সঙ্গীতা চৌধুরীঃ- একজন প্রশ্ন করেছিলেন, “মনে উচ্চাশা জাগে, কিছু একটা করতে ইচ্ছা হয়। কিন্তু এই ভাবটাকে ধরে রাখতে পারি না। এর সমাধান কীভাবে করবো?” স্বামী সোমেশ্বরানন্দ মহারাজ এর উত্তরে বলেন,“ তোমার উচ্চাশা কী ধরণের? ভাল রেজাল্ট করে IIT-তে ভর্তি হওয়া? বহুজাগতিক কোম্পানির চাকরি পাওয়া? জীবনে এক বিখ্যাত লোক হওয়া ? দ্বিতীয় প্রশ্নঃ কেন এই উচ্চাশা? এটা কি লক্ষ্য না এর মাধ্যমে তুমি আরও কিছু পেতে চাও? তৃতীয় প্রশ্নঃ কোনো বিশেষ সময়ে এই উচ্চাশা পূর্ণ করতে চাও (time-bound goal)?এই প্রশ্নগুলির বিষয়ে ভাবো। কী চাইছি, কেন চাইছি, ইত্যাদি না ভাবলে সমস্যা দেখা দেবেই।”
এরপর মহারাজ দ্বিধান্বিত এই যুব সমাজের উদ্দেশ্য বলেন,“অধিকাংশ ছাত্র সমাজ-প্রভাবিত হয়ে উচ্চাশা ঠিক করে। মার্কেটে কি চলছে, তার উপর জোর দেয়। এটা ভুল পথ। কারণ লাইন বাছার আগে দেখতে হয়, আমার মনের স্বাভাবিক প্রবণতা কোন দিকে? অর্থাৎ, গীতার কথায় আমার স্বধর্ম কি ? দ্বিতীয়ত, যে-কোনো লাইনেই বিখ্যাত হওয়া যায়, প্রচুর অর্থ উপার্জন হয়। তৃতীয়ত, লক্ষ্যে পৌঁছে যাবার পরে কি করবে? জীবনে মানুষের ছোট ছোট অনেক লক্ষ্য থাকে। কিন্তু বৃহৎ কোনো লক্ষ্য নেই। ফলে বড় হয়ে সে কি করবে তা বুঝতে পারে না। এজন্য অনেকে স্থিতাবস্থায় চলে যায়। তাহলে তুমি কি করবে ?
1। নিজের মানসিক প্রবণতা অনুযায়ী একটা লক্ষ্য স্থির করো। (কেরিয়ার ছাড়া অন্য এক লক্ষ্য)
কিভাবে বাঁচতে চাও? জীবনকে কিভাবে ব্যবহার করতে চাও? সারাটা জীবন কিভাবে কাটাবে?
2। এভাবে জীবনের একটা আদর্শ ঠিক করো।
সারাটা জীবন যা তোমার সামনে ধ্রুবতারার মতো পথ দেখাবে সাফল্য-ব্যর্থতা সত্ত্বেও।
3। রোজ, কিংবা সপ্তাহে একদিন নিজের মূল্যায়ন করো- ঐ বৃহৎ লক্ষ্যের দিকে এগোচ্ছ কিনা, এবং কতটা এগিয়েছ ? এইপথে তোমার সুবিধে হবে যদি বেদান্তের দুটি কথা তুমি সবসময় মনে রাখো। এক, তোমার মধ্যে অসীম শক্তি রয়েছে (the sky is no limit)। দুই, সমাজের সাথে যত বেশি একাত্ম হবে ততই তোমার সুবিধা হবে বৃহত লক্ষ্যের দিকে এগোতে।”





