eaibanglai
Homeএই বাংলায়স্বেচ্ছায় রক্তদান করার জন্য দেশবাসীকে সচেতন করতে দেশভ্রমণে হুগলির যুবক

স্বেচ্ছায় রক্তদান করার জন্য দেশবাসীকে সচেতন করতে দেশভ্রমণে হুগলির যুবক

নীহারিকা মুখার্জ্জী,হুগলিঃ- দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তি, গুরুত্বপূর্ণ শল্য চিকিৎসা, থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রুগীদের বেঁচে থাকার জন্য রক্ত অপরিহার্য হলেও আজও দেশ বা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আয়োজিত ‘স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির’ থেকে ভয় ও কুসংস্কার জনিত কারণে প্রয়োজনের তুলনায় কম রক্ত সংগৃহীত হয়।

সেই কুসংস্কার ও ভয় দূর করার লক্ষ্যে এবং যুবসমাজকে রক্তদানে উৎসাহিত করার জন্য সাইকেলে এই রাজ্যে পাহাড় থেকে সাগর এবং অন্যান্য রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ শহর ভ্রমণে বের হন ‘সাইকেল ম্যান অফ রক্তদান ইন্ডিয়া’-র জয়দেব রাউত যিনি ‘ফেডারেশন অফ ব্লাড ডোনার্স অর্গানাইজেশন অফ ইন্ডিয়া’-র ব্রান্ড সাইকেল রাইডার।

একদল শুভানুধ্যায়ী মানুষের শুভেচ্ছাকে পাথেয় করে গত বছর ২২ শে অক্টোবর সাইকেলে করে বৈদ্যবাটির জয়দেব রাউত ১৯ টি রাজ্যের প্রায় ২১ হাজার কিমি-র বেশি পথ অতিক্রম করে ৭ ই সেপ্টেম্বর থামেন নিজ জেলা হরিপালে। সেখানে তাকে সম্মাননা প্রদান করে হরিপালের ‘এসো বন্ধু হই’ নামক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। নিজ জেলার মানুষের কাছে সম্মাননা পেয়ে আপ্লুত হন জয়দেব বাবু।

তার এই সাইকেল যাত্রার মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের প্রতিটি ব্লকের প্রতিটি পরিবার থেকে কমপক্ষে একজন করে রক্তদাতাকে তৈরি করা যারা প্রয়োজনের সময় রক্তদান করতে এগিয়ে আসবে। একইসঙ্গে ‘জাগো রক্তদাতা জাগো’ এই কর্মসূচিকে সার্থক রূপ দেওয়া।

ওয়েস্ট বেঙ্গল ভলাণ্টারী ব্লাড ডোনার্স ফোরামের স্হায়ী সদস্য বছর তিপান্নর ‘যুবক’ জয়দেব স্হানীয় একটি জুটমিলের ‘নো ওয়ার্ক নো পে’ ভিত্তির অস্হায়ী কর্মী। মাত্র আঠারো বছর বয়সে ফুটবল খেলতে গিয়ে পেটে মারাত্মক আঘাত পান। জরুরি ভিত্তিতে অপারেশনের জন্য প্রয়োজনীয় চার বোতল রক্ত সংগ্রহ করতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের চরম সংকটে পড়তে হয়। এই ঘটনা তার মনে আমূল পরিবর্তন আনে। দেশের যুব সম্প্রদায়কে স্বেচ্ছায় রক্তদান করার আহ্বান জানিয়ে তিনি সাইকেলে চেপে বেরিয়ে পড়েন। শুধু তাই নয় নিজেও ইতিমধ্যে ৪০ বার রক্তদান করেছেন। যদিও এই মহতী কাজের জন্য তিনি না পেয়েছেন কোনো সরকারি সাহায্য বা অফিসে বাড়তি সুবিধা। সম্বল মানুষের ভালবাসা।

‘এসো বন্ধু হই’ সংস্থার অন্যতম সদস্য অন্বয় দে বললেন – বর্তমান যুগে জয়দেব বাবুর মত মানুষদের খুব দরকার। এরাই পারেন সমগ্র দেশের মানুষকে রক্তদানে উৎসাহিত করতে।

প্রসঙ্গত ‘এসো বন্ধু হই’ সংস্থাটি প্রায় প্রতি মাসে একটি করে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে। এমনকি তারা মরণোত্তর চক্ষুদান করার বিষয়ে সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করে। তাদের প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যে চক্ষুহারা বহু মানুষ দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়েছে।

জয়দেব বাবু বললেন,’আমার জীবনে যে সমস্যায় পড়েছিলাম সেই সমস্যায় যাতে অন্যরা না পড়ে তার জন্য আমার এই প্রচেষ্টা।’ তিনি আরও বললেন – আমার বাড়িতে স্ত্রী ও দুই সন্তান আছে। সরকার যদি আর্থিক সাহায্য করে এবং অফিস যদি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে খুব উপকার হয়।

এখন দেখার দেশের মানুষের স্বার্থে সরকার বা তার অফিস রক্তদান আন্দোলনের ধারাবাহিক যোদ্ধা জয়দেব বাবুর আবেদনে সাড়া দেয় কিনা!

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments