জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, গুসকরাঃ- উৎসবও যে সমাজসচেতনামূলক প্রচারের মঞ্চ হয়ে উঠতে পারে তার নিদর্শন পাওয়া গ্যালো গুসকরায়। সৌজন্যে পুরসভার স্বাস্থ্য দপ্তর। প্রায় এক মাস ব্যাপী বাঙালির শ্রেষ্ঠ শারদীয় উৎসব শেষ হলো। বিশ্বকর্মা পুজোর হাত ধরে যে উৎসব শুরু হয় জগদ্ধাত্রী পুজোর সঙ্গে সঙ্গে তার সমাপ্তি ঘটলেও আপামর বাঙালি মূলত দুর্গা ও কালী পুজোর মধ্যেই নিজের আনন্দটা সীমাবদ্ধ রাখে। কিন্তু তার মাঝেই প্রথমবারের জন্য অন্য রকম প্রতিযোগিতার আয়োজন করে গুসকরা পুরসভা।
প্রতিবছর এই সময় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঘটে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে মশক বাহিত এই রোগ নাকি করোনার থেকেও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। অথচ একটু সচেতন হলেই সহজেই এই রোগকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এরজন্য দরকার জনসচেতনতা। সেই বার্তা মানুষের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার জন্য গুসকরা পুরসভার স্বাস্থ্য দপ্তর অভিনব উদ্যোগ নেয়।
পুরসভার সূত্রে জানা যাচ্ছে পুর এলাকায় ১৯ টি দুর্গাপুজো ও ১৮ টি কালী পুজো হয়। আলোকসজ্জা, ভিন্ন স্বাদের মণ্ডপসজ্জা, থিম ইত্যাদির আকর্ষণে শুধু শহরবাসী নয় শহরের বাইরে থেকেও বহু মানুষ শহরের বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে হাজির হয়। সেই সুযোগটাই গ্রহণ করে স্বাস্থ্য দপ্তর। পুরসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে বিশেষজ্ঞ টিম ঘুরে বেড়ায়। তারপর উপস্থিত জনগণের সামনে ডেঙ্গু রোগ সম্পর্কিত সচেতনতা প্রচার করে। একইসঙ্গে তারা এই বিষয়ে প্রতিটি পুজো উদ্যোক্তাদের ভূমিকা লক্ষ্য করে। সেখানেই বিজয়ীদের চিহ্নিত করে।
পূর্ব ঘোষণা মত ডেঙ্গু রোগ সম্পর্কিত সচেতনতা বিষয়ে যেসব উদ্যোক্তা বিজয়ী হয় তাদের, দুটি বিশেষ পুরস্কার ও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ক্লাবগুলির হাতে পুরস্কার ও শংসাপত্র তুলে দেওয়ার জন্য ১১ ই নভেম্বর পুরসভায় এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্হানীয় বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার, পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জ্জী সহ প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, পুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিক অশোক কুমার কাঁড়ার, বড়বাবু মধুসূদন পাল, স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মী চন্দন যশ, বিজয়ী ও অংশগ্রহণকারী ক্লাবের কর্মকর্তা সহ অন্যান্যরা।
চন্দন বাবু বলেন – ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের জন্য সবচেয়ে আগে দরকার সচেতনতা। আমাদের আহ্বানে সাড়া দেওয়ার জন্য ক্লাবগুলির প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আশাকরি আগামী দিনেও তাদের সহযোগিতা পাব।
বিধায়ক বলেন – যেভাবে ক্লাবগুলি তাদের সমাজ সচেতনতার পরিচয় দিয়েছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। চেয়ারম্যান বলেন – পুরসভার এই ভাবনাটা সত্যিই অভিনবত্বের দাবি রাখে। বহু মানুষের সামনে যেভাবে তারা ডেঙ্গু সম্পর্কিত সচেতনতা প্রচার করেছে আশাকরি তার সুফল পাওয়া যাবে।