জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,আউসগ্রামঃ- ‘বিদেশ থেকে ফিরে এলে কার না ভাল লাগে’, ঠিক তেমনি শীতকালে নলেন গুড়ের সন্দেশ, খেজুর গুড়ের রসগোল্লা, পাটালি বা নবাত, খেজুর গুড় দিয়ে তৈরি পায়েস অথবা খেজুর গুড়ে ডুবিয়ে পিঠে বা চালের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি সরু চুকুলি বড়া কোন বাঙালির না খেতে ভাল লাগে! কারণ বাঙালির কাছে শীতকাল ও খেজুর গুড় – কার্যত সমার্থক।
বাতাসে লেগেছে হালকা শীতের আমেজ, শিড়শিড়ানি ভাব। বাঙালির মন আঁকুপাকু, অপেক্ষার আকুলতা গ্রাস করছে তাদের- শীত তো এসে গেল, কখন পাওয়া যাবে খেজুর গুড়?
অন্যান্যবারের মত স্থানীয় তথা অন্য এলাকার মানুষের খেজুর গুড় খাওয়ার ইচ্ছে পূরণ করতে নদীয়ার নাকাশিপাড়া থেকে আউসগ্রামের দ্বারিয়াপুর, গড় ও অভিরামপুরে এসে হাজির বিশিষ্ট খেজুর গুড় প্রস্তুতকারক তথা ব্যবসায়ী সেলিম মণ্ডলের দলবল। এলাকার মানুষের কাছে সেলিমের খেজুর গুড় বিখ্যাত।
তিন জায়গা মিলে ইতিমধ্যে তারা প্রায় সহস্রাধিক খেজুর গাছ ‘লিজ’ নিয়ে সেগুলি থেকে খেজুর রস সংগ্রহ করার প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। রসের জন্য খেজুর গাছের ডগার অংশ ছোলার কাজ শেষ। ‘চোখ’ তৈরি হয়ে গেছে। খেজুর রসকে ফুটিয়ে তার থেকে গুড় তৈরি করার জন্য উনুনও তৈরি। পাশে পড়ে আছে রস সংগ্রহ করার জন্য হাঁড়ি। অপেক্ষার হয়তো আর দিন চারেক বাকি। তারপরই ঘটতে চলেছে মানুষের রসনা তৃপ্তি।
জানা গেল সংগৃহীত রসের গুণ অনুযায়ী মোটামুটি তিন রকমের খেজুর গুড় তৈরি করা হয়। দামও হয় ভিন্ন ভিন্ন। মাঝে মাঝে খেজুর গুড়ের নবাত বা পাটালি তৈরি করা হয়। স্থানীয় বাজারের সঙ্গে সঙ্গে কলকাতার বাজারেও গুড় পাঠানো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা বিদ্যুৎ চ্যাটার্জ্জী বললেন – এখানকার খেজুর গুড় সত্যিই খুব সুস্বাদু। রসনাবিলাসী বাঙালির রসনা তৃপ্তি হবেই।
অন্যদিকে সেলিম সাহেব বললেন – আমি এখানে প্রায় গত দশ বছর ধরে আসছি। চেষ্টা করি খেজুর গুড়ের গুণমান বজায় রেখে নিজের নামের প্রতি সুনাম বজায় রাখতে। তিনি আরও বললেন – আশাকরি আগামী তিন চারদিনের মধ্যে বাজারে খেজুর গুড় সরবরাহ করতে পারব।