সংবাদদাতা,কাঁকসাঃ- রাজ্য যখন আদিবাসী শিক্ষায় জোর দিচ্ছে তখন স্কুলে বই খাতা পেন্সিল নয় বরং ঝাঁটা বালতি হাতে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মীর কাজ সামলাতে দেখা গেল শিশু পড়ুয়াদের। এমনই দৃশ্য ধরা পড়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলার কাঁকসা ব্লকের খেড়োবাটী প্রাথমিক বিদ্যলায়ে। বিষয়টি জানাজানি হতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক ।
বড় দিনের ছুটির শেষে বছরের প্রথম দিন স্কুল খোলার পর দেখা যায় কঁচি কঁচি হাতে কেউ ঝাঁটা নিয়ে স্কুলের সমস্ত ঘর আবার কেউ স্কুল প্রাঙ্গন ঝাঁট দিচ্ছে। কেউ আবার বালতি নিয়ে পাতা কুড়োতে ব্যস্ত। আবার একদল পড়ুয়া ভারী ভারী বসার বেঞ্চ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
জানা গেছে কাঁকসার বনকাটি পঞ্চায়েত এলাকার খেড়োবাটী আদিবাসী পাড়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে প্রথম শ্রেণী থেকে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত ৪টি ক্লাসে পড়ুয়ার সংখ্যা ৬৩জন। রয়েছে ৩জন শিক্ষক। তবে স্কুলে নেই কোনও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী। যার জেরে নিয়মিত স্কুল সাফাই থেকে শুরু করে ভারী ভারী আসবাব ক্লাস থেকে অন্য ক্লাসে নিয়ে যেতে হয় খুদে পড়ুয়াদেরই। আর পড়ুয়ারা এই সমস্ত কাজ করে থাকে প্রধান শিক্ষক উত্তম হাজরার নির্দেশেই।
অন্যদিকে খুদে পড়ুয়াদের দিয়ে কাজ করানোর কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। এমনকি পড়ুয়াদের দিয়ে স্কুল সাফাইয়ের কাজ করানোও অনুতপ্ত হওয়া তো দূরের কথা বরং এর মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখছেন না তিনি। তাঁর পাল্টা দাবি নিজেদের স্কুল তো নিজেদের বাড়ির মতো। স্কুলে কোনও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী না থাকায় তাই স্কুল পরিস্কার পরিছন্ন রাখার দায়িত্ব পড়ুয়াদেরই তুলে নিতে হবে। এমনকি বিষয়টি অভিভাবক ও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষও জানেন বলে দাবি করেছেন তিনি। তবে তাঁর দাবি ছোট নয় বরং একটু বড় বাচ্চাদের দিয়েই এই কাজ করানো হয়।
বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন অভিভাবকরাও। তাঁদের প্রশ্ন বাচ্চাদের তৈরি করে স্কুলে পাঠানো হয় কি কাজ করার জন্য? অভিভাবকরা জানিয়েছেন অতো ছোট শিশুদের দিয়ে বাড়িতেও কোনও কাজ করানো হয়না। সেখানে প্রধান শিক্ষক কীভাবে ওই ছোট ছোট পড়ুয়াদের দিয়ে চতুর্থ শেণির কর্মীদের কাজ করাচ্ছেন। অবিলম্বে পড়ুয়াদের দিয়ে কাজ করানোর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।