eaibanglai
Homeএই বাংলায়ইউটিউবার থেকে অভিনেতা হ‌ওয়ার লড়াই! কী বললেন ফেরারি মনের ভিকি খ্যাত সৌরদীপ?

ইউটিউবার থেকে অভিনেতা হ‌ওয়ার লড়াই! কী বললেন ফেরারি মনের ভিকি খ্যাত সৌরদীপ?

সঙ্গীতা চ্যাটার্জী (চৌধুরী)ঃ- কালার্স বাংলার ফেরারি মন ধারাবাহিকে নায়ক অগ্নির ছায়ার সঙ্গী তিনি, হ্যাঁ বন্ধুরা, অগ্নির ঘনিষ্ঠ বন্ধু ভিকির সম্পর্কে বলছি। কালার্স বাংলার ফেরারি মন ধারাবাহিকটি যারা দেখেন তারা ভালো মতই জানেন অগ্নি যেখানে ভিকি আর সিড সব সময় সেখানে থাকে, বন্ধুর খারাপকেই খারাপ আর বন্ধুর ভালোকেই ভালো ভেবে গ্রহণ করে তারা। ফেরারি মন ধারাবাহিকটি জনপ্রিয়তা লাভ করার পর তাই নায়ক, নায়িকা ও অন্যান্য প্রধান চরিত্রের পাশাপাশি নায়কের বন্ধু হিসেবে ভিকি ও সিডের চরিত্র দুটিও বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। অগ্নির প্রাণের বন্ধু ভিকি চরিত্রে একটি নবাগত মুখকে দেখা গেছে প্রথম থেকেই, ফেরারি মন ধারাবাহিক দিয়েই টেলিভিশন জগতে তার পদার্পণ আর এই ধারাবাহিকে অভিনয় করেই দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। আজ ‘এই বাংলায়’ ওয়েব পোর্টালের পক্ষ থেকে আমাদের প্রতিনিধি সঙ্গীতা চৌধুরী কথা বলেছেন ভিকি চরিত্রের অভিনেতা সৌরদীপ রায়ের সাথে। একান্ত সাক্ষাৎকারে অভিনেতা আমাদের জানিয়েছেন তার অভিজ্ঞতার কথা।

প্রশ্ন: আপনি বললেন ফেরারি মনের ভিকি চরিত্রটাই টিভি চ্যানেলের ক্ষেত্রে আপনার প্রথম কাজ। তাহলে তার আগে আপনি কি টিভি পর্দা ছাড়া অন্য কোন গ্রাউন্ডে কাজ করেছেন?

সৌরদীপ: আসলে আমার একটা নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল আছে, সেখানে বিভিন্ন মাইথোলজিক্যাল ওয়ার্ক আমি করি। সেখানে কৃষ্ণের একটা রোল আমি প্লে করেছিলাম, তার আগে একটা মিউজিক ভিডিও করেছিলাম, এই সবটাই অবশ্যই ইউটিউব চ্যানেলে।

প্রশ্ন: তার মানে আপনিও কি স্যান্ডি সাহার মতো ব্লগার?

সৌরদীপ: নাহ, একচুয়ালি ‘Third eye creation’ বলে আমার একটা ইউটিউব চ্যানেল আছে, রিসেন্টলি আমি একটা ব্লগিং চ্যানেল খুলেছি।

প্রশ্ন: ভিকি চরিত্রের এই প্রস্তাবটা কীভাবে আপনার কাছে এলো?

সৌরদীপ: ১৬ সেপ্টেম্বর আমি একটা অডিশন দিই, তারপর শুটিংয়ের দিন ভোর ছয়টার সময় চ্যানেল থেকে আমাকে জানানো হয় যে আমি সিলেক্টেড হয়েছি, দিনটা ছিল লক্ষ্মী পুজোর পরের দিন। আসলে ওনারা তার আগের রাত থেকে আমাকে কন্টাক্ট করতে চেয়েছিলেন কিন্তু কোন ভাবে করে উঠতে পারেননি, তাই শুটিংয়ের দিন প্রোডাকশন হাউস থেকে আমার কাছে যখন ফোন আসে, তখন আমাকে স্টুডিওতে আসতে বলা হয়, আমি ইনফ্যাক্ট তখনো জানতাম না, সিরিয়ালটা কি, বা আমার ক্যারেক্টার টা কি! স্টুডিওতে যাওয়ার পরে আমি জানতে পারি যে ফেরারি মনের ভিকি চরিত্রটির জন্য আমাকে সিলেক্ট করা হয়েছে।

প্রশ্ন: পরিবারে যখন প্রথম জানিয়েছিলেন তখন কি প্রতিক্রিয়া হয়েছিল?

সৌরদীপ: হ্যাঁ সবাই খুব খুশি হয়েছিল, তবে মা তো প্রথমে বিশ্বাসই করেন নি , ভেবেছিলেন আমি মজা করছি।

প্রশ্ন: আপনার মধ্যে তো একটা চকলেট বয় লুক আছে, অথচ সিরিয়ালের শুরুতেই নেগেটিভ একটা লুক আপনাকে দেওয়া হলো!

সৌরদীপ: হ্যাঁ, ফেরারি মনে ক্যারেক্টারটা আমার কাছে ভীষণ চ্যালেঞ্জিং ছিল, প্রথম যখন বলা হয় যে, একটা নেগেটিভ ক্যারেকটার তখন আমার বাড়ির লোক,বন্ধু বান্ধব সবাই বলেছিল,‘তোকে নেগেটিভ দিল! মানে কেন?’- আসলে আমার মধ্যে একটা লাভলি ব্যাপার আছে বলে সবাই ভেবেছিলো যে পজিটিভ ক্যারেক্টার করা আমার পক্ষে খুব সহজ হবে। আমার নিজেরও এটা কোথাও না কোথাও গিয়ে মনে হয়েছিলো।

প্রশ্ন:জীবনের প্রথম কাজেই শ্যুটিং ফ্লোরে অরিন্দম,বিদিপ্তা,দেবরাজের মত সিনিয়ার অভিনেতা অভিনেত্রীদের সাথে কাজ করেছেন! কেমন লাগে?

সৌরদীপ:অরিন্দম দা, বিদিপ্তাদি , দেবরাজ দা, অপ্রতিম দা এদের সকলের সাথে কাজ করতে পেরে আমি নিজেকে খুব লাকি বলে মনে করি। অরিন্দম দা তো সেই মানুষটা যাকে ছোটবেলায় আমরা বামাক্ষ্যাপা হিসেবে দেখেছি তার সাথে একসাথে কাজ করতে পারা এটা যে কতটা বড় ভাগ্যের বিষয়-আমি বলে বোঝাতে পারবো না। প্রথম দিন গিয়েই তাই ওনাকে প্রণাম করেছিলাম। আসলে আমি প্রচন্ড ভাগ্যবান বলে মনে করি নিজেকে যে আমি এরকম একটা সিরিয়াল দিয়ে নিজের লাইফ স্টার্ট করেছি যেটা এখন সিরিয়াল কম আমার কাছে ফ্যামিলি বেশি হয়ে গেছে। কেননা ওখানে গিয়ে আমার কখনো মনে হয় না যে ওনারা আমার কো এক্টর।

প্রশ্ন:প্রথম কাজের ক্ষেত্রে কখনো কোনো সিন করতে গিয়ে অসুবিধা হয়নি?

সৌরদীপ:এটা যেহেতু আমার প্রথম কাজ তাই আমি অনেক কিছুই জানতাম না কিন্তু এখন অনেক কিছু টেকনিক্যাল জিনিস আমি শিখেছি, এই শেখার ক্ষেত্রে আমাকে বিপুল দা অনেক হেল্প করেছেন, এছাড়া ডিরেক্টর বিধান দা অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর প্রভাত দা, শেষাদ্রি দি, শ্রিয়া দি, রাইসা দি,অজপা দি এরাও আমাকে খুব হেল্প করেছেন, এদের হেল্প ছাড়া হয়তো ভিকি চরিত্রটাই তৈরি হতো না।

প্রশ্ন:পর্দায় অগ্নির সাথে ভিকির তো খুব ভালো বন্ধুত্ব! অফস্ক্রিনে আপনাদের সম্পর্ক কীরকম?

সৌরদীপ:বিপুল দা তো আমার একদম নিজের দাদার মতো, বিপুল দা কে আমরা ভীষণ ভালোবাসি, আর বিপুল দাও আমাকে আর বিশ্বজিৎকে নিজের ভাইয়ের মতোই ভালোবাসে। প্রচন্ড স্নেহ করে। আসলে অন স্ক্রিন আমাদের যে বন্ধুত্বটা দেখানো হয় অফ স্ক্রিনে আমাদের বন্ধুত্বটা তার থেকেও হাজার গুণ বেশি , এজন্যই আমাদের বন্ধুত্বটা দর্শকের এত ভালো লাগে। সেই কারণে আমাদের অভিনয় করতে হয় না, আমাদের তিনজনের যখন সিন আসে, তখন আমরা একবারেই সেই শটটা দিতে পারি।

প্রশ্ন:আর সুদীপ্তা?

সৌরদীপ: সুদীপ্তা তো প্রচন্ড কিউট আর মিষ্টি একটা মেয়ে, ও অ্যাকচুয়ালি আমার থেকে বয়সে অনেক ছোটো, কিন্তু প্রথমে ও সেটা জানতো না তাই আমি ওকে দিদি বলে ডাকতাম আর ও আমাকে ‘বাচ্চা ছেলে’ বলে ডাকতো, পরে জানতে পারে যে ও আমার থেকে ছোট কিন্তু এখন আমাকে ‘বাচ্চা ছেলে’ বলেই ডাকে।

প্রশ্ন: ভিকি চরিত্রের ট্যাগলাইন যদি বলতে বলি?
সৌরদীপ: বন্ধু‌ অন্ত প্রাণ। অগ্নির চোখ দিয়ে সে সবটা দেখে। অগ্নির চোখ দিয়ে সে তুলসিকে বিচার করে।

প্রশ্ন: একজন অভিনেতা নয় একজন দর্শক হিসেবে ফেরারি মন নিয়ে কী বলবেন?

সৌরদীপ: একজন দর্শক হিসেবে বলবো, ফেরারি মন সিরিয়ালে রেগুলার এমন কিছু স্টান্ট,স্টোরি লাইন দেখানো হয় যেটা হয়তো সিনেমার ক্ষেত্রেই হয় প্রত্যেকটা মুহূর্তে একটা টানটান এপিসোড। আজ যেখান থেকে সিনটা শুরু হচ্ছে, কাল হয়তো সিনটা পুরো বদলে যাবে এই বিষয়টা টেলিভিশনের ক্ষেত্রে খুব একটা দেখা যায় না,বলেই আমার ধারণা। এছাড়া প্রত্যেকটা ক্যারেক্টারের আলাদা আলাদা একটা স্টোরি লাইন আছে যেটা হয়তো আগামী দিনে আরও বেশি করে রিভেল হবে বলে আমার মনে হয়।

প্রশ্ন:আজ সৌরদীপ যে ভিকি হতে পেরেছেন তার জন্য কাদের অবদান বলে মনে করেন?

সৌরদীপ: আজকে এই জায়গায় আসতে পেরেছি তার পিছনে মা,বাবা, দিদি তো আছেনই, কিন্তু এছাড়াও আরো যে দুজন মানুষ আছেন তাদের মধ্যে একজন হল আমার ভাই আকাশ আর আমার আর এক ভাই দ্বৈপায়ন চৌধুরী, এদের সাপোর্ট না থাকলে হয়তো আমি এখানে আসতে পারতাম না।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments