নিজস্ব প্রতিনিধি,কাঁকসাঃ প্রতি বছরের মতো ১২ই ডিসেম্বর কাঁকসার বিদবিহার পঞ্চায়েতের বাসুদেবপুর গ্রামে শহীদ দিবস পালন করত তৃণমূল কংগ্রেস।কিন্তু এই বছর গ্রামের কয়েক জন পুরোনো দিনের কর্মী নিয়ম মোতাবেক ফুলের মালা দিয়ে শহীদ বেদিতে মাল্যদান করে শহীদ দিবস পালন করেন তারা। দলের বিরুধ্যে ওই পুরানো কর্মীরা ক্ষোভ উগলে দিয়ে বলেন হয়ত নেতারা শহীদদের ভুলে গেছেন তবে আমরা গ্রামের মানুষ আমরা তো ভুলতে পারিনা। তাই অন্যান্য বছর হাজার হাজার মানুষ এসে শ্রদ্ধা জানাতো। আজ মাঠ ফাঁকা এটাই আমাদের কাছে বড় কষ্টের । ওপর এক কর্মী বলেন গত কয়েক দিন আগেই এই এলাকায় রাজনৈতিক দলের নেতা খুন হয় ,হয়ত তাই দলের পক্ষথেকে অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। এছাড়াও এই মুহূর্তে কাঁকসা ব্লকে কোনো ব্লক সভাপতি নেই এটাও একটা কারণ হতে পারে বলে তাদের অনুমান।এদিন শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকেও কেউ আসেনি শ্রদ্ধা জানাতে। পরিবারের ক্ষোভ পরিবারের যারা খুন হয়েছে তারা আজও বিচার পায় নি। এমনকি পরিবারের কেউ আজও কোনও চাকরি পেলো না কি ভাবে তাদের পরিবার চলছে তার খোঁজ নেয়না যখন তবে ঘটা করে শহীদ দিবস কিসের । নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কাঁকসা ব্লকের এক নেতা বলেন আমরা প্রত্যেক বছর দলের পক্ষ থেকে আজকের দিনটা পালন করতাম কিন্তু দলে আমাদের কোনো ক্ষমতা নেই তাই এই বিষয়ে ইচ্ছা থাকলেও কিছু করার নেই। কি কারণে হয় নি তা জেলা নেতৃত্ব বা যারা কাঁকসা ব্লক পরিচালনা করছে তারা বলতে পারবে। প্রসঙ্গত গত ১৯৯৮ সালে কাঁকসার বিদবিহারের বাসুদেব পুর গ্রামে তৃণমূল করার অপরাধে ১১ই ডিসেম্বর গোটা গ্রামে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আগুনে পুড়ে মারা যায় বহু গবাদি পশু। সেই রাতে গ্রাম ছেড়ে বেরিয়ে যায় গ্রামের মানুষ।পুড়ে ছাই হয়ে যায় গোটা গ্রাম। অভিযোগ ওঠে তৎকালীন শাসক দল সিপিআই এম এর দিকে । এর পরেই রাত পার হতেই ১২ডিসেম্বর গৌর বাজারেই কাছে কুপিয়ে খুন করা হয় তৃণমূল কর্মী শঙ্কর ঘোষ কে। ঘটনার পরে ৩১শে ডিসেম্বর কাঁকসায় আসেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই দিন কর্মী খুনের বিচার চাইতে কাঁকসা থানায় ঢোকার চেষ্টা করলে তাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এর পরেই তিনি কাঁকসা ব্লকের দলের সমস্ত কর্মীদের জানিয়ে দেন প্রতি বছর ১২ই ডিসেম্বর বাসুদেব পুরে শহীদ দিবস পালন করা হবে। সেই মতো পরের বছর থেকেই শুরু হয় কাঁকসা ব্লকের বিদবিহার গ্রামে শহীদ দিবস। এখানেই শেষ নয় এর পরে ২০০০ সালের ১৯ শে এপ্রিল বিদবিহার পঞ্চায়েতের সামনেই কুপিয়ে খুব করা হয় অমর গোস্বামী কে । পরের দিন ২০ এপ্রিল শশিপুরের মাঠে খুন করা হয় নব গোপাল ডোম কে। পরের বছর ২০০১ সালের ২৬ শে জানুয়ারি অজয় নদের পাড়ে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করে লক্ষ্মী নারায়ণ ঘোষ কে। খুন করার পর তকে বালির চড়ে পুঁতে রেখে দেওয়া হয়। ২০০১ সাল থেকেই এই চার জনকে শ্রদ্ধা জানানো হয় কাঁকসার শহীদ দিবসে। যদিও এ বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্বের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।