন্তোষ রায়। তিনি বলেন, আমাদের রাজ্যে এমন ঘটনা শুধু প্রথম তাই নয়, এই উদ্যোগ অবশ্যই অন্যান্য হাসপাতালে কর্মী ও চিকিৎসকদের তা এগিয়ে আসতে উৎসাহিত করবে।
হাসপাতালের ওই বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু ইতিমধ্যেই পরামর্শ দিয়েছেন ২০২৫ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ যক্ষাকে দেশ থেকে মুক্ত ও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সেই লক্ষ্যেই শুধু রোগীদের ওষুধ খাওয়া নয়, পুষ্টি যুক্ত খাবার খাওয়াটাও জরুরী।