নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুর, আসানসোল, বাঁকুড়াঃ- দীঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পরই রাজ্যবাসীর কাছে জগন্নাথের প্রসাদ পৌঁছে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো রাজ্যজুড়ে রেশন ডিলারের মাধ্যমে জগন্নাথ প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা করে প্রশাসন। অন্যদিকে সেই থেকে রাজ্য প্রশাসনের নির্দেশে জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ তৈরি হচ্ছে জেলার বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে। প্রশাসনের তরফে, প্রসাদী পেঁড়া ও গজা বিলির প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে। ইতিমধ্যে পেঁড়া ও গজা বানানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীদের কাছে দিঘার মন্দির থেকে জগন্নাথ দেবের মহাপ্রসাদের প্রসাদী খোয়া পৌঁছেছে। তা মিশিয়ে চলছে প্রসাদী পেঁড়া তৈরি। বাঁকুড়ার ইন্দপুরের বাংলা বাজারের আশীর্বাদ সুইটস্- হিড়বাঁধ ব্লক প্রশাসনের ওই প্রসাদ তৈরির বরাত পেয়েছে। দোকানের কর্ণধার তুষার চ্যাটার্জি জানান, হিড়বাঁধ ব্লক প্রশাসনের প্রায় বারো হাজার প্রসাদ প্যাকেটের বরাত পেয়েছেন তিনি। কর্মীরা পরিচ্ছন্নতার সাথে, সুরক্ষা বিধি মেনে পেঁড়া ও গজা তৈরি করছেন।
শুক্রবার ২০জুন থেকে রাজ্যের জেলায় জেলায় শুরু হয় প্রসাদ বিতরণ। এইদিন আসানসোলের পাঁচগাছিয়া খাদ্য দপ্তর ও রাজ্য সরকারের “দুয়ারে রেশন” এর মাধ্যমে পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক পোন্নমবলম এস, মহকুমা শাসক (সদর) বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য্যের উপস্থিতিতে জগন্নাথ দেবের মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়। জেলা শাসক জানান, ধীরে ধীরে ব্লকের প্রতিটি বাড়িতে এই মহাপ্রসাদ পৌঁছে দেওয়া হবে।
শনিবার দুর্গাপুরের বিভিন্ন রোশন দোকান থেকে জগন্নাথ দেবের প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়। এদিন ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফরিদপুরের রেশন দোকান থেকে নগর নিগমের প্রশাসকমন্ডলীর চেয়ারপার্সন অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় ও মহকুমা শাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে গ্রাহকদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। রেশন দোকানে প্রসাদ গ্রহণের জন্য লম্বা লাইন চোখে পড়ে। অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় জানান, শনি, রবি, সোম, এই তিন দিন ধরে দুর্গাপুর নগর নিগম এলাকায় প্রসাদ বিতরণ করা হবে। ৪৩টি ওয়ার্ডের ৩৫ হাজার মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হবে জগন্নাথ দেবের প্রসাদ। নগর নিগমের সমস্ত রেশন দোকান থেকেই এই প্রসাদ দেওয়া হবে।
অন্যদিকে ফরিদপুরের রেশন দোকানের দুই গ্রাহক প্রসাদ গ্রহণ না করায় তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। রেশন ডিলার তনয় কুমার মণ্ডল জানান তাঁদের রেশন দোকান থেকে দু’জন এখনও পর্যন্ত এই প্রসাদ গ্রহণ করেননি। অনেকের দাবি জগন্নাথের প্রসাদ তৈরি নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিস্ফোরক মন্তব্যের জেরেই ওই গ্রাহকেরা প্রসাদ গ্রহন করেননি।
প্রসঙ্গত দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ তৈরি নিয়ে রাজ্য জুড়ে সরব হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এরইমধ্যে গতকাল আসানসোলে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে সেই বিষয়টি ফের উস্কে দিয়ে বলেন, “মুর্শিদাবাদের রানীনগরে বিশেষ সম্প্রদায়ের দোকানে জগন্নাথ দেবের প্রসাদের জন্য হালাল প্রসাদ তৈরি করা হচ্ছে। সেই প্রসাদ না নিলে রেশন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।”





