সঙ্গীতা চৌধুরীঃ- আজ মহালয়া, আজকের দিনে সকলেই তর্পণ করতে যাবেন। মহালয়ার এই তর্পণের সাথেই কর্ণের একটি গল্প আছে। মহাভারতের দাতা কর্ণের কথা আমরা প্রত্যেকেই জানি। কুন্তিপুত্র কর্ণের মৃত্যু হলে তিনি স্বর্গে যান, এরপর কর্ণের প্রয়াত আত্মাকে খাদ্য হিসেবে দেওয়া হয় রাশি রাশি সোনা। কর্ণ তখন অবাক হন। দেবরাজ ইন্দ্রকে তিনি জিজ্ঞেস করেন এর কারণ। সমস্ত প্রয়াত আত্মাকে যেখানে জল , খাদ্যদ্রব্য দেওয়া হচ্ছে সেখানে তাকে কেন জল খাদ্যদ্রবের পরিবর্তে রাশি রাশি সোনা দেওয়া হচ্ছে?
দেবরাজ ইন্দ্র তখন জানান তিনি যখন জীবিত ছিলেন তখন জীবিত থাকা অবস্থায় তিনি একদিনও তাঁর পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে জল বা খাদ্যদ্রব্য নিবেদন করেননি, তখন কর্ণ বলেন এতে তার কোন দোষ ছিল না কারণ তিনি তার পরিচয় জানতেন না আর যখন তিনি নিজের পরিচয় জানতে পারেন, তারপর তিনি আর বেশি দিন জীবিত ছিলেন না। এরপর দেবরাজ ইন্দ্র কর্ণের ভুল সংশোধনের জন্য তাকে ১৫ দিনের জন্য মর্ত্যে পাঠান, এই ১৫ দিন কর্ণ পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে জল তিল নিবেদন করেন। এই যে ১৫ দিন এই ১৫ দিনকেই বলা হয় পিতৃপক্ষ আর এই পিতৃপক্ষের শেষ দিন হল মহালয়া।
আমাদের শাস্ত্রীয় মতে নারীদের তর্পণে কোনও অধিকার থাকে না। তবে কোন বিধবা স্ত্রীলোক যদি নিঃসন্তান হন, সেক্ষেত্রে তিনি তর্পণ করতে পারেন। মহালয়ার দিন এমন কতগুলি কার্য আছে যা করলে আদ্যা শক্তি মহামায়া প্রসন্ন হন। আজকে জেনে নেব সেই সকল কাজগুলি কী কী? মহালয়ার দিন সকালবেলায় পুরুষ মানুষেরা তো তর্পণ করতে যাবেন কিন্তু মহিলারা তারা কী করবেন? এই দিন বাড়ির সকল মহিলাদের উচিত আদ্যা স্তোত্র পাঠ করা, একইসাথে প্রয়াত পুরুষদের উদ্দেশ্যে বাড়ির মহিলারা নির্দিষ্ট সংখ্যক জপ করতে পারেন, এতে প্রয়াত আত্মারা সন্তুষ্ট হন এবং পরবর্তী পুরুষদের উপর আশীর্বাদ বর্ষণ করেন।