eaibanglai
Homeএই বাংলায়'তৃণমূলে নব জোয়ার'- কতটা সফল হবে!

‘তৃণমূলে নব জোয়ার’- কতটা সফল হবে!

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জীঃ- ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রশাসনের সবচেয়ে নীচের স্তরে আছে গ্রাম পঞ্চায়েত। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামের বাসিন্দারা নিজস্ব সমস্যার বিষয়গুলোকে জানতে পারে এবং সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সক্রিয় হতে পারে। গ্রামের প্রতি একটা দায়বদ্ধতা থাকে। শাসনব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ ঘটার একটা সম্ভাবনা থাকে। এরকমই একটা পঞ্চায়েত ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখেছিলেন গান্ধীজী। 

ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রশাসনের সবচেয়ে নীচের স্তরে আছে গ্রাম পঞ্চায়েত। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামের বাসিন্দারা নিজস্ব সমস্যার বিষয়গুলোকে জানতে পারে এবং সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সক্রিয় হতে পারে। গ্রামের প্রতি একটা দায়বদ্ধতা থাকে। শাসনব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ ঘটার একটা সম্ভাবনা থাকে। এরকমই একটা পঞ্চায়েত ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখেছিলেন গান্ধীজী। 

ঠিক এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ‘তৃণমূলে নব জোয়ার’ নামে এক নতুন প্রচার কর্মসূচির কথা ঘোষণা করলেন। উদ্দেশ্য হলো নিজের পচ্ছন্দের ব্যক্তিকে প্রার্থী করে পঞ্চায়েতে ক্ষমতা দখল করে রাখা নেতাদের মৌরসিপাট্টা ভাঙা। ‘গ্রাম বাংলার মতামত’ কর্মসূচির মাধ্যমে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে স্থানীয় মানুষের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে পঞ্চায়েতের প্রার্থী ঠিক করা। বিতর্ক এড়াতে প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে অনলাইনে মতামত দেওয়ার ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে।

গত ২০ শে এপ্রিল তৃণমূল ভবনে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে অভিষেক তার ভাবনার বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন। সেখানেই তিনি বলেন – আগামী ২৫ শে এপ্রিল দিনহাটা থেকে তার এই প্রচার কর্মসূচি শুরু হবে।

ভোটের আগে দলীয় ভোট – ভাবনার মধ্যে অবশ্যই অভিনবত্ব আছে। বাম আমলে নীরব সন্ত্রাসের জন্য বহু এলাকায় পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারতনা। লৌহ কঠিন শাসনের মধ্যে থাকার জন্য বিষয়টি সেভাবে প্রকাশ্যে আসতনা। তাছাড়া তখন মিডিয়া বা সোশ্যাল মিডিয়ার এত বিস্তার ছিলনা। কিন্তু ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটে যেটা ঘটেছিল সেটা কখনোই সমর্থন যোগ্য নয়। দলের সাধারণ কর্মীরা পর্যন্ত বিষয়টি ভাল চোখে দেখেনি। ক্ষমতার লোভে তৃণমূলের একশ্রেণির নেতা শুধু বিরোধীদের নয় নিজের দলের বিধায়কের অনুগামীদের পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেয়নি। পরে যতই তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব ক্ষমা চেয়ে নিকনা কেন মানুষ কিন্তু বিষয়টি ভাল ভাবে নেয়নি। সুযোগ পেয়েই লোকসভা ভোটে প্রত্যাঘাত করেছে। তৃণমূলের এক শ্রেণির নেতা ও তার পরিবারের বৈষেশিক উন্নতি হলেও, কিছু ব্যতিক্রম থাকলেও, এলাকার যে উন্নতি সেটা কেউ অস্বীকার করতে পারবেনা। সেইসময় স্থানীয় নেতাদের উদ্ধত আচরণের জন্য কিছু আসন হারালেও দলের সার্বিক ক্ষতি হতোনা। এখন সেইসব উদ্ধত নেতাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছেন অভিষেক।

এখনো তৃণমূলের নতুন বিষয়টি সেভাবে প্রচারের আলোয় আসেনি। ব্যাপকভাবে প্রচারের আলোয় এলে সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া বোঝা যাবে। তবে যেটুকু এসেছে, মনে সংশয় থাকলেও, অনেকেই স্বাগত জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য – এরফলে অনেক সাধারণ মানুষ তাদের মত প্রকাশের সুযোগ পাবে। হয়তো সেক্ষেত্রে দলীয় বৃত্তের বাইরে সত্যিকারের সর্বজনগ্রাহ্য প্রতিনিধি উঠে আসতে পারে। এতে গ্রামের উন্নতি হবে। তবে সবার আগে দরকার পঞ্চায়েতের উপর দলীয় হস্তক্ষেপ বন্ধ করা। এমনকি মহিলা প্রধানের স্বামীও যাতে বাড়াবাড়ি করতে না পারে সেটা নিশ্চিত করা। সেক্ষেত্রে দলীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে নিজদের বক্তব্য দল প্রধানকে জানাতেই পারেন।

দলীয় বাধ্যবাধকতার জন্য নাম প্রকাশ করতে না চাইলেও অভিষেকের ভাবনার ভূয়সী প্রশংসা করলেন জনৈক প্রবীণ বামনেতা। তার বক্তব্য – তৃণমূল আমলে উন্নতি হয়েছে সেটা অস্বীকার করতে পারবনা। কারণ সেই ছোঁয়া আমার পরিবারের সদস্যরা পেয়েছে। অভিষেককে সফল হতে হলে আগে দলের ঐসব দুর্নীতিবাজদের সরাতে হবে।

‘তৃণমূলে নব জোয়ার’ – উদ্দেশ্য মহৎ। কিন্তু তোলাবাজ তোলামূলীদের দাপটে উদ্দেশ্য পূরণ হবে তো! কিছু না করেও বাড়িতে সিসি ক্যামেরা বসানো বা রাজপ্রাসাদ তুল্য বাংলো টাইপের বাড়ির মালিক তৃণমূল নেতারা এটা মানতে পারবে তো? তবে দশ শতাংশ সফল হলেও আগামী দিনে এই ভাবনাটা নীচু তলার রাজনীতিতে এক নতুন মাইল ফলকের সৃষ্টি করবে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments