নীহারিকা মুখার্জ্জী চ্যাটার্জ্জী, দক্ষিণ ২৪ পরগণাঃ- পড়াশোনা থেকে শুরু করে বিদ্যালয়ের সৌন্দর্যায়ন, প্রতিমাসে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্মদিন পালন, সমাজ সচেনতা সহ বিভিন্ন বিষয়ে সমাজের কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে বিখ্যাত বিজ্ঞানী আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুর স্মৃতিধন্য দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার ফলতা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। সৌজন্যে বিদ্যালয়ের ছাত্রদরদী শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং তিলক নস্করের মত প্রধান শিক্ষক। ছাত্রছাত্রীদের মনস্তত্ত্ব এরা ভালভাবেই বুঝতে পারেন। তাইতো তাদের অবচেতন মনের সুপ্ত ইচ্ছে বারবার পূরণ হয় এবং ভাইফোঁটার দিন তার ব্যতিক্রম ঘটলনা।
বিদ্যালয়টিতে প্রায় সাড়ে চার শতাধিক ছাত্রছাত্রী আছে। এদের অধিকাংশ খুবই গরীব ঘরের। ভাইফোঁটার দিন অন্যরা যখন আনন্দ করে বিষণ্নতা তখন এদের গ্রাস করে। তাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ওদের পাশে এসে দাঁড়ান। কালীপুজোর ছুটি কাটিয়ে ৫ ই নভেম্বর বিদ্যালয় শুরু হয়। বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পঠনপাঠনের পরে বিগত বছরের মত এই বছরও সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের উদ্যোগে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে মহাসমারোহে পালন করা হয় ভাইফোঁটা উৎসব।
সহপাঠী দাদা ও ভাইদের মঙ্গল কামনা করে প্রতিটি ছাত্রী প্রতিটি ছাত্রের কপালে চন্দনের ফোঁটা দেয়। রীতি মেনে মাথায় দেওয়া হয় ধান ও দূর্বা। এমনকি সবাইকে মিষ্টি খাওয়ানো হয়। উপহার হিসাবে শিশু শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের হাতে বর্ণপরিচয় প্রথম ভাগ, প্রথম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের বর্ণপরিচয় দ্বিতীয় ভাগ, দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পেন্সিল, ইরেসার ও পেন্সিল কাটার সেট এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জল রঙের সেট তুলে দেওয়া হয়। তখন প্রতিটি শিশুর মুখে ঝরে পড়ে হাসি। ওদের জন্য মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়।
প্রধান শিক্ষক তিলক নস্কর বললেন, আমাদের বিদ্যালয়ের অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী গরীব, সাধারণ ঘরের ছেলেমেয়ে। নিজ নিজ জন্মদিন, ভাইফোঁটার মত উৎসবে তাদের যাতে মনঃকষ্টের কারণ নাহয় তার জন্য আমরা এগুলির আয়োজন করে থাকি। দিনের শেষে ওদের মুখের হাসি আমাদের বড় প্রাপ্য।