মনোজ সিংহ, দুর্গাপুর:- দায়ে পড়ে ফের উচ্ছেদের ইচ্ছে হয়েছে। ওপরতলার চাপও বিস্তর, তবে, আদৌ তেমন তৈয়ারীটাই নেই এডিডিএ’র। কারন, কোমর বেঁধে ময়দানে নামার আগে খাতা কলমে গত ১০ মাসেও জবরদখলের আসল হিসাব কিতাবটাই করে উঠতে পারেনি রাজ্য সরকারের এই সংস্থা।
কিসের হিসাব ? এতে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন সংস্থার গাফিলতিটাই বা কিসের ?
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার সরকারি জমিতে জবরদখল উচ্ছেদ প্রসঙ্গে তার কড়া মনোভাবের কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বাঙলার সমস্ত পুরসভা আর নগর উন্নয়ন পর্ষদকে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে কার্যতঃ বুঝিয়ে দেন, উচ্ছেদ প্রসঙ্গে কোনো ওজর আপত্তিই মানা হবেনা আর জেনেবুঝে এবিষয়ে কাউকে রেয়াত করলে তাকেও রেহাই দেওয়া হবেনা। আর ঠিক এখানেই বেশ বেকায়দায় পড়ে গেছে দুর্গাপুর নগর নিগম থেকে এডিডিএ, পুলিশ থেকে প্রশাসন – প্রায় সকলেই। কারণ, প্রায় সব পক্ষেরই স্পষ্ট ধারণা রয়েছে কোথায় কোথায় বড়সড় মাপের লোকেরা সরকারি জমি দখল করে বছরের পর বছর ঢালাও ব্যবসা করে যাচ্ছেন সরকারি আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আর ওপর তলায় সবার সাথে হাসিমুখে কি আদরের সম্পর্কটাইনা বজায় রেখেছেন!
তাই, বারে বারে চেয়েও কার্যতঃ কিছুই করা যায়নি শহর দুর্গাপুরের মার্কামারা কিছু দখলদারির বিরুদ্ধে। গত ২০২৩’র জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে বিধাননগরের অবৈধ দখলদার উচ্ছদের পর নগরের প্রাণকেন্দ্র সিটি সেন্টারের সরকারি জমি দখল মুক্ত করার কাজে হাত দিয়ে ময়দানে বুলডোজার নামায় এডিডিএ। সেই বুলডোজার কয়েকটি ফুটপাথের ঘুমটি, চা দোকান, ধাবা গুঁড়িয়ে দিলেও, আড্ডার যন্ত্রদানব একটি নামি হোটেল আর একটি বিলাসহুল ক্লাব ঘরের সামনে হাঁটুমুড়ে বসে পড়ে আগষ্টের প্রথম সপ্তাহে। কারণ ওগুলোর মালিকেরা নাকি ভীষণ প্রভাবশালী নয়তো বড়লোকের ছেলেদের আড্ডাখানা।
অবশ্য কয়েকদিনেই ক্লাবঘরটি ধুলোয় মিশিয়ে গেলেও ঠিক হোটেলের দোরগোড়ায় থমকে যায় আড্ডার ‘ দাদাগিরি’।
ইতিমধ্যেই আড্ডায় কর্তা বদল। হপ্তা খানেক আগে তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরিয়ে সেখানে চেয়ারম্যানের কুর্শীতে বসেছেন দুর্গাপুরের হোটেল ব্যাবসায়ী কবি দত্ত। মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের মানুষ। মুখ্যমন্ত্রীর সোমবারের হুঁশিয়ারির পর বুধবার নগর নিগোমের চেয়ারপারসন অনিন্দিতা মুখার্জিকে পাশে বসিয়ে কবি কৌশলে জানিয়ে দিয়েছেন, দখলদার উচ্ছেদের অভিযান শুরু হবে শীঘ্রই। তবে, ঠিক কবে থেকে, তার কোনো দিন ধার্য্য এখনো করেনি কবির সংস্থা, বলে তিনি এদিন জানান। কবি এদিনও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “এ ব্যাপারে কোনো পক্ষপাতিত্ব নয়। ছাড়া হবেনা কোনো জবরদখলকারীকেই।” কিন্তু, এডিডিএর ১৬০০ একর জমিদারির মধ্যে ঠিক কতটাইবা দখল হয়ে গিয়েছে সরকারি জমি? তার বাজার মূল্যই বা কত? না। এর কোনো হিসাবকিতাবই নেই কবির সংস্থা বা অনিন্দিতার সংস্থার হাতে। অথচ, মূখ্যমন্ত্রী ২১ জুলাইয়ের মধ্যে শহরের কত জমি বেদখল হয়ে রয়েছে তার হিসেব চেয়েছেন এইসব নগর উন্নয়ন দপ্তরের অধীন সংস্থাগুলির কাছে। কবি বললেন,”আমরা কাজে হাত দিয়েছি। সব তথ্য পরিসংখ্যান তৈরি করেই নামা হবে।” অথচ, দশমাস আগেই একবার উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে এই আড্ডার পক্ষ থেকেই। তাহলে, কেনো এতোটা গাছাড়া, গড়পড়তা হাবভাব? তাহলে কি গাজোয়ারী করে অভিযানে নেমেছিল তাপসের এডিডিএ ? নাকি, পুরোনো সব হিসাব, ভাঙার রুট বদলে ফেলে নতুন করে অভিযানে নামতে চায় কবির এডিডিএ ? অথবা, সরকারের চোখের আড়ালে কতটা ভাঙতেই হবে আর কোনটা কোনটা বাঁচিয়ে চলতে হবে, তার জরিপ করবে কেউ কেউ, আর তার দায় চেপে যাবে শেষে সেই কবির ঘাড়েই ?
মঙ্গলবার রাজ্য প্রশাসনের লগবুকে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তৈরি তড়িঘড়ি এলাকায় একপ্রস্থ মাইকিং করে দখলদারদের ৩০ জুনের মধ্যে মালপত্র সরিয়ে নেওয়ার ফতোয়া জারি করেছে কবি দত্তর আড্ডা।
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/06/add-01-sanaka-1024x576.gif)
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/06/addnew-bidhan-1024x576.gif)
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/06/add-03-ojashotel-1024x576.gif)
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/06/add-04-avishkar-1024x576.gif)
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/06/add-05-astor-1024x576.gif)
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/06/add-06-govindo-1024x576.gif)