সংবাদদাতা,বাঁকুড়া:– সমস্যার কথা জানানোর জন্য তার কাছে যেতে হয়না, বরং তিনিই সাইকেল নিয়ে পৌঁছে যান মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। ইনি বাঁকুড়া পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌরশহরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের দু-দুবারের কাউন্সিলর, হীরালাল চট্টরাজ। এলাকায় অবশ্য তিনি হিরণ নামেই বেশী পরিচিত। ভোর হলেই সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়ান, মানুষের সমস্যা শোনার জন্য, পাশে থাকার জন্য।
বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে যেখানে শাসক দলের নেতা মন্ত্রী পদাধিকারীদের বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি দুর্নীতি কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠছে তখন এই ধরণের শাসক নেতার খোঁজ মেলা ভার। এমনটাই মনে করেন স্থানীয়দের একাংশ। একবার জনগনের ভোটে জিতে চেয়ারে বসলেই যেখানে জনপ্রতিনিধিদের বেশীরভাগেরই টিকিটি পর্যন্ত দেখতে পাওয়া যায় না, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে একেবারে উল্টো হীরালাল বাবু। সকাল ৬টা বাজতে না বাজতে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে অভাব অভিযোগের কথা শুনতে, আর এটা একদিন নয় দু-দিনের ঘটনা নয়, রোজ নিয়ম মাফিক এই কাজ করে থাকেন পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান। এমনটাই জানাচ্ছেন পৌরশহরের বাসিন্দারা। আর পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে বলতে একটা বট গাছের তলা। যেখানে গেলেই দেখা যাবে বড় বড় হরফে লেখা রয়েছে উপ-পৌরপ্রধানের কার্যালয়। নিয়ম মাফিক গাছ তলাতেই চলে তার অফিস আর মানুষের আনাগোনা।
যদিও সাইকেল নিয়ে ঘোরার বিষয়ে অন্যকথা জানালেন পৌরসভার ভাইস চ্য়ারম্যান। হীরালাল বাবুর মতে সাইকলে নিয়ে ঘোরার তার মূল্য উদ্দেশ্য প্রতিবাদ, পেট্রোল-ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ। এছাড়া সাইকেল নিয়ে সরাসরি মানুষের কাছে সহজে পৌঁছে যাওয়া যায় ও তাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে কথা বলা যায়। পাশাপাশি হীরালালবাবু জানান, গত ১০ বছর ধরে তার কোনও অফিস ঘর নেই। গাছ তলাই তার কার্যালয়। এভাবে সহকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সহজেই মেলামেশা করা যায় বলে দাবি তার।
হীরালাল চট্টরাজের মতো আরও কয়েকজন পৌরপ্রধান,উপপ্রধান বা নেতা মন্ত্রী থাকলে রাজ্যের চিত্রটাই আমূল বদলে যেতে পারতো- এমনটাই মনে করেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।