eaibanglai
Homeএই বাংলায়সর্বনাশা 'গুটি খেলার' মৃত্যুফাঁদে শিল্পাঞ্চল, শীতঘুমে প্রশাসন

সর্বনাশা ‘গুটি খেলার’ মৃত্যুফাঁদে শিল্পাঞ্চল, শীতঘুমে প্রশাসন

মনোজ সিংহ, দুর্গাপুরঃ- গোটা রাজ্যজুড়ে একের পর এক দুর্নীতি কাণ্ডে জেরবার রাজ্য প্রশাসন,পুলিশ থেকে রাজনৈতিক দলগুলি। দৈনন্দিন ঘটে চলা একের পর এক দুর্নীতির ফাঁদে সর্বস্বান্ত হচ্ছে রাজ্যের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। প্রতারকদের হাতে প্রতারিত হয়ে প্রায় প্রতিদিনই মৃত্যুকে বেছে নিচ্ছেন প্রতারিত মানুষেরা। রাজ্য প্রশাসন, পুলিশ ও রাজনৈতিক দলের কর্মকর্তাদের নাকের ডগার ওপর বসে দেদার লুঠ চালাচ্ছে এক শ্রেণীর দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা। কিছুদিন ধরে শিল্পাঞ্চল আসানসোল-দুর্গাপুরে এইরকমই এক সর্বনাশা মৃত্যুফাঁদ ‘গুঠিখেলা’ নামে নতুন জুয়া খেলা শুরু হয়েছে।

সূত্র মারফত জানা গেছে, ভিন রাজ্যের নামী লটারি সংস্থার বিজয় টিকিটের শেষ ২ সংখ্যা নিয়ে চলছে এই ‘গুটি খেলা’ শিল্পাঞ্চলে। সর্বনাশা মৃত্যুফাঁদ এই ‘গুঠি খেলা’ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে সঞ্জয়, বুবাই ও দেবাশীষ নামের তিন দুষ্কৃতী বলে জানা গেছে। নির্বিঘ্নে নিজেদের গোপন ডেরা থেকে গোটা শিল্পাঞ্চল তথা রাজ্যজুড়ে চালাচ্ছে তারা এই সর্বনাশা মৃত্যুফাঁদ ‘গুটি খেলার’ ব্যবসা বলে অভিযোগ। শিল্পাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি ওলিতে গলিতে সন্ধ্যা ও দুপুরের সময় ভিড় লক্ষ্য করা যায় এই সর্বনাশা ‘গুটি খেলার’ বিজয় টিকিটের শেষ ২ সংখ্যা ফলাফলের তথ্য জানার জন্য খেটে খাওয়া মানুষের। ওই ভিড়ে থাকা বেশিরভাগ মানুষই চোখের জলে নিয়ে ফেরেন বাড়ি সর্বস্বান্ত হয়ে ওইসব দোকান থেকে। এই ধরনের জুয়ার সাথে যুক্ত হয়ে পড়ছে দিন আনা খেটে খাওয়া মানুষ,মধ্যবিত্ত ,ব্যবসায়ী থেকে চাকরিজীবী বলে অভিযোগ।

আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্গত দুর্গাপুর থানার দায়িত্বে প্রসেনজিৎ রায় আসার সাথে সাথেই কড়া হাতে এই সর্বনাশা ‘গুটি খেলা’ ব্যবসা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছিলেন শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুর এলাকায়। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো সপ্তাহ ১০ দিন বন্ধ থাকার পর আবার হঠাৎ করে রম-রোমিয়ে চলতে শুরু করল এই সর্বনাশা ‘গুঠি খেলা’ শিল্পাঞ্চলে আবার নতুন করে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, কার অঙ্গুলি হিলনে পুলিশকে তক্কা না করে আবার নতুন করে শুরু হল শিল্পাঞ্চলে এই সর্বনাশা ‘গুটি খেলার’ ব্যবসা? শিল্পাঞ্চলে প্রকাশ্য দিবালোকে সকাল ১১ টা থেকে রাত্রি ৯ টা পর্যন্ত এই ‘গুঠি খেলা’ বা জুয়া চালিয়ে যাচ্ছে ওইসব দুষ্কৃতীরা নির্ভয়ে বলে অভিযোগ।

এদিকে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মকর্তা ইতিমধ্যেই রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী, পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলাশাসক, আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনারকে ও দুর্গাপুর মহকুমা শাসককে লিখিতভাবে এই সর্বনাশা ‘গুটি খেলার’ সম্বন্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন গত ১৩/২/২০২৪ তারিখে। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, “চিঠি প্রাপ্তি স্বীকার করলেও এখনো পর্যন্ত কোনো সরকারি আধিকারিক এ বিষয়ে কড়া হস্তক্ষেপ করেননি, আজও নির্বিঘ্নেই চলছে এই ‘গুটি খেলা’ শিল্পাঞ্চল জুড়ে।” তাদের আরো অভিযোগ, “যদি এভাবে প্রশাসনের মদতে এই ‘গুটি খেলা’ চলতে থাকে তাহলে মানুষজনদের যে ক্ষতি দিনের পর দিন হয়ে চলেছে এর দায় কে নেবে ?”

একটি অসমর্থিত সূত্র মারফত জানা গেছে, সর্বনাশা এই ‘গুটি খেলার’ মাস্টারমাইন্ড সঞ্জয়, বুবাই ও দেবাশীষ নাকি মোটা টাকার সেলামি দিয়ে একশ্রেণীর দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশ আধিকারিক ও রাজনৈতিক নেতাদেরকে সন্তুষ্ট করে নির্ভয়ে শিল্পাঞ্চলের মানুষের সর্বনাশ ডেকে আনছেন দৈনন্দিন। এও অভিযোগ পাওয়া গেছে, এই তিন কুখ্যাত দুষ্কৃতী শিল্পাঞ্চলের একাধিক খেলা, জলসা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মোটা টাকা দিয়ে শিল্পাঞ্চলের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের চোখ বেঁধে রেখেছেন। শিল্পাঞ্চলের মানুষ দৈনন্দিন নিজেদেরকে এই সর্বনাশা গুটি খেলা থেকে মুক্ত করার কোন রাস্তা দেখতে পাচ্ছে না, বেছে নিতে হচ্ছে মৃত্যুকে। যে সকল মানুষজনেরা এই রকম অনৈতিক, অবৈধ ও সর্বনাশা ‘গুটি খেলা’ বা জুয়াকে সমর্থন করছেন ,অজান্তে তারা কি এই মানুষগুলির হত্যার দায়ী নয় ? শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দারা স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের কাছে যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে এই সর্বনাশা ‘গুটি খেলা’ বা জুয়া খেলা গুলিকে বন্ধ করার আজি জানিয়েছেন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments