জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,মঙ্গলকোটঃ- বড় হতো চাই মাগো বড় হতে চাই / ভদ্রলোকের ছেলের মত কম্পিউটার শিখতে চাই – কিন্তু চাই বললেই তো আর সব আশা পূরণ হয়না! ওরা গরীব আদিবাসী ঘরের ছেলেমেয়ে। উদয়-অস্ত পরিশ্রম করে ওদের মা-বাবা বিদ্যালয়ে ভর্তি করেছে। সেখানে কম্পিউটার নাই। আবার অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে কম্পিউটার শেখার জন্য কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যে ভর্তি হবে সেই আর্থিক ক্ষমতা ওদের অভিভাবকদের নাই। ওরা মঙ্গলকোট থানার চাণক গ্রামের ‘পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু পাঠশালা’-র ছাত্রছাত্রী। সংখ্যায় প্রায় একশ জন।
অবশেষে দুটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সৌজন্যে ওদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়। গত ৬ ই সেপ্টেম্বর দ্য টরেণ্টো-ক্যালকাটা ফাউন্ডেশন কানাডা -এর সক্রিয় সহযোগিতায় ও মঙ্গলকোটের নতুনহাট খাদি উন্নয়ন সমিতির উদ্যোগে ও ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি কম্পিউটার।
কম্পিউটার শেখার সুযোগ পাওয়া যাবে ভেবে ছেলেমেয়েগুলি আনন্দে মেতে ওঠে। তাদের চোখে মুখে ছিল খুশির ঝিলিক।
প্রসঙ্গত এইসব গরীব ঘরের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য সর্বদাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন মঙ্গলকোট থানার আইসি পিণ্টু মুখোপাধ্যায়। ওখানকার শিক্ষকদের মতে তিনিই এই বিদ্যালয়টির প্রাণপুরুষ।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দুটির কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুকুমার সোরেন বললেন – আমার বিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েদের কম্পিউটার শেখার শখ থাকলেও আর্থিক কারণে সেটা সম্ভব হচ্ছিলনা। কম্পিউটারটি পেয়ে খুব ভাল লাগছে। এবার তো ওরা কম্পিউটার শিখতে পারবে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন – একদিন আমি কম্পিউটার শিখেছিলাম। কিছুটা ভুলে গেলেও যতটা পারব শেখানোর চেষ্টা করব। তার আশা এই গরীব ঘরের ছেলেমেয়েদের স্বার্থে কম্পিউটার জানা স্থানীয় ছেলেমেয়েরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে। পাশাপাশি তিনি ভূয়সী প্রশংসা করেন মঙ্গলকোট থানার বড়বাবুর। বললেন – ঐ দরদী মানুষটির জন্যই এইসব ছেলেমেয়েরা শিক্ষার আলো দেখতে পাচ্ছে।
অন্যদিকে খাদি উন্নয়ন সমিতির পক্ষ থেকে নজরুল সাহেব বললেন – আমরা সর্বদাই মানুষের পাশে, সমাজের পাশে আছি।
প্রচারের আড়ালে থেকে খাদি উন্নয়ন সমিতি এলাকায় বহু উন্নয়নমূলক কাজ করে চলেছে।