এই বাংলায় ওয়েব ডেস্ক:- লোকসভা ভোটের আগে হিন্দু ভোটারদের নৈতিক দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আর এস এস) -এর কর্তারা রীতিমতো বিধানসভা ভিত্তিক মিটিং বৈঠক করছেন বলে সুত্রের খবর। দুর্গাপুর পূর্ব বিধানসভা এলাকায় এমনি এক বৈঠকে ঘটেছে বিপত্তি। জেলা সংগঠনের সেবা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত শুভেন্দু সান্নিগ্রাহীর ডাকা মঙ্গলবারের বৈঠকে উপস্থিত ক্ষেত্রীয় প্রচারকের সামনেই দুর্গাপুরের বরিষ্ঠ স্বয়ংসেবকদের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, “কয়লা মাফিয়া, বালি মাফিয়াদের সঙ্গে কিছু রাজনৈতিক নেতা এমনকি সঙ্ঘের নেতাদের অনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। প্রচারকরা সব জেনে চোখ, কান বন্ধ করে রাখলে সর্বনাশ হবে। অবিলম্বে এই বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি করা হয় বলে নির্ভরযোগ্য সুত্রের খবর।”
অভিযোগ উঠেছে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের কিছু জরুরী কাজ (কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন সংক্রান্ত) দায়িত্ব নিয়ে তদবির করার জন্য মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছেন এক নেতা। ওই নেতা রাজনীতিতে এসে ভয়ঙ্কর তোলাবাজে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও এবার অভিযোগের আঙুল সরাসরি এক নব নির্বাচিত প্রান্ত স্তরের কার্যকর্তার দিকে। যদিও জেলার কার্যকর্তারা এনিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ। কিন্তু সঙ্ঘ কার্যকর্তার নৈতিক চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন ওঠা উচিত নয় বলে স্বীকার করা নিয়েছে।
একদা আর এস এসের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ও বর্তমানে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে জেলা বিজেপির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা এ প্রসঙ্গে জানান, “আমাদের রাজ্য সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী তিনটি প্রান্তে বিভক্ত। দক্ষিণবঙ্গ, উত্তরবঙ্গ ও মধ্যবঙ্গ। মধ্যবঙ্গের অন্তর্গত এই আসানসোল জেলা এবং দুর্গাপুর নগর। এখানে দুর্গাপুরের স্বয়ংসেবকদের কর্তব্য নির্ধারণ করতে ইতিমধ্যেই জেলা প্রচারক থেকে বিভাগ প্রচারক এমনকি, প্রান্ত ও ক্ষেত্রীয় প্রচারকরা প্রান্ত থেকে জেলা স্তরের বৈঠক করছেন। আগে না কি প্রচারকরা দেবতুল্য সন্ত্রাসীদের মতো জীবনযাপন করতেন। এখন আর তেমনটি পাওয়া মুশকিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব যেন বদলে যাচ্ছে। না হলে এরকম অভিযোগ অভাবনীয়।”
সূত্র মারফত জানা গেছে, মধ্যবঙ্গ প্রান্তের দুর্গাপুর নগর এলাকায় জাগরণের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নাকি ক্ষেত্রীয় প্রচারক রমাপদ পাল। তার কাছেই দুর্গাপুরের বরিষ্ঠ স্বয়ংসেবকরা অভিযোগ করেন এই শহরে বসবাসকারী কিছু রাজনৈতিক নেতা ও সঙ্ঘ কার্যকর্তার অনৈতিক কাজ সম্পর্কে। দুর্গাপুর পূর্ব বিধানসভার এক পেক্ষাগৃহে এই বৈঠকের দায়িত্বে ছিলেন নাকি জেলা আর এস এসের অরিজিৎ সরকার। প্রান্ত সহ কার্যবাহ বা সহ সম্পাদকের চাপিয়ে দেওয়া এই নেতার কথায় সদস্যদের উপস্থিতি না হবার আশঙ্কায় নির্বিকার ভাল মুখের সন্ধানে জেলার সেবা প্রমুখকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন প্রচারক। যদিও সর্বসাকুল্যে তিরিশ জনের উপস্থিতির কথা আহ্বায়ক নিজেই স্বীকার করেন। কোন দলের প্রচার নয়, বরং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে স্বয়ংসেবকদের কর্তব্য নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্র মারফত জানা গেছে। এক প্রশ্নের উত্তরে আহ্বায়ক শুভেন্দু বাবু বলেন, “সঙ্ঘের নেতৃত্ব অনৈতিক কাজ করলে প্রশ্ন তো উঠবেই। তবে যিনি অভিযোগ করছেন সেটা কতোটা ঠিক, আর যার যার সম্পর্কে অভিযোগ উঠেছে তারা কতোটা ঠিক তা দেখতে হবে। তবে এনিয়ে উনার বলার কিছু নেই।”