নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- সমাজমুখী সংগঠন দুর্গাপুর আড্ডা ইয়ং অ্যাসোসিয়েশন-এর চারটি সামাজিক প্রকল্পের অন্যতম ‘সিঞ্চন’। এই ‘সিঞ্চন’ প্রকল্পের ছায়ায় বেড়ে ওঠা চার ছাত্র এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় দুর্দান্ত সাফল্য অর্জন করেছে। শুধু পাশ করাই নয়, তারা প্রমাণ করেছে—সম্ভাবনার যত্নে সিঞ্চন করলে, সাফল্যের ফুল ফোটে বাধাহীন।
🌟 সফল চার মুখ:
🔹 শুভ্র বিশ্বাস – ৯১.৫৭%
🔹 মানব মুর্মু – ৯০.১৪%
🔹 সুজয় সরকার – ৮৭.৮৬%
🔹 শুভদীপ বাগদী – ৮০.৭১%
এই চারজন ছাত্র ২০১৯ শিক্ষাবর্ষে পঞ্চম শ্রেণি থেকে ‘সিঞ্চন’-এর পাঠচর্চা, সাংস্কৃতিক চর্চা এবং মানবিক মূল্যবোধের শিক্ষা গ্রহণ করে ধীরে ধীরে নিজেদের গড়ে তুলেছে। এদের সাফল্য কেবল তাদের নিজস্ব অধ্যবসায় ও নিষ্ঠার প্রতিফলন নয়, বরং একটি বৃহৎ সামাজিক উদ্যোগের স্থায়িত্ব, দায়বদ্ধতা ও সাফল্যেরও নিদর্শন। তারা শুধু তাদের পরিবার বা দুর্গাপুর আড্ডা ইয়ং অ্যাসোসিয়েশন-এর সাথে কোনো না কোনোভাবে যুক্ত সবাইকে গর্বিত করেনি তারা প্রমাণ করেছে সঠিক দিকনির্দেশনা, নৈতিক সহচর্য এবং ভালোবাসা পেলে কোনো শিশুই পিছিয়ে থাকে না।
সিঞ্চনের সকল ছাত্রবন্ধু, সহায়ক কর্মী, সংগঠনের প্রতিটি সদস্য, বিধাননগর বয়েজ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ঐ স্কুলের সকল শিক্ষকশিক্ষিকা এবং শুভানুধ্যায়ীদের নিরলস অধ্যাবসায় নিঃশব্দে গড়ে তুলেছে এই সাফল্যের ভিত এবং সম্ভব হয়েছে এই অসামান্য ফলাফল।
🎓 ‘সিঞ্চন’— কেবল একটি শিক্ষাপ্রকল্প নয়, এক মানবিক যাত্রাপথ
২০১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রতি বছর দুর্গাপুর আড্ডা ইয়ং অ্যাসোসিয়েশন পরিচালিত ‘সিঞ্চন’ প্রকল্পে ৫ জন পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র সুযোগ পেয়ে আসছে প্রতি বছর; তাদের থাকা, খাওয়া, পঠনপাঠন, জামাকাপড় এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় সমস্ত খরচই বহন করে সংগঠন, দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সেই দায়িত্ব বহ করা হয়। আর্থিক ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতা যাদের স্বপ্নপূরণে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়, তাদের পাশে দাঁড়িয়ে এই সংগঠন ২০১৮ সাল থেকে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে চলেছে।
অনেক সময় স্কুলে যা শেখা হয় না—জীবনের পাঠ, স্বপ্ন দেখা, সঠিক পথ বেছে নেওয়ার সাহস—সৃজনশীলতা—মানবিক মূল্যবোধ, তা শেখে ‘সিঞ্চন’ প্রকল্পের মধ্যে থেকে।
🌻 সমাজের জন্য বার্তা
📢 “সাফল্য তখনই অর্থপূর্ণ, যখন তা আরও দশজনকে পথ দেখায়। আজকের এই সাফল্য যেন অন্ধকারে জ্বলে ওঠা চারটি দীপ্ত প্রদীপ, যা অনুপ্রেরণা জোগাবে আরও শত শত শুভ্র, মানব, সুজয় ও শুভদীপদের; আলোকিত করবে সমাজের গভীর থেকে গভীরতম কোণকে।
🌱 এই গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয়, যদি সমর্থন থাকে, দৃষ্টিভঙ্গি থাকে, তাহলে পিছিয়ে থাকা কোনো শিশুও পৌঁছতে পারে শিক্ষার উচ্চতম শিখরে। এ যেন একটি ছোট্ট বীজ থেকে শুরু হয়ে এখন এক সম্ভাবনাময় বৃক্ষ হয়ে ওঠার পথ!
এ সাফল্য শুধু একটি পরীক্ষার নয়, এ এক আস্থার জয়, সামাজিক দায়বদ্ধতার জয়।





