সঙ্গীতা চ্যাটার্জী (চৌধুরী)ঃ– ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ১৬১০৮ জন পত্নী ছিলেন, তাহলে সাধারণ মানুষের দ্বিতীয় বিবাহ করতে বাধা কোথায় এমনটা অনেক সময় অধার্মিক ও নাস্তিকরা বলেই থাকেন, কিন্তু ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নামে কালিমা চেতানোর আগে সনাতন ধর্ম এবং পুরাণকে ভাল মত জানবার চেষ্টা করুন। আসলে বাস্তবে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মাত্র আটজনই রানী ছিলেন, রুক্মিণী,সত্যভামা, জাম্ববতী, কালিন্দী, মিত্র বৃন্দা, সত্যা, ভদ্রা, লক্ষনা- এখন প্রশ্ন হতে পারে তাহলে বাকিরা কারা?
হ্যাঁ বাকি নারীদেরকে তিনি অসম্মানের হাত থেকে রক্ষা করবার জন্য স্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছিলেন। কারণ একটি অসুর সেই সকল নারীদের হরণ করেছিলো আর সেই অসুরকে বধ করবার পর অপহৃত নারীদের উদ্ধার করেছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, অপহৃত নারীদের তিনি যখন উদ্ধার করেন তখন তারা ভগবানকে বলেন তাদের আত্মহত্যা ছাড়া এখন আর কোন পথ নেই,কারণ সেই নারীদেরকে অসুরের হাত থেকে ভগবান উদ্ধার করলেও সমাজের নিন্দার হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে না,সমাজ তাদেরকে কিছুতেই আর পূর্বের ন্যায় সম্মানের সাথে গ্রহণ করবে না, তাই আত্মহত্যা করা ছাড়া তাদের কাছে আর কোনো উপায় নেই, অপহৃত এই নারীদের সামাজিক সম্মান ফেরত দিতেই ভগবান তাঁদের স্ত্রীর মর্যাদা দেন।
এখানেই শেষ নয়, এই সকল স্ত্রীদের জন্য তিনি আলাদা আলাদা ভাবে মহল তৈরি করেছিলেন এবং প্রত্যেকের সাথে একই সময় বহু হয়ে তিনি উপস্থিত থাকতেন তাদের ঘরে, যাতে প্রত্যেকেই ভাবতেন শ্রীকৃষ্ণ তাকে বেশি ভালোবাসেন। কিন্তু আসলে তো তিনি এক থেকে বহু হয়ে এই লীলা রচনা করেছিলেন।এদের কাউকেই তিনি অবহেলা করেন নি কখনো,সকলকে সমান ভাবে দেখেছেন ও রেখেছেন। এবার অপহৃত নারীদের মর্যাদা দেওয়ার কথা যদি ছেড়েও দেন তাহলেও প্রশ্ন ওঠে একটা সাধারণ মানুষের পক্ষে দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহন করা হলে কি তিনি দুজন স্ত্রীকে শ্রীকৃষ্ণের রানীদের মতো করেই রাখতে পারবেন এবং একই সাথে দুই স্ত্রীর ঘরে উপস্থিত থাকতে পারবেন? আপনি বলবেন সম্ভব না, সম্ভব এই কারণেই নয় কারণ একজন সাধারন মানুষ কোনভাবেই একই আচরণ দুজনের সাথে করতে পারবে না, একই সময় দুজনের সাথে উপস্থিত থাকতে পারবে না, শ্রীকৃষ্ণ পেরেছিলেন কারণ তিনি সাধারণ মানুষ নন তিনি ভগবান। অর্থাৎ বন্ধুরা ভগবানের সাথে সাধারণ মানুষের তুলনা করা চলে না ভগবান সব সময় তার লীলা করে বেড়ান ভগবানের কার্য অনুকরণ না করে কার্যের মধ্যে দিয়ে তিনি কী বলতে চাইছেন তা বোঝার চেষ্টা করুন?-এই কাজ করে তিনি সমাজে নির্যাতিত নারীদের বাড়ির বধূর সমান মর্যাদা দেওয়ার কথা বলেছেন আর আমরা তার কাজের মধ্যে থাকা আদর্শকে না বুঝে তাকেই কালিমায় লিপ্ত করি! এতই আমাদের মন্দ বুদ্ধি!হরি বোল!হরে কৃষ্ণ!