সঙ্গীতা চ্যাটার্জী (চৌধুরী)ঃ– আজ রটন্তী কালীপুজো। এইদিন বৈষ্ণব গণের আরাধ্য শ্রী শ্যাম হয়েছিলেন শাক্ত গণের আরাধ্যা কালী। তাই এই ঘটনা শাক্ত ও বৈষ্ণব উভয় সম্প্রদায় চর্চিত এবং সমাদৃত। কিন্তু কেন কৃষ্ণকে কালী রূপ ধারণ করতে হয়েছিল?
বহু মানুষের কথায় রেগে গিয়ে রাধিকার চরিত্রের সত্যতা যাচাই করবার জন্য কুঞ্জ বনে গিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন রাধিকার স্বামী আয়ান ঘোষ। শ্রী রাধিকা সম্পর্কে গোটা রাস্তা কু কথা বলতে বলতে আসছিলেন আয়ানের মা জটিলা ও বোন কুটিলা। জটিলা কুটিলা আয়ানকে বলেছিলেন যে কুঞ্জবনে তাঁর ঘরণী শ্যামের সাথে লীলা করছেন, গোপন অভিসারে রাধিকা সেখানে মত্ত। এই কথা শুনে আয়ান কুঞ্জ বনে চলে যান সত্য নিজের চোখে দেখতে। অন্য দিকে জটিলা, কুটিলা, আয়ানকে সঙ্গে করে নিয়ে আসছে দেখে শ্রী রাধিকার কাতর আহ্বান করেন, শ্রী শ্যাম যেন তাকে এই মহা বিপদ থেকে রক্ষা করেন। তখন শ্রী রাধিকার কাতর আহ্বানে সাড়া দিয়ে নিকুঞ্জ বিহারী শ্যাম চতুর্ভুজা দেবী কালী রূপে আবির্ভূতা হন। এই দেবীর কপালে ছিল অর্ধচন্দ্রাকৃতির তিলক আর গলায় ছিল মুন্ডমালা। দেবীর চার হাতের মধ্যে দুই হাতে ছিল খাঁড়া ও চক্র। অপর দুই হাতে ছিল শঙ্খ ও খর্পর। উগ্রচন্ডা দেবীর এই প্রচন্ড রূপ দেখে দেবী ভক্ত আয়ানের চোখ থেকে ভক্তি রসে আপ্লুত হয়ে জলের ফোঁটা গড়িয়ে পড়ে অন্যদিকে জটিলা কুটিলা ভয়ে পালিয়ে যায় সেখান থেকে। এই ঘটনার পর জটিলা, কুটিলা আর আয়ান বুঝতে পেরে ছিলেন শ্রী রাধিকা স্বয়ং আদ্যাশক্তি। যেহেতু রটনা থেকে কৃষ্ণ কালীর রূপ ধারণ করেছিলেন তাই নাম হয় রটন্তী কালী।