নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুরঃ দলের নব জোয়ার কর্মসূচি হয়ে গেছে। যুবনেতা এবং নব জোয়ারের কাণ্ডারি অভিষেক বন্দোপাধ্যায় শিল্পাঞ্চল ছেড়ে বাঁকুড়ার উদ্দেশ্য চলেও গেছেন সেই বৃহস্পতিবার। কিন্তু, জাতীয় সড়ক থেকে ইস্পাত নগরী পর্যন্ত বেবাক ছড়িয়ে, পথেঘাটে যত্রতত্র অনাদরে পড়েছিল দলীয় পতাকা, নব জোয়ারের ব্যানার, ফেস্টুন, দলনেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়, যুবনেতা অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের ছবির অজস্র ফ্লেক্স।
শহরের হামবাগ মাতব্বর তৃনমূল কংগ্রেসের ‘হনু’রা সেসব দেখেও দেখেননি। কারো কারো আবার এমনও মত – ‘প্রোগ্রাম হয়ে গেছে তো। ওগুলোর আর কি দাম আছে ?’
নব জোয়ার কর্মসূচিতে দুর্গাপুর সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা পরিভ্রমণের সময় অভিষেক বারে বারে স্মরণ করিয়েছেন – ‘দলের পতাকার সম্মান মায়ের সমান। মাথায় রাখবেন।” তার এই কথায় সুবোধ ছাত্রের মতো পয়েন্ট পেতে মাথা নেড়ে নেড়ে সায় দিয়েছিলেন শহরের ‘সুপারস্টার’ দাদা, দিদিরা। ব্যাস্। অভিষেক শহর ছাড়তেই ছুটির ঘন্টা, আর সব নীতিকথার জলাঞ্জলি। “পরীক্ষায় তো সব পাশ হয়েগেল, আবার কি ? বগল বাজাতে বাজাতে ফের শুরু কাঠিবাজি, কামাই। দলাদলি, আর দলীয় পতাকা ? ও সব মায়ের ভোগে! ওসবের কে আর মর্যাদা দেয় গো ?” – বললেন দলনেত্রীর সাথে সিঙ্গুর মঞ্চে আন্দোলনে তিনদিন ধরে পাশে থাকা ইস্পাত নগরীর বৃদ্ধ এক তৃনমূল কংগ্রেস কর্মী। আক্ষেপ করে বললেন, “আমার আর নামটাম লিখবেন না। আমরা পিছনের সারিতে থাকা হাততালি দেওয়া লোক। এখনতো দল চালায় বাহুবলীরা। এদল, ওদল থেকে উড়ে আসা পর্যটকেরা। সারাটা দিন ওরা পকেট ভরে আর রাতে দালাল ব্যবসায়ীদের সাথে মদের আসরে দিদির নামে খিস্তি করে। ওদের কাছে জোড়াফুলের এই পতাকা, মমতা ব্যানার্জির ফটোর আর কি দাম – বলুন!”
দলীয় পতাকার মান মর্যাদা আর অসম্মানের বিতর্কের মাঝেই সাপ্তাহিক ছুটির দিন রবিবার দুর্গাপুর নগর নিগমের প্রাক্তন কাউন্সিলর অসীমা চক্রবর্তীকে দেখাগেল সঙ্গীসাথী নিয়ে শহরের মহাত্মা গান্ধী মোড় থেকে রাজীব গান্ধী ময়দান পর্যন্ত দুরত্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দলীয় পোস্টার, ফ্লেক্স বোর্ড, ব্যানার সযত্নে সংগ্রহ করতে। তিনি একাজে এদিন তৃনমূল কংগ্রেসের মহিলা সেলের সদস্যদের নিয়ে নিজে নেমে পড়েন। তিনিই আবার দুর্গাপুর মহিলা তৃনমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী। পেশায় শিক্ষিকা অসীমা বলেন, “দলনেত্রী, নেতাদের ছবি দেওয়া পোস্টার এভাবে অযত্নে পড়ে থাকতে দেখে মনে কষ্ট পেলাম। তাই ওগুলি তুলে রাখতে নেমে পড়লাম। মনে হল এটুকুতো করা উচিত। এই আরকি!”