জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, মঙ্গলকোট, পূর্ব বর্ধমান -: অপসংস্কৃতির কালোমেঘ ও ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প যখন ধীরে ধীরে সমাজ জীবনকে আচ্ছন্ন করে ফেলছে তখন তিন দশকের বেশি সময় ধরে লক্ষ্মী পুজোর সময় সুস্থ সংস্কৃতির পরিচয় দিয়ে চলেছে মঙ্গলকোটের সালন্দা গ্রাম। মহিলাদের নাটক, যাত্রা, সঙ্গীত ও নৃত্য সহ বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সৌজন্যে গ্রামের সার্ব্বজনীন শ্রী শ্রী লক্ষ্মীপুজো অন্যমাত্রা লাভ করে। সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষের অংশগ্রহণে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাতাবরণ সৃষ্টি হয়। ৩২ তম বছরেও তার কোনো ব্যতিক্রম ঘটলনা। আত্মীয় স্বজনের উপস্থিতিতে ও সমস্ত গ্রামবাসীদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে লক্ষ্মীপুজোর মধ্যেই পাওয়া যায় দুর্গাপুজোর স্বাদ।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে অনুষ্ঠান সূচীর সময় পরিবর্তন হলেও কাটছাঁট করা হয়নি। ‘সালন্দা মা লক্ষ্মী মিউজিক্যাল ট্রুপস’ পরিবেশিত পূর্ব নির্ধারিত সমস্ত কর্মসূচি পালন করা হয়। একটা সময় গ্রামের যেকোনো উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল মহিলাদের দ্বারা অভিনীত নাটক। রাজু চৌধুরীর নির্দেশনায় পরিবেশিত হয় মহিলাদের নাটক ‘অচ্ছুত কন্যা’। নাটকে অংশগ্রহণ করে গ্রামের মেয়েরা। আবহ সঙ্গীত প্রয়োগ করেন রাজু চৌধুরী, অদিতি রায়, সুহিতা মিত্র, স্নেহা দাস। ছিল যাত্রানুষ্ঠান ‘এ কেমন সভ্য সমাজ’। নির্দেশনায় ছিলেন অচিন্ত্য মিত্র এবং সহনির্দেশনায় রাজু চৌধুরী ও বিকাশ রায়। এছাড়া ছিল গ্রামের ছেলেমেয়েদের পরিবেশিত নৃত্য, সঙ্গীত ও কবিতা সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রশান্ত ব্যানার্জ্জীর স্মৃতিতে তার পরিবারের পক্ষ থেকে ২৭ জন পুরুষ ও মহিলার হাতে যথাক্রমে তুলে দেওয়া হয় লুঙ্গি ও শাড়ি। দরিদ্র মেধাবী ছাত্রী স্নেহা দাসের হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি মেমেণ্টো। একটি বেসরকারি চ্যানেলে অসাধারণ সঙ্গীত পরিবেশনের জন্য সংলাপ রায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি মেমেণ্টো। প্রসঙ্গত তার বাবা বিকাশ রায় নিজেও একজন গুণী হাস্যকৌতুক শিল্পী। পুজো কমিটির পক্ষ থেকে স্বপন রায় বললেন, সমগ্র গ্রামবাসীর সহযোগিতায় আমরা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চলেছি। আশাকরি আগামী দিনেও সবার সহযোগিতা পাব।