সৌমিলি মন্ডল, বাঁকুড়া:- একটা সময় গ্রীষ্মকাল এলেই তীব্র পানীয় জলের সমস্যায় পড়ত বাঁকুড়া জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা। ধীরে ধীরে অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছে। ঘরে ঘরে পাইপলাইনের মাধ্যমে পৌঁছে গেছে পানীয় জল। তারপরও বঞ্চিত থেকে গেছে রায়পুর ব্লকের আদিবাসী অধ্যুষিত যাদবনগর গ্রাম।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ গ্রামে পানীয় জলের জন্য পাইপলাইন বসানো হয়েছে, ঘরে ঘরে পানীয় জলের জন্য সংযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এক ফোঁটাও জল পড়েনি। গ্রামের প্রায় ৩০টি পরিবারের পানীয় জলের একমাত্র ভরসা একটি মাত্র নলকূপ। জলস্তর নেমে যাওয়ার জন্য গ্রীষ্মকালে তাতেও জল কম পড়ে। ফলে চরম সমস্যায় পড়ে গ্রামবাসীরা। স্থানীয় পঞ্চায়েতকে জানানো সত্ত্বেও সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি। ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে গ্রামবাসীরা।
এই পরিস্থিতিতে গত ২৫ শে এপ্রিল বিকালে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে তৃণমূল কংগ্রেসের ‘তফসিলি বন্ধু’ প্রচার গাড়ি গ্রামে এলে সেটি আটকে বিক্ষোভ দেখায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। গ্রামের কমলাকান্ত কিসকু, এভেন সরেন, মার্শাল হাঁসদা, শিকারি হেমব্রম, পূর্ণিমা মুর্মু, মামনি মান্ডিদের বক্তব্য – এত ভোটের প্রচার করা হচ্ছে অথচ আমাদের গ্রামে পানীয় জলের সমাধান হয়নি কেন? আমরা আদিবাসী বলেই কি আমাদের প্রতি এই বঞ্চনা? পানীয় জলের জন্য পাইপলাইন করা হলেও তাতে জল পড়ে না। অবিলম্বে পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে হবে নাহলে গাড়ি ছাড়া হবে না।
খবর পেয়েই বিক্ষোভকারীদের শান্ত করতে ঘটনাস্থলে হাজির হন রায়পুর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শান্তিনাথ মন্ডল ও যুবনেতা মিঠুন সুরাল। কিন্তু শান্তি বাবু বিক্ষোভকারীদের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এগিয়ে আসেন মিঠুন বাবু। তিনি বিক্ষোভকারীদের সাথে দীর্ঘ আলোচনা করেন। তাদের পরিস্থিতি বুঝিয়ে বলেন। তাদের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ উঠে যায় ও গাড়িটি ছাড়া পায়।
শান্তি বাবু বলেন- আমরা এলাকার পানীয় জলের সমস্যা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। সমস্যার সমাধানের জন্য পাইপলাইনের মাধ্যমে ঘরে ঘরে জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। কিছু সমস্যার জন্য এখনো সেটার মাধ্যমে জল পেতে অসুবিধা হলেও খুব শীঘ্রই পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্রামবাসীরা পানীয় জল পাবে। আপাতত চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে পানীয় জলের সমস্যার সমাধান করা হবে।