সংবাদদাতা, আসানসোল:- ভূতের ভয়ে জনশূন্য পরিত্যক্ত গ্রাম, লক্ষ্মী পুজোর রাতে হয়ে ওঠে সরগরম। জনশূন্য গ্রামেই পূজিতা হয়ে আসছেন দেবী লক্ষ্মী। কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিন এমনই ব্যতিক্রমী পুজোর দেখা মেলে আসানসোলের কুলটি বিধান সভার অন্তর্গত বেনাগ্রামে।
লোকমুখে প্রচলিত ভূতের ভয়ে বছর দশেক আগে গ্রামের সমস্ত পরিবার একে একে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র বাড়ি করে চলে যায়। এরপরই ক্রমে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে গ্রামটি। এখনও গ্রামে গেলে দেখা মেলে পুরোনো বাড়ি ঘর,তুলসী মঞ্চ, ঘাট বাঁধানো পুকুর। কিন্তু লক্ষ্মীর পুজোর আগের দিন রাত থেকেই জনমানবহীন এই গ্রাম মানুষজনের কোলাহলে সরগরম হয়ে ওঠে। গ্রামের মন্দিরে প্যান্ডেল বেঁধে প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় দেবী লক্ষ্মীর অরাধনার। স্থানীয়রা জানালেন গ্রাম ছেড়ে এখন যে যেখানেই থাকুক লক্ষ্মী পুজোর দিন পরিত্যক্ত গ্রামে ফেরেন সবাই। ধুমধাম করে হয় দেবীর আরাধনা, ভোগ খাওয়া। পরের দিন দেবী বিসর্জনের পর আবার যে যার বাড়ি ফিরে যান। ফের জনহীন রূপ ধরে বেনাগ্রাম।
গ্রামবাসীরা জানালেন এই পুজো তাদের পূর্বপুরুষেরা শুরু করেছিলেন। তাই গ্রাম ছাড়লেও দেবী আরাধনায় ছেদ পড়েনি। পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য মেনে আজও পুজো চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। তবে গ্রামছাড়া নিয়ে ভূতের কাহিনী প্রচলিত থাকলেও গ্রামবাসীদের অনেকেই জানালেন গ্রামে পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকলেও রাস্তা ও বিদ্যুতের কোনও ব্যবস্থা না থাকায় একে একে গ্রাম ছাড়েন সকলে। তবে পরিত্যক্ত এই গ্রামে বছর দুয়েক হল বিদ্যুতের খুঁটি বসেছে, হয়েছে পাকা রাস্তাও। তবে গ্রামে ফেরার আর কোনও ইচ্ছা নেই গ্রামবাসীদের। বরং তাদের সরকারের কাছে একটাই আবেদন গ্রামের মন্দিরটি সংস্কারের ব্যবস্থা করুক সরকার। কারণ ফি বছর মায়ের টানে গ্রামের এই মন্দিরেই ফেরেন গ্রামবাসীরা।