সৌভিক সিকদার, গুসকরা, পূর্ব বর্ধমান – ধীরে ধীরে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প যখন চারদিকে ডানা মিলতে শুরু করেছে তখন গুসকরা মুসলিম পাড়ার একতা ক্লাবের উদ্যোগে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সৌজন্যে এক বিরল দৃশ্যের সাক্ষী থাকার সুযোগ পেল গুসকরাবাসী। প্রমাণিত হলো ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’। তাইতো পবিত্র ইদউল আযাহার পরিণত হলো ‘সম্প্রীতি বন্ধন’ এ।
একতা ক্লাবের উদ্যোগে গত ৮ ই ও ৯ ই মে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার। স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশিত সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তি পরিবেশন উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে। এছাড়া মোমবাতি প্রজ্জ্বলন, হাঁড়িভাঙা, মিউজিক্যাল চেয়ার প্রতিযোগিতা দর্শকদের মনোরঞ্জন করে। অংশগ্রহণকারীদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য ক্লাবের পক্ষ থেকে তাদের পুরষ্কৃত করা হয়।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে প্রিয়া, আসরিন, সুলতানা, ইয়াসমিন, জান্নাতিন, তানসিরা খুব খুশি।
চমক অপেক্ষা করেছিল গত ৯ ই মে। তখন মঞ্চে বসেছিলেন হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের
বেশ কয়েকজন প্রবীণ-প্রবীণা। গলায় উত্তরীয় পরিয়ে ও হাতে পুষ্পস্তবক তুলে দিয়ে তাদের বরণ করে নেওয়া হয়। বয়সের ভারে ন্যুব্জ হলেও এই ঘটনায় তাদের মুখে খুশির ঝিলিক দেখা যায়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জ্জী, ভাইস চেয়ারম্যান বেলী বেগম, গুসকরা শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি দেবব্রত শ্যাম, সাংবাদিক প্রদীপ মুখার্জ্জী ও জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী সহ একতা ক্লাবের সদস্যরা এবং অসংখ্য দর্শক। একতা ক্লাবের সম্পাদক সেখ মনসর আলি বললেন, গত প্রায় ২০ বছর ধরে পবিত্র ইদউল আযাহার উপলক্ষ্যে আমরা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চলেছি। সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষের অংশগ্রহণে উৎসব ‘সম্প্রীতি বন্ধন’- এ পরিণত হয়। শত পরিবর্তনের মধ্যেও গুসকরার বুকে এই ঐতিহ্য আজও বজায় আছে। এটাই গুসকরাবাসীর অহংকার। আশাকরি আগামী প্রজন্ম এই ঐতিহ্য ধরে রাখবে। একতা ক্লাবের এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে চেয়ারম্যান বললেন, সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ একত্রিত হয়ে উৎসবে অংশগ্রহণ করাটা হলো বাংলার বৈশিষ্ট্য। সেটাই আবার প্রমাণিত হলো।





