শুভ্রাচল চৌধুরী, বাঁকুড়া:– ফের অবস্থান বদল বাঘিনী জিনাতের। এবার বাঁকুড়ার রানিবাঁধ ব্লকে ঢুকে পড়লো ওই বাঘিনী। হিমসিম অবস্থা বনদফতরের। ঘনঘন অবস্থান বদল যে বনদফতরের ঘুম উড়িয়ে দিয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। গত দু”দিনে একাধিক জায়গা বদল করেছে ওই বাঘিনী। এবার পুরুলিয়া জেলা সফর শেষ করে বাঁকুড়া জেলায় প্রবেশ করল জিনাত।
বনদফতর সূত্রে খবর, শনিবার সকাল বেলা তার অবস্থান ছিল মানবাজার ব্লকের ধানাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের লাপাং জঙ্গলে। এই লাপাং বাঁকুড়া জেলার সীমান্তের গ্রাম। শনিবার সকাল ন’টা নাগাদ রানীবাঁধ থানার গোপালপুর জঙ্গলে ঢুকে পড়ে জিনাত। এই মুহূর্তে বাঘিনীর অবস্থান বাঁকুড়ার গোপালপুর মানবাজার এলাকায়। পাশেই রয়েছে বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুর জলাধার।
পুরুলিয়ার কংসাবতী দক্ষিণ ডিভিশনের বিভাগীয় বন আধিকারিক (ডিএফও) পূরবী মাহাতো জানিয়েছেন, বন দফতর সর্বদা বাঘিনীর গতিবিধির উপর নজর রাখছে। বাঘিনিকে ‘ট্র্যাপ’-এ আনতে সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই বলেও তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের তাডোবা-আন্ধারি ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে তিন বছরের জিনতকে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পে আনা হয়েছিল। কয়েক দিন ঘেরাটোপের মধ্যে পর্যবেক্ষণের রেখে রেডিয়ো কলার পরিয়ে গত ২৪ নভেম্বর তাকে সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ছাড়া হয়েছিল। তার পরেই ঝাড়খণ্ডের দিকে হাঁটা দেয় জিনত। ঝাড়খণ্ডের জঙ্গর পেরিয়ে এ রাজ্যের ঝাড়গ্রামের জঙ্গলপথ ধরে বাংলায় প্রবেশ করে সে। গত রবিবার বাঘিনী ঢোকে বান্দোয়ানে। টোপ দিয়ে ফাঁদ পেতে দিনের পর দিন অপেক্ষা করেও বাগে আনা যায়নি তিন বছরের বাঘিনীকে। গত বৃহস্পতিবার জঙ্গলে ঢুকে অভিযান চালিয়েছিলেন বনকর্মীরা। তার পরে ওই এলাকা ছেড়ে দেয় জিনত। এর পর পাইসাগোড়ায় আলুক্ষেতে বাঘের পায়ের ছাপ নজরে আসে বনকর্মীদের। ড্রোন উড়িয়ে শুরু হয় বাঘিনীর অবস্থান জানার চেষ্টা। মানবাজার-২ রেঞ্জের ঝাটিপাহাড়ির জঙ্গলে খোঁজ মিলেছিল এক বার। এলাকার দু’দিক জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা শুরু হয়। কিন্তু সে সব বাধা টপকে জিনত এবার ঢুকে পড়েছে বাঁকুড়ার জঙ্গলে।
বাঘিনীকে ধরতে হিমসিম খাচ্ছে বনদপ্তর। বনকর্মীদের সঙ্গে রীতিমতো বাঘ বন্দী খেলা চালিয়ে যাচ্ছে তাডোবার জিনাত।