eaibanglai
Homeএই বাংলায়পুরী পীঠাধীশ্বর শ্রীমদ্ জগৎগুরু শঙ্করাচার্যের আগমনে শিক্ষাঙ্গন উল্লসিত

পুরী পীঠাধীশ্বর শ্রীমদ্ জগৎগুরু শঙ্করাচার্যের আগমনে শিক্ষাঙ্গন উল্লসিত

মনোজ সিংহ দুর্গাপুরঃ– দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে অবস্থিত কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ শিক্ষাঙ্গন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে বুধবার ঋগ্বেদীয় পূর্বাম্নায় শ্রী গোবর্ধনমঠ পুরী পীঠাধীশ্বর শ্রীমদ্ জগৎগুরু শঙ্করাচার্য শ্রী স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী জী মহারাজের শুভ পদার্পণকে কেন্দ্র করে ছিল সাজো সাজো রব। প্রসঙ্গত হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসীদের কাছে জগৎগুরু শঙ্করাচার্য স্বয়ং ভগবানের প্রতিরূপ বলে মনে করা হয়। তাই তাঁর আগমনকে কেন্দ্র করে উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা সহ শিল্পাঞ্চলের জনসাধারণের মধ্যে উদ্দীপনা ছিল লক্ষ্য করার মতো।

এদিন জগৎগুরু শঙ্করাচার্য শ্রী স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী জী মহারাজ এনআইটি দুর্গাপুরের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাধারণ মানুষের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেন। হিন্দু ধর্ম গ্রন্থ, হিন্দু ধর্মের ইতিহাস সহ বিভিন্ন সামাজিক বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের যথাযথ গ্রহণযোগ্য উত্তর দিয়ে জগৎগুরু উপস্থিত সকলের মন জয় করে নেন।

শ্রী স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী জী মহারাজ এদিন সকালে প্রথমে এনআইটি গেস্ট হাউসে আয়োজিত একটি বিশেষ পূজা অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার পর ইনস্টিটিউটের পরিসরের ভেতরেই অবস্থিত একটি স্যানেট অডিটোরিয়ামে সাধারণ ভক্ত ও ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন। সেখানে এক ভক্তের করা প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,”রাজনীতির সাথে ধর্মের কোন যোগ নেই। যারা ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করে তারা দুর্বৃত্ত ও দুরাচারী ছাড়া আর কিছু নয়। সবাই পাপের ভাগী,যদি তারা কোন ধর্ম বিশেষকে ব্যবহার করে রাজনীতি করছেন। হিন্দু ধর্মের চার ধামের যে চারজন জগৎগুরু শংকরাচার্য আছেন, তাঁদের সাথে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা মানুষের কোন যোগাযোগ নেই। জগৎগুরু শঙ্করাচার্যের মঠের সমস্ত গুরু, সেবাইত ও ভক্তরা কখনোই রাজনৈতিক নেতৃত্বের সাথে যোগাযোগ রাখেন না।” পাশাপাশি এদিন তিনি যুব মাতা-পিতাদের তাদের সন্তানদেরকে সনাতন ধর্মের আলোয় আলোকিত করে তাদের জীবন প্রশস্ত করবে এমন কিছু নৈতিক উপাদান, উপস্থিত সকলের মধ্যে বিলিয়ে দেন।

এছড়াও এদিন বিকেলে এনআইটি কমপ্লেক্সের ভেতরেই অবস্থিত নিউ অডিটোরিয়ামে কলেজের সকল ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে আয়োজিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগ দেন পুরীর জগৎগুরু শঙ্করাচার্য। যেখানে তিনি আগামী দিনে ভারতবর্ষকে কীভাবে আবার বিশ্বের দরবারে শ্রেষ্ট আসনে বসানো যায়, সেই বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেন।

অন্যদিকে পুরীর জগৎগুরু শঙ্করাচার্যের দুর্গাপুরের শিক্ষাঙ্গনে আগমনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা বেশ কিছু সমাজ মাধ্যমে কুকথা বলছেন ও প্রচার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই প্রসঙ্গে এক ভক্ত আক্ষেপের সুরে বলেন, “তাঁর দর্শন মাত্রই সমস্ত কামনা পূর্তি হয়, সেই বিশ্বাসে হিন্দু ধর্মের মানুষেরা জগৎগুরু শঙ্করাচার্যের দর্শন লাভ করেন। কিন্তু একশ্রেণীর নিচু মনের রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা যারা নাকি ঘটা করে শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন, আবার অন্যদিকে তাঁরাই আজ পুরী পীঠাধীশ্বর শ্রীমদ্ জগৎগুরু শঙ্করাচার্যের সম্বন্ধে কু-প্রচার করছেন। সত্যিই অভাগা দেশের বাসিন্দা আমরা। একশ্রেণীর রাজনৈতিক দলের মতাদর্শ অনুযায়ী যারা নিজের মাতৃ পিতৃর অন্তেষ্টি ক্রিয়া পর্যন্ত করে না তারা আজ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে পুরী পীঠাধীশ্বর শ্রীমদ্ জগৎগুরু শঙ্করাচার্যের সম্বন্ধে কু-প্রচার করছেন। ভেবেও দুঃখ হয়।” তিনি আরো বলেন,”যারা আজকের পুরী পীঠাধীশ্বর শ্রীমদ্ জগৎগুরু শঙ্করাচার্যের আগমনকে কেন্দ্র করে কু-প্রচার করছেন তারা আখেরে নিজেদেরই ক্ষতি করছেন। কারণ হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী সকল মানুষজনের কাছে পুরী পীঠাধীশ্বর শ্রীমদ্ জগৎগুরু শংকরাচার্য একজন পূজনীয় ব্যক্তি। তাই যে সকল মানুষেরা জগৎগুরু শংকরাচার্যের নামে কু-প্রচার করছেন, তারা সরাসরি হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী মানুষজনের ঘৃণার পাত্র হচ্ছেন, নিজেদের অজান্তেই। পুরী পীঠাধীশ্বর শ্রীমদ্ জগৎগুরু শংকরাচার্য শ্রী স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী জী মহারাজ শুধু বৈদিক গণিতেই বিশেষজ্ঞ নন, তাঁর লেখা কয়েক হাজার বই রয়েছে, যেগুলি পড়লেই বোঝা যায় যে তাঁর সান্নিধ্য পাওয়া কতটা দুর্লভ। তাই আজ দুর্গাপুর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির উদ্যোগে তাঁর আগমনে দুর্গাপুরের ভূমি পবিত্র হল।”

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments