সংবাদদাতা, বাঁকুড়া:-
রাজ্যে এনআরসি নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে। এবিষয়ে বিজেপি নেতারা যেভাবে বলছেন, তারপরেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দিল্লী গিয়েও এনআরসি বিরুদ্ধে একটা কথাও বললেননা। ভয় ‘পেয়েছেন’ কিনা তা উনিই বলতে পারবেন। সোমবার তৃণমূল-বিজেপির বিভেদের রাজনীতির বিরুদ্ধে মানুষের জীবন জীবিকার দাবীতে বাঁকুড়া শহরের মাচানতলা ট্যাক্সি স্ট্যাণ্ডে এক সমাবেশে যোগ দেওয়ার আগে দলের জেলা দপ্তরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা বলেন সিপিএম রাজ্য কমিটির অন্যতম সদস্য, বিধায়ক সুজন চক্রবর্ত্তী। ঐ সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, দেশ ভাগের সময় হোক বা রাজ্যে সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথা চাড়া দিতে চেয়েছে, সব সময় মানুষ বামপন্থীদের উপর ভরসা রেখেছেন। ভোট কম হোক বা বেশী বড় কথা নয়, যে কোন বিপদ আসুক তা লাল ঝাণ্ডা রুখবে, ঐক্যবদ্ধ মানুষ রুখবেন। এতো সহজে ছাড়া হবেনা, রাজ্যে এনআরসি চালু করতে হলে ‘লাশের উপর তা করতে হবে’ বলেও হুঁশিয়ারী দেন সুজন চক্রবর্ত্তী। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সাম্প্রতিক মন্তব্য প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘উনি মানুষ না, গোবেট মার্কা লোক’। যে বলে দু’কোটি লোককে ‘ঘাড় ধাক্কা’ দিয়ে বের করে দেবো। অসভ্যের মতো উনি কথা বলছেন বলেও তিনি দাবী করেন।
রাজ্যের গোয়েন্দা প্রধান রাজীব কুমারকে সিবিআইএর খোঁজ প্রসঙ্গে সুজন চক্রবর্ত্তী পুরো ঘটনা ‘নাটক’ দাবী করে বলেন, একজন আইপিএস তাঁর সঙ্গে সব সময় নিরাপত্তারক্ষী থাকে। তিনি কোথায় আছেন রাজ্য যদি তা নিশ্চিত করতে না পারে তাহলে রাজ্যের মানুষের নিরাপত্তা কোথায় বলেও তিনি প্রশ্ন তোলেন। মুখ্যমন্ত্রী ও তদন্তকারী দল উভয়েরই রাজীব কুমার কোথায় আছেন জানা আছে দাবী করে তিনি বলেন, ‘খেলা চলছে’। এই নিয়ে ‘বাজার গরম’ রেখে বাকি সব ইস্যু ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলেও তার দাবী। দিদি-মোদির আঁতাতের অভিযোগ তুলে সুজন চক্রবর্ত্তী আরো বলেন, না হলে বিজেপি এই রাজ্যে শক্তি বৃদ্ধি করলো কি করে। বাম আমলে তো তা পারেনি। শাসক দলের নেতারা যে সমস্ত অপরাধ করেছেন তাতে তাদের গর্তে ঢুকে থাকার কথা। আঁতাতের জন্যই এখনো বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলেও তিনি দাবী করেন।
লোকসভা ভোট পরবর্ত্তী সময়ে লাল ঝাণ্ডার দীর্ঘ মিছিল দেখলো বাঁকুড়া শহর। এদিন কৃষকের উৎপাদিত ফসলের ন্যাহ্য দাম, মূল্যবৃদ্ধি রোধ, বিভেদ নয়, ঐক্য গড়ো, এনআরসি-র বিরোধীতা, পৌরসভা ও গ্রাম পঞ্চায়েত গুলিতে দূর্ণীতি বন্ধের দাবী জানিয়ে মিছিল করেন। দলের জেলা কমিটির ডাকে শহরের হিন্দু স্কুল ময়দান থেকে সিপিএম কর্মী সমর্থকদের দীর্ঘ এই মিছিল মাচানতলা ট্যাক্সি স্ট্যাণ্ডে শেষ। সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশে সুজন চক্রবর্ত্তী ছাড়াও বক্তব্য রাখেন সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্র, দলের জেলা সভাপতি অজিত পতি, মহিলা নেত্রী দেবলীনা হেমব্রম, ডিওয়াইএফআই এর সর্বভারতীয় সভাপতি অভয় মুখার্জ্জী প্রমুখ।