eaibanglai
Homeএই বাংলায়আয়োজিত হলো দূর্বাদল সাহিত্য উৎসব

আয়োজিত হলো দূর্বাদল সাহিত্য উৎসব

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,কলকাতাঃ- সাহিত্যকে ভালবেসে ওরা দু’জন – শ্যামনগরের পারমিতা রাহা ও বর্ধমান শহরের রাণা চ্যাটার্জ্জী – দীর্ঘদিন ধরেই সাহিত্যচর্চা করে আসছেন। সাহিত্য প্রেমী মানুষের কাছে দু’জনেরই আলাদা একটা জনপ্রিয়তা আছে। ঘরের আলমারির প্রতিটি স্তরে সাজিয়ে রাখা আছে অসংখ্য পুরস্কার ও শংসাপত্র। এসবই অন্য কোনো অনুষ্ঠানে অতিথি কবি হিসাবে উপস্থিত থাকার জন্য। সেই সব অনুষ্ঠানে নবীন কবি প্রতিভাদের দেখে তাদের জন্য কিছু একটা করার ভাবনা মাথায় আসে। তারই ফলশ্রুতি ‘দূর্বাদল সাহিত্য উৎসব’।

গত ১১ ই সেপ্টেম্বর শতাধিক কবি ও সাহিত্যিকের উপস্থিতিতে এবং রাণা চ্যাটার্জি ও পারমিতা রাহার উদ্যোগে শিয়ালদহের কৃষ্ণপদ ঘোষ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ভবনে দূর্বাদল সাহিত্য উৎসব আয়োজিত হয়। অনুষ্ঠানে স্বর্গীয়া উমা চ্যাটার্জ্জী স্মৃতি গল্প প্রতিযোগিতা ও স্বর্গীয় দিলীপ কুমার রাহা স্মৃতি কবিতা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সংস্হার পক্ষ থেকে প্রতিযোগিতায় বিজয়ী প্রায় পঁচিশ জন কবিকে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে কবি-সাহিত্যিক রাণা চ্যাটার্জি ও কবি পারমিতা রাহা সম্পাদিত পাঁচটি একক কবিতা ও গল্প সংকলন প্রকাশিত হয়। লেখিকা সুনন্দা গুপ্তের ‘অনুভব’, শিবাজী সান্যালের ‘জীবন থেকে নেওয়া’, শ্যামল বিশ্বাসের ‘এবং তুমি’, সুব্রত চক্রবর্ত্তীর ‘বৃষ্টি লেখা শুধু তোমারই জন্য’, সোমালি শর্মার ‘প্রেমের নৈবেদ্য ডালি’ -র মোড়ক উন্মোচন নবীন প্রতিভাদের মধ্যে আশার সঞ্চার করে। প্রসঙ্গত স্বর্গীয়া উমা চ্যাটার্জ্জী হলেন কবি রাণা চ্যাটার্জ্জীর মাতা এবং স্বর্গীয় দিলীপ কুমার রাহা হলেন পারমিতা রাহার পিতা। মূলত তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর লক্ষ্যে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বৈজয়ন্ত রাহা, নির্মাল্য বিশ্বাস, জয়দীপ চট্টোপাধ্যায় , প্রজ্ঞা পারমিতা সহ আরও অনেকেই। সুদূর ইউ.এস থেকে এসেছিলেন তানজীনা মুখার্জী । উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে তাদের প্রত্যেককে এবং উপস্থিত কবিদের সম্মানিত করা হয়।

নিম্নচাপ জনিত কারণে গত কয়েক দিনের মত আকাশের মুখ ছিল ভার। সকাল থেকেই কখনো ঝিরঝির করে কখনো বা মুষল ধারে বৃষ্টি হচ্ছে। তারপর আবার সন্ধ্যার সময় অনুষ্ঠান। প্রথম বারের জন্য আয়োজিত অনুষ্ঠান হয়তো পণ্ড হতে চলেছে – এই আশঙ্কায় দুই উদ্যোক্তার মুখে তখন দুশ্চিন্তার কালো ছাপ। ওরা হয়তো বুঝতেই পারেনি মা-বাবার আশীর্বাদ বৃষ্টির রূপ ধরে ওদের মাথায় ঝরে পড়ছে। তাইতো দেখা গেল দুর্যোগ মাথায় নিয়েই দূর দুরান্ত থেকে আমন্ত্রিত কবিরা সব হাজির হলেন নির্দিষ্ট হলঘরে। অনুষ্ঠান কিছুটা দেরিতে শুরু হলেও সভা কক্ষে নেমে আসে চাঁদের হাট। বই প্রকাশ, পুরস্কার বিতরণী, কবিতা প্রতিযোগিতা – সব মিলিয়ে প্রায় চার ঘণ্টার একটা সুন্দর সন্ধ্যা কখন যে শেষ হয়ে যায় টেরই পাওয়া যায়নি।

শুধু তাই নয় ওদের দু’জনের হাত ধরে একটা প্রকাশনী সংস্থাও আত্মপ্রকাশ করে। ব্যবসা নয় মূল লক্ষ্য হলো সাহিত্য অনুরাগী মানুষ ও নবীন কবি-সাহিত্যিকরা যাতে কম খরচে তাদের সৃষ্টিকে মুদ্রিত আকারে ও একক বই হিসাবে সাহিত্য অনুরাগী মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারে তার জন্য উৎসাহ দেওয়া।

দুর্যোগ মাথায় নিয়েও অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য প্রত্যেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে অন্যতম উদ্যোক্তা রাণা বাবু বললেন – যেভাবে অনুষ্ঠানটি সফল হলো তাতে আমরা অভিভূত। আশাকরি আগামী দিনেও সবার সহযোগিতা পাব। একই সুর শোনা গেল পারমিতা দেবীর কণ্ঠে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments