জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,আউসগ্রামঃ- পূর্ব বর্ধমানের আউসগ্রাম বিধানসভার বাসিন্দাদের প্রতি কি আলাদা টান অনুভব করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী? হতে পারে! এর আগে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড়ে আচমকা মুড়ি চেয়েছিলেন এবং সেটা পেয়েছিলেন এক যুবকের কাছে। সৌভাগ্যের ব্যাপার তার বাড়ি ছিল আউসগ্রাম বিধানসভা এলাকায়। এবার পূর্ব নির্ধারিত হলেও ছেলেটার বাড়ি সেই একই বিধানসভা এলাকায়।
আউসগ্রাম ১ নং ব্লকের দ্বারিয়াপুরে বাড়ি কালিচরণ টুডুর। মাত্র কয়েকদিন আগেই আউসগ্রামে আয়োজিত আদিবাসীদের অনুষ্ঠানে নৃত্যরত ছেলেটির বাদ্যযন্ত্রের করুণ অবস্থা দেখে কিছুটা বিষণ্ণ হয়ে পড়েন পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শ্রীকুমার রায়। নিজের গ্রামের ছেলে বলে নয়, একজন শিল্পীর অসহায় অবস্থা দেখে কিছু একটা করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। দলের উর্ধ্বতন নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে কালির আবেদন পত্র পৌঁছে যায় মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। তারপর ঘটে যায় সেই বিরল ঘটনা।
২ রা ফেব্রুয়ারি বর্ধমানে প্রশাসনিক সভা করতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জ্জী। ভরা সভায় সবার সামনে কালিচরণের হাতে তুলে দেন তার স্বপ্নের বাদ্যযন্ত্র। সেখানেই সে সেটা একটু বাজিয়েও নেয়।
স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তার মত গরীব ঘরের এক আদিবাসী ছেলের হাতে বাদ্যযন্ত্র তুলে দিচ্ছেন সেই খুশিতে কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসে কালিচরণের। কোনোরকমে সে বলে – এটা আমার কাছে স্বপ্নের মত। কোনোদিন ভাবিনি এটা ঘটতে পারে। উনাকে আমার শতকোটি প্রণাম। একইসঙ্গে গ্রামের তৃণমূল নেতাদের প্রতিও সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
যার সৌজন্যে এই স্বপ্নের মত বিরল ঘটনাটা ঘটল সেই শ্রীকুমার বাবু বললেন – আমাদের দল সবসময়ই গরীব মানুষের পাশে থাকে। ছেলেটির বাদ্যযন্ত্রের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর কানে তুলতেই তিনি সঙ্গে সঙ্গে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। তিনি আরও বলেন – আমাদের এলাকা আদিবাসী অধ্যুষিত। কালিচরণের মত আরও অনেক শিল্পীর বাদ্যযন্ত্রের অবস্থা খারাপ। আমরা প্রত্যেকের হাতে যাতে তাদের শখের বাদ্যযন্ত্র তুলে দিতে পারি সেই বিষয়ে খুব শীঘ্রই আলোচনা করব।