সাধন মন্ডল, পাঁচমুড়া, বাঁকুড়া:- টেরাকোটা হল এক প্রকারের পোড়ামাটির শিল্পকর্ম। এটি কাদামাটি ছাঁচে ফেলে বা হাতে তৈরি করা হয়। তারপর উচ্চ তাপমাত্রায় পুড়িয়ে শক্ত করা হয় এবং এগুলো গাঢ় লাল বা কমলা রঙের করা হয়।
আজকাল বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের ‘সাদর অভ্যর্থনা’ জানানোর জন্য মণ্ডপের সামনে ফাইবারের তৈরি জোড়হাত রত একজোড়া নারীর মূর্তি রাখা হয়। ওগুলি অবশ্য ততটা দৃষ্টিনন্দন নয়। এবার অতিথিদের দৃষ্টি আকর্ষণের খুব শীঘ্রই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা যাবে পোড়ামাটির তৈরি এই ‘সাদর অভ্যর্থনা’ মূর্তি। সৌজন্যে বাঁকুড়ার পাঁচমুড়ার কুম্ভকার দম্পতি বিশ্বনাথ-সুতপা জুটি।
এমনিতেই টেরাকোটা গ্রাম হিসেবে বাঁকুড়ার পাঁচমুড়া জগতবিখ্যাত। এখানকার কুম্ভকার সম্প্রদায়ের তৈরি টেরাকোটার হাতি, ঘোড়া, মাটির পুতুল, মনসার চালি, ঘর সাজানোর সৌখিন জিনিসপত্র আজ বিশ্ববন্দিত। এই মূর্তি তৈরি করে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছিলেন প্রয়াত শিল্পী রাসবিহারী কুম্ভকার। তার সুযোগ্য নাতি বিশ্বনাথ কুম্ভকার জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত একজন বিশিষ্ট শিল্পী তথা প্রাথমিক শিক্ষক।একদিকে তিনি মানুষ গড়ার ও অন্যদিকে মাটির পুতুল তৈরি করার কারিগর। তিনি ও তার সুযোগ্যা সহধর্মিনী সুতপা কুম্ভকারের হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হয়েছে পাঁচ ফুট উচ্চতার পোড়ামাটির তৈরি ‘সাদর অভ্যর্থনা’ মূর্তি। এই মূর্তিটি সম্প্রতি কলকাতার বিধাননগরের ইউনিভার্সিটি অফ জুরিডিক্যাল সায়েন্স এর মূল ফটকদ্বারে শোভা বর্ধন করছে।
কুম্ভকার দম্পতির নিপুণ হাতের টেরাকোটার কাজকে কুর্নিশ জানিয়েছেন বিশিষ্ট শিক্ষক রাধামাধব মুখার্জ্জী, তীর্থ মিদ্যা, বিশিষ্ট শিল্পী চন্দন রায়, বিকাশ রায়, মদনমোহন সেনগুপ্ত সহ বিশিষ্ট মানুষজন।
বিশ্বনাথ বাবু বললেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আমাকে পোড়ামাটির তৈরি দুটি ‘সাদর অভ্যর্থনা’ মূর্তির অর্ডার দেওয়া হয়। আমরা স্বামী-স্ত্রী প্রায় দেড় মাস ধরে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে মূর্তি দুটির কাজ সম্পূর্ণ করেছি। এই মূর্তি দুটি শিল্পমহলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তিনি আরও বললেন, তাদের তৈরি বিভিন্ন মূর্তি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শোভাবর্ধন করছে।





