নীহারিকা মুখার্জ্জী চ্যাটার্জ্জী, হরিপাল, হুগলী -: বিজ্ঞান অনেক কিছু আবিস্কার করতে পারলেও আজও মানুষের রক্তের বিকল্প কিছু আবিস্কার করতে পারেনি। ফলে থ্যালাসেমিয়া সহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জীবন রক্ষার জন্য অন্য মানুষের রক্তের উপর নির্ভর করতে হয়। রক্তদান হলো এমন একটি মহৎ কাজ যা অন্যের জীবন রক্ষা করতে পারে। রক্তদাতাদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য ২০০৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৪ ই জুন দিনটিকে ‘বিশ্ব রক্তদাতা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে। তখন থেকেই প্রতিবছর একটি আলাদা থিমকে সামনে রেখে দিনটি বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে। ২০২৫ সালের থিম হলো – ‘রক্ত দিন, আশা দিন: একসাথে আমরা জীবন বাঁচাই’।
‘বিশ্ব রক্তদাতা দিবস’ দিনটি স্মরণে রেখে হুগলীর হরিপালের ‘এসো বন্ধু হই’ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে হরিপাল ১৯ নং রেলগেট সংলগ্ন ডা. আশুতোষ দাস শিশু শিক্ষা নিকেতনে একটি স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির ও মরণোত্তর চক্ষুদান অঙ্গীকার শিবিরের আয়োজন করা হয়। প্রসঙ্গত সংস্থার এটি ২৮ তম রক্তদান শিবির এবং ২২ তম মরণোত্তর চক্ষুদান অঙ্গীকার শিবির।
শ্রীরামপুর শ্রমজীবী হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক শাখা শিবির থেকে মোট ৩৫ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করে। এদের মধ্যে ৯ জন জীবনে প্রথমবার রক্তদান করলেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো হরিপাল ছাড়াও প্রতিবেশি তারকেশ্বর, সিঙ্গুর, ধনিয়াখালি, দাদপুর ও জাঙ্গিপাড়া থানা এলাকার ১১ জন রক্তদাতা এই শিবিরে এসে রক্তদান করেন। সংস্থার পক্ষ থেকে রক্তদাতাদের হাতে একটি করে চারাগাছ তুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি দু’জন ব্যক্তি মরণোত্তর চক্ষুদানে অঙ্গীকার করেন।
এবারের শিবিরে বেশ কয়েকটি দৃশ্য উপস্থিত ব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। পাশাপাশি বেডে শুয়ে রিন্টু, ঋদ্ধি ও দেব সুন্দর চক্রবর্তী – এই তিন ভাই, শিল্পা ও সুমিত রক্ষিত – দু’ ভাইবোন এবং নাম ও ছবি প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রেমিক-প্রেমিকা যুগল একসাথে রক্তদান করেন। ‘এসো বন্ধু হই’ সংস্থার ধারাবাহিক কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্ট হয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল ভলেন্টারি ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য শাখার পক্ষ থেকে ডা. পল্লব দে ও অনন্ত চট্টোপাধ্যায় সংস্থার হাতে উৎসাহ স্মারক তুলে দেন। বরাবরের মত এবারও শিবিরটি সফল করে তুলতে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করেন পার্থ ব্যানার্জী (বাহিরখন্ড), গৌতম সাহা, পার্থ ব্যানার্জ্জী (হরিপাল), শুভাশিস চোধুরী, সুজাতা ভট্টাচার্য, রাধারানী ঘোষ, ইমন ভট্টাচার্য, প্রতীম কর্মকার, স্পন্দিতা (রাই) দে প্রমুখ। যারা শিবিরটি সফল করে তুলতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তাদের প্রত্যেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ‘রাজবলহাট কালচারাল সার্কেলের’ পক্ষ থেকে জামাইবাটি স্কুলের শিক্ষক তথা সংস্থার সদস্য মিলন দে বলেন, এদের উৎসাহ ও সহযোগিতার জন্য আমাদের পক্ষে এই শিবিরের আয়োজন করা সম্ভব হয়েছে। আশাকরি আগামীদিনেও তারা আমাদের পাশে থাকবেন।





