eaibanglai
Homeএই বাংলায়এও এক প্রতারণা!!!

এও এক প্রতারণা!!!

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,পূর্ব বর্ধমানঃ- এটা অনেকটা এইরকম- চচ্চড়ি দিয়ে, স্বাদ যাইহোক না কেন, বিরিয়ানির দাম নেওয়া। অথবা এটা বলাও অত্যুক্তি হবেনা- চার আনার পুঁইশাকের উপর জিএসটি নেওয়া। লোকাল ট্রেন অথচ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে এক্সপ্রেস ট্রেনের। ঘটনাটা পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের সাহেবগঞ্জ লুপ লাইন শাখার দুটি ট্রেনের।

দীর্ঘদিন ধরে বীরভূমের বিস্তীর্ণ অংশ, রামপুরহাট ও সাঁইথিয়া সংলগ্ন মুর্শিদাবাদ ও দুমকার একাংশ এবং পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট, আউসগ্রাম ও ভাতারের বিস্তীর্ণ অংশের বাসিন্দাদের বড় ভরসার প্রতীক বিশ্বভারতী ফাস্ট প্যাসেঞ্জার। ০৩০৪৮ ডাউন ট্রেনটি সকাল ৫ টা ১০ মিনিট নাগাদ রামপুরহাট থেকে ছাড়ে এবং ১০ টা ১০ মিনিট হাওড়া স্টেশনে পৌঁছায়। আবার বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিট নাগাদ হাওড়া থেকে ছাড়ে। রামপুরহাট থেকে বর্ধমান ১১২ কিলোমিটার যাত্রাপথে ট্রেনটি প্রতিটি স্টেশনে থামলেও বর্ধমান থেকে হাওড়া ১০৬ কিলোমিটার যাত্রাপথে সমস্ত স্টেশনে থামে না। অর্থাৎ ট্রেনটি অর্ধেকের থেকে সামান্য বেশি পথ লোকাল হিসাবে এবং বাকিটা এক্সপ্রেস হিসাবে চলাচল করে। অথচ ভাড়া আদায় হয় এক্সপ্রেসের।

অন্যদিকে ০৩৪৬৯ আপ তিনপাহাড় ট্রেনটি সকাল ৬ টা ৩০ মিনিট নাগাদ বর্ধমান স্টেশন থেকে ছাড়ে এবং তিনপাহাড় যাওয়ার ২০৭ কিলোমিটার যাত্রাপথের প্রতিটি স্টেশনে থামে। অর্থাৎ ট্রেনটি পুরোপুরি লোকাল হিসাবে চলাচল করে। কিন্তু ভাড়ার ক্ষেত্রে এখানেও একই নীতি গ্রহণ করা হয়।

যেহেতু দুটি ট্রেনই সকালের দিকে সংশ্লিষ্ট শাখার প্রথম ট্রেন তাই নিত্য যাত্রীদের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ যাত্রীদের খুবই সুবিধা হয়। কিন্তু গত কয়েক মাস যাবৎ দুটি ট্রেনের টিকিটের মূল্য প্রায় তিন গুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। মাসিক টিকিট থাকার জন্য নিত্য যাত্রীদের সমস্যা না হলেও সাধারণ যাত্রীরা পড়েছে চরম সমস্যায়। যেসব ক্ষেত মজুর কাজের জন্য বনপাস থেকে গুসকরা অথবা সবজি নিয়ে সপ্তাহে দু’একদিন গুসকরায় আসছে তাদের ত্রিশ টাকা দিয়ে টিকিট কাটতে হচ্ছে।

কাজের জন্য মাসে দু’একবার বোলপুর বা বর্ধমান যায় মোবাইল মিস্ত্রি বাবলা দত্ত। কোনো মাসে আবার একটু বেশি হয়ে যায়। টিকিটের দাম বেড়ে যাওয়ায় সে চরম সমস্যায় পড়েছে। বাবলা বাবুর বক্তব্য – স্পেশাল তকমা দিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে প্যাসেনঞ্জার ট্রেন থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এতো চরম অন্যায়। তার আরও বক্তব্য – নিজেদের মধ্যে লড়াই করলেও এইভাবে ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধি হওয়া সত্ত্বেও রাজনৈতিক দলগুলো নীরব। তাছাড়া আগে গুসকরা স্টেশন থেকে সকাল ৭ টা ৩০ মিনিট নাগাদ বেনারস এক্সপ্রেস ধরে শিয়ালদহ যেতাম। আবার জরুরি কাজ সেরে সকাল ১০ টা নাগাদ জয়নগর ট্রেনটি ধরে গুসকরায় ফিরতাম। দীর্ঘদিন ধরে দু’টো ট্রেনই বন্ধ। ফলে আমার মত যাত্রীদের খুবই অসুবিধা হচ্ছে।

যোগাযোগ করা হয় সাহেবগঞ্জ লুপ লাইন শাখার কয়েকজন স্টেশন ম্যানেজারের সঙ্গে। সমস্যাটা তাদের সামনে তুলে ধরলে তারা কোনো মন্তব্য করতে চাননি। যোগাযোগ করা হয় হাওড়া ডিভিসনের জেনারেল ম্যানেজারের সঙ্গে। যিনি ফোন ধরেছিলেন তার উত্তর – উপর থেকে যেমন নির্দেশ আসবে আমরা সেটাই অনুসরণ করব।

সমস্যাটা নিয়ে গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জ্জীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তার বক্তব্য – ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে অনেকেই অভিযোগ করেছে। আমরা জানি সকালের দু’টি ট্রেনে বহু সাধারণ মানুষ বিভিন্ন জায়গায় কাজে যায়। তাদের পক্ষে অতিরিক্ত ভাড়া দেওয়াটা সত্যিই কষ্টকর। আবার দু’টি ট্রেন বন্ধ থাকার জন্য অনেকেরই সমস্যা হচ্ছে। সাধারণ যাত্রীদের স্বার্থে বিধায়কের সঙ্গে আলোচনা করে খুব শীঘ্রই এব্যাপারে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments