নিজস্ব সংবাদদাতা, বর্ধমান: এটা কি নিছক রাজনৈতিক সৌজন্য নাকি এর ভেতরেই নতুন রাজনৈতিক কৌশল লুকোনো রয়েছে?
একে তো তৃণমুল কংগ্রেসের আয়োজনে শিবির, তারওপর আবার মুসলমানদের উৎসব, বলা নেই কওয়া নেই সেখানে কিনা সটান হাজির দিলীপ ঘোষের মতো হার্ডলাইনার হিন্দু আইকন? এই নিয়ে এখন জোর চর্চা রাজ্য রাজনীতিতে।
তিনি যে পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ তা ফের প্রমাণিত হল বৃহস্পতিবার। সাংগঠনিক দুর্বলতাকে ঢাকতে বর্ধমান দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের প্রতিদিন নানান মন্তব্য রীতিমত ভোটের টেম্পো বাড়িয়ে তুলেছে। আর বৃহস্পতিবার ভাতারে জনসংযোগ অভিযানে যাবার পথে ঈদের জন্য বর্ধমান ১নং ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে জলসত্র শিবিরে আচমকাই ঢুকে পড়লেন দিলীপ ঘোষ। যা নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা তুঙ্গে উঠেছে। ঈদের দিন তিনি সেই রকমই চমক দিলেন। চমকে দিলেন শাসকদলকেও। তবে কোন হালকা কথা বলে নয়। ভাতাড় যাওয়ার পথে তিনি ঢুকে পড়েন তালিতের দিঘীরপাড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের এই জলসত্র অনুষ্ঠানে। বাঘাড় ২ নম্বর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দলীয় কার্যালয়ে ঈদের অনুষ্ঠানের জন্য জলসত্রের এই আয়োজন করা হয়। সেই সময় এই শিবিরে উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান তথা বর্ধমান ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি কাকলি তা।
দিলীপ ঘোষ জলসত্রের অনুষ্ঠানে ঢুকে মাইক হাতে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান। মিনিট পাঁচেক ওখানে থাকার পর অবশ্য তিনি তার নির্ধারিত কর্মসূচির জন্য ভাতাড়ের ওড়গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পরে দিলীপবাবু জানিয়েছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিতেই যখন জলসত্র অনুষ্ঠান থেকে তাকে জল দেওয়া হয় তিনি তখন মঞ্চে গিয়ে সকলের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এদিকে, এই ঘটনায় ভোটের রাজনীতি তুঙ্গে উঠেছে। এদিন বিজেপি সূত্রে দাবী করা হয়েছে, দিলীপবাবু যখন যাচ্ছিলেন সেই সময় জলসত্র শিবিরের সামনে তাঁর গাড়িকে হাত দেখিয়ে দাঁড়াতে বলা হয়। আর গাড়ি দাঁড়াতেই দিলীপবাবু সঙ্গে সঙ্গে নেমে আসেন গাড়ি থেকে। বিজেপি সূত্রে বলা হয়েছে, এদিন যদি দিলীপবাবু গাড়ি না থামিয়ে চলে যেতেন তাহলে তাঁকে অনেক কিছু বিদ্বেষী বলে তকমা দেবার সুযোগ পেত তৃণমূল। কিন্তু এদিন দিলীপবাবু যা করলেন তাতে তৃণমূলের অন্দরেই কাঁপন শুরু হয়ে গেছে।