সঙ্গীতা চৌধুরীঃ- গতকাল অর্থাৎ ১১/১২/২০২৪ তারিখে তারকেশ্বরের উমাশশী কেশবচক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরে একটি শিক্ষামূলক ভ্রমণ আয়োজিত হয়েছিল। প্রায় ৫৫ জন স্কুল ছাত্র ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকগণ ও শিক্ষক-শিক্ষিকা মিলিয়ে সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছিল ১০৫ জন। এই শিক্ষামূলক ভ্রমণের জন্য নূন্যতম টাকা ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে নেওয়া হলেও স্কুলের তরফ থেকেও একটি বিপুল অঙ্কের টাকা প্রদান করা হয়েছিল।
শিক্ষামূলক এই ভ্রমণের জায়গা হিসেবে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরকেই কেন বেছে নেওয়া হলো এই সম্পর্কে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মানস কুমার পোড়েল বলেন, “বিষ্ণুপুর মূলত পোড়ামাটির মন্দিরের জন্য বিখ্যাত। তবে এখানে ল্যাটেরাইট পাথরে তৈরি অনেক মন্দির আছে, এছাড়া অনেক প্রাচীন স্থাপত্য রয়েছে। বিষ্ণুপুরের টেরাকোটা মন্দিরগুলি ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে বিবেচিত আর এই টেরাকোটার শিল্প থেকে শুরু করে বিষ্ণুপুরের ঐতিহাসিক গুরুত্ব ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠ্যাংশে রয়েছে। তাই আমরা হাতে কলমে এই সমস্ত জায়গার চাক্ষুষ গুরুত্ব বোঝাতে এই জায়গাটিকেই নির্বাচন করি।”
এইদিন ছাত্র-ছাত্রীদের রাসমঞ্চ,ছিন্নমস্তা মন্দির, রাজবাড়ির মধ্যে মা মৃন্ময়ীর মন্দির, দলমাদল কামান, জোড়বাংলা মন্দির,শ্যামরাই মন্দির,গুমঘর,বড় প্রস্থর দরজা ইত্যাদি দেখানো হয়েছে। এই ভ্রমণের ফলে ছাত্রছাত্রীরা যেমন আনন্দিত হয়েছে তেমনি তারা উপকৃতও হয়েছে। শীতের নরম রোদ গায়ে মেখে ছাত্রছাত্রীরা গোটা বিষ্ণুপুর ভ্রমণ করল। তারা বিভিন্ন মন্দিরের স্থাপত্য ও টেরাকোটার কারুকার্য বোঝার চেষ্টা করল, ভ্রমণশেষে সকলের জন্য মধ্যাহ্ন ভোজনের আয়োজন করা হয়েছিল। একদিনের এই শিক্ষামূলক ভ্রমণটিই সকলেই ভালোমতো উপভোগ করতে পেরেছেন।
এই শিক্ষামূলক ভ্রমণকে কার্যকর করার ক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষকসহ স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক মহাশয় বৃন্দাবন পাত্র, সুমন বাগ, টিঙ্কু হাজরা, মৌমিতা দাস ও চয়ন চ্যাটার্জী বিশেষভাবে উদ্যোগী হয়েছিলেন। শিক্ষক মহাশয়দের একাংশের বক্তব্য, বাংলার স্থাপত্য ও ভাস্কর্যকে দেখে ছাত্র-ছাত্রীরা যদি কিছু অনুভব করে থাকে ও বাংলার এই শিল্পকলার প্রতি এতটুকুও টান অনুভব করে নিজের পাঠ্যাংশের প্রতি নিজেদের একাত্মবোধ করতে পারে তবেই আমাদের এই প্রচেষ্টা সার্থক বলে আমরা মনে করব।