সংবাদদাতা,আসানসোলঃ– তিনি এলাকায় ব্যবসায়ী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। থাকতেন বাড়ি ভাড়া করে। এমনই এক পরিচিত ব্যবসায়ীকে সেবির অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করে চুঁচুড়া থানার পুলিশের হাতে তুলে দিল পুলিশ। আর এই ঘটনায় রীতিমতো সাড়া পড়ে গেছে আসানসোলের সালানপুর ব্লকের রূপনারায়ণপুরে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে চিট ফান্ড ব্যবসার নামে হুগলি জেলার হাজার হাজার মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা তোলেন ওই ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ধৃত ব্যক্তির নাম সুব্রত দাস( ৫৭ )। যদিও এলাকায় তিনি শিবুদা নামেই অধিক পরিচিত ছিলেন। রূপনারায়নপুর- হিন্দুস্থান কেবলস রোডে মনসা মন্দির সংলগ্ন একটি বাড়িতে ভাড়ায় থাকতেন। এছাড়া সালানপুর ব্লকের এনটিপিসি’র কাছে একটি আলমারি এবং গ্রিলের কারখানা চালাতেন।
গত মঙ্গলবার হঠাৎ চুঁচুড়া পুলিশ, সালানপুর থানা ও রূপনারায়ণপুর ফাঁড়ির পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে একযোগে সুব্রত দাসের বাড়ি এবং কারখানায় হানা দেয়। যদিও সেই সময় সুব্রত দাসের হদিশ পাওয়া যায়নি। এরপর গত শনিবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রূপনারায়নপুর ফাঁড়ির পুলিশ সুব্রত দাসকে গ্রেফতার করে চুঁচুড়া পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তাকে আদালতে পেশ করা হলে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। অন্যদিকে তদন্তের প্রয়োজনে পুলিশ সুব্রত দাসের সালানপুরের গ্রিলের কারখানাটি সিল করে দেয়।
জানা গেছে এগরো ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড নামক চিট ফান্ডের ব্যবসা ফেঁদে মূলত হুগলি জেলার মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা টাকা তুলেছিলেন সুব্রত দাস ও তার সহযোগীরা। এই সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছিলেন সুব্রত দাস। তার স্ত্রী সহ আরো তিনজন ছিলেন এই কোম্পানির অন্যতম প্রধান কর্তা । ২০১৫ সালে তাদের বিরুদ্ধে সেবির তরফে অভিযোগ দায়ের হলে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গা ঢাকা দেন সুব্রত দাস ও তার পরিবার। এরপর আসানসোলের সালানপুর ব্লকের রূপনারায়নপুরে এসে বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন সুব্রত দাস। পাশাপাশি গ্রিলের কাখানা খোলেন এবং ধীরে ধীরে এলাকায় তার পরিচিতি বাডে়। এমনকি রূপনারায়নপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পিঠাকেয়ারির ৭২ নম্বর বুথে নিজের নাম তুলে সেখান থেকে নির্বাচনে ভোটও দিতে শুরু করেন। এহেন এলাকার একজন অতি পরিচিত ব্যবসায়ী গ্রেফতার হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে রীতিমতো চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। কীভাবে এতবড় প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তি এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে নির্বিঘ্নে থাকছিলেন ও ব্যবসা চালাচ্ছিলেন, ভেবে পাচ্ছেন না এলাকাবাসী।