সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ– এক সময় গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে আলো দিত “বিষ্ণুপুরী” লন্ঠন। দেশজোড়া খ্যাতি ছিল এই লন্ঠনের। বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে লন্ঠনের আলোর জায়গা নিয়েছে বৈদ্যুতিক আলো। কালের নিময়মে এখন বিলুপ্তির পথে লন্ঠন শিল্প। একই ভাবে বিলুপ্তির পথে শতাধিক প্রাচীন বিখ্যাত “বিষ্ণুপুরী লন্ঠন”। তবে আজও বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই লন্ঠন শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিষ্ণুপুরে হাতে-গোনা কয়েকটি পরিবার। এই শিল্পকে ফিরেয়ে আনতে বিষ্ণুপুরেরই দশাবতার তাসের সাহায্য় নিচ্ছেন শিল্পীরা। রঙীন নঁকসায় লন্ঠনের গায়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে দশাবতার। সুন্দর সাজে সেজে উঠছে ঐতিহ্যবাহী লন্ঠনগুলি। যা মূলত ঘর সাজানোর সামগ্রী হিসেবে ক্রেতাদের আকর্ষণ করছে।
লন্ঠনের সাদা কাচে বিভিন্ন রং দিয়ে আঁকা হচ্ছে বিষ্ণুপুরের দশ অবতার । যেমনটা আঁকা হত দশাবতার তাসে । আর ফের লন্ঠনকে মানুষের চাহিদার যোগ্য করে তুলতে ব্যবহার করা হয়েছে বিদ্যুত ও ব্যাটিরির । আবার কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে সুগন্ধি মোমবাতিরও। অর্থাৎ দশবতার তাসের সাজে তৈরি এই লন্ঠন জ্বালাতে কেরোসিনের প্রয়োজন হবে না।
শিল্পীরা লন্ঠন গুলিকে বাজার থেকে কিনে নিয়ে এসে তাতে দশাবতার তাসের উপরে যে অবতার গুলি আঁকা হয় সেই অবতার গুলি এঁকে লণ্ঠনকে এক নতুন রূপ দিচ্ছেন। লণ্ঠনের চার দেওয়ালের গায়ে আঁকা বিষ্ণুর দশাবতার যেন লণ্ঠনের আলো হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিল্পীরা জানাচ্ছেন বর্তমান সময়ে লন্ঠনকে বেঁচে থাকতে হলে আধুনিক সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে হবে। সেই কারণেই, ঐতিহ্যবাহী দশাবতার তাস এবং লণ্ঠনের একটি ফিউশন তৈরি করে এক্সপেরিমেন্ট করা হচ্ছে।
শিল্পীদের এই এক্সপেরিমেন্ট কতটা সফল হবে সেতো সময়ই বলবে। কিন্তু লন্ঠনগুলি নতুন সাজে হয়ে উঠেছে যথেষ্ট আকর্ষণীয়। যা যেকোন ঘরের কোন সাজিয়ে তুলবে এক মুহুর্তে। বর্তমানে এই লন্ঠন তৈরিতেই ব্যস্ত বিষ্ণুপুরের শিল্পীরা ।