নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প স্বাস্থ্য সাথী নিয়ে ফের বির্তক শহর দুর্গাপুরে। অভিযোগ দুর্ঘটনায় জখম যুবককে নিয়ে হাসপাতালের দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও রোগীকে ভর্তি নিল না কোনও হাসপাতাল। বাধ্য হয়ে নগদ টাকায় চিকিৎসার চুক্তিতে বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ছেলেকে ভর্তি করেন অসহায় বাবা। কিন্তু ছেলের চিকিৎসার ব্যায়ভার চালাতে না পেরে অবশেষে দুর্গাপুর মহকুমা শাসকের দ্বারস্থ অসহায় পরিবারটি।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা দুর্গাপুরে অবস্থিত এডিডিএ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর সেখানে পোড়া জিনিসপত্র সরানোর কাজ করছিলেন এডিডিএ-র অস্থায়ী কর্মী দুর্গাপুরের ওল্ড কোর্ট মোড়ের সবুজ পল্লীর বাসিন্দা বছর ২৫-এর রবি কুমার। ওইদিন রাতে কাজ সেরে সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন রবিকুমার। ট্রাফিক পুলিশ তাকে উদ্ধার করে সিটিসেন্টারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হলেও ভর্তি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। রবি কুমারের বাবা পেশায় গাড়ির খালাসি শিবচন্দ্র রায়ের অভিযোগ এরপর ওই রাতে ছেলেকে নিয়ে শহরের আরও দুটি হাসপাতালে গেলে সেখানেও তাকে বেড নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসার কথা শুনেই কোনও হাসপাতাল রোগীকে ভর্তি নিতে চায়নি। অবশেষে বিধাননগরের পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে নগদ টাকায় চিকিৎসা পরিষেবার চুক্তিতে ছেলেকে ভর্তি করেন শিবচন্দ্র। ওই রাতেই রবি কুমারের অস্ত্রোপচার করা হয় ও তার একটি পা কেটে বাদ দেওয়া হয়। শিবচন্দ্রবাবুর দাবি ইতিমধ্যেই চিকিৎসার খরচ বাবদ ৮০ হাজার টাকা দিলেও তার পক্ষে আর টাকা জোগাড় করা সম্ভব হয়নি। তাই স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে চিকিৎসা পরিষেবা চালানোর অনুরোধ জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু অভিযোগ বকেয়া প্রায় দেড় লক্ষ টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপরই বিষয়টিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়ে মহকুমা শাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন অসহায় শিবচন্দ্র রায় ও তার পরিবার।
অন্যদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। হাসাপাতালের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার গৌতম সাহা এদিন দাবি করেন রোগীর পরিবারের লোকজন নিজেরাই নগদ টাকার বিনিময়ে চিকিৎসা পরিষেবা চালানোর কথা জানিয়েছিলেন। পরে তাদের অক্ষমতার কথা জানান ও স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতয়ার চিকিৎসা চালানোর কথা বলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেই আবেদনে সাড়াও দেন, কিন্তু গৌতমবাবুর দাবি যেহেতু নগদ টাকায় চিকিৎসা পরিষেবা শুরু হয়েছিল তাই বকেয়া টাকাটা নগদেই মেটাতে হবে। বাকি চিকিৎসা পরিষেবা সাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওয়ায় তারা করতে রাজি।
যদিও এই ঘটনার পর শহরের বেসরকারি হাসপাতালগুলির স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে পরিষেবা দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পৌর নিগম থেকে শুরু করে প্রশাসনিক স্তরে হাসপাতালগুলিকে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে মানুষকে পরিষেবা দিতে বার বার আবেদন জাননো হয়েছে তবুও আদপে তা কতটা কার্যকর হয়েছে তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।