eaibanglai
Homeএই বাংলায়দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের অচল অবস্থা কেটে গেল, কাল থেকেই স্বাভাবিক হচ্ছে কাজকর্ম

দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের অচল অবস্থা কেটে গেল, কাল থেকেই স্বাভাবিক হচ্ছে কাজকর্ম

নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুরঃ– দীর্ঘ ছদিন টানা দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের অচলাবস্থা কেটে গেল। আজ এক সাংবাদিক সম্মেলন করে দুর্গাপুর বার এসোসিয়েশনের পদাধিকারীরা জানিয়ে দিলেন কাল থেকেই স্বাভাবিক হচ্ছে দুর্গাপুর আদালতের কাজকর্ম । এদিন দুর্গাপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের পদাধিকারীরা এক সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, “দুর্গাপুরের তৃণমূল আইনজীবী সেলের নাম জড়িয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা হচ্ছে বিচারকের এজ্লাস বয়কটের সিদ্ধান্তের ঘটনায় । তৃণমূল আইনজীবী সেলের সাথে এর কোন যোগ নেই বলে সাফ জানিয়ে দেন। দুর্গাপুর বার অ্যাসোসিয়েশন বা তৃণমূল আইনজীবী সেলের কোন আইনজীবী মাননীয় বিচারককে হুমকি দেননি বলেও এদিন দাবি করেন বার অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা।”

দুর্গাপুর বার এসোসিয়েশনের আইনজীবী এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে বিশিষ্ট আইনজীবী কল্লোল ঘোষ ও দেবব্রত সাই পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেন , “দুর্গাপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে সমস্ত রাজনৈতিক দলের মতাদর্শের লোকজনরা রয়েছেন। শুধুমাত্র তৃণমূল আইনজীবী সেলের নাম করে বিভিন্ন মাধ্যমে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে তার বিরুদ্ধে তারা তীব্র প্রতিবাদ জানান । মাননীয় বিচারপতি অসীমানন্দ মন্ডলের সাথে দুর্গাপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের কিছু অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে সমস্যার জন্যই গত ছদিন আদালতে এই অচল অবস্থা চলছিল। আজ থেকে তা স্বাভাবিক হল। আগামীকাল থেকে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে সমস্ত কাজকর্ম স্বাভাবিক দিনের মতনই চলবে বলে জানিয়েছেন তারা। “

উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনের গণনার দিন বুদবুদে কংগ্রেস কর্মীদের মারধরের ঘটনায় তৃণমূলের প্রার্থীর স্বামী তথা দুর্গাপুর মহকুম আদালতের মুহুরী রতন মন্ডল সহ গ্রেপ্তার হয় ১১ জন তৃণমূল কর্মী। ১২ ই জুলাই ধৃতদের তোলা হয় দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে। দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের মুহুরী রতন মন্ডলের জামিনের আর্জি করা হলে জমিনের আর্জি খারিজ করে দেয় দুর্গাপুর আদালতের মাননীয় বিচারপতি অসীমানন্দ মন্ডল। তারপর থেকেই মাননীয় বিচারপতি অসীমানন্দ মন্ডলের এজ্লাস বয়কট করে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীরা বলে অভিযোগ। পশ্চিম বর্ধমান জেলা কংগ্রেস সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী অভিযোগ করে বলেছিলেন “ভোট গণনার দিন মানকর/বুদবুদ মহাকালী বিদ্যালয়ে কংগ্রেস নেতা ও কর্মীদের মারধরের ও হত্যার ষড়যন্তকারী আসামিদের ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়ার ফলে মাননীয় বিচারপতি অসীমানন্দ মন্ডলের এজ্লাস বয়কট করছে তৃণমূলের দলদাস বার এসোসিয়েশন।” তিনি আরো অভিযোগ করেছিলেন “উক্ত তৃণমূল কংগ্রেস দলদাস বার এসোসিয়েশনের একাধিক সদস্য মাননীয় বিচারকের কাছে অবিলম্বে নিঃশর্তে, গ্রেপ্তার হওয়া ১১ জন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী সমর্থককে নিঃস্বার্থ মুক্তি দিতে হবে বলে দাবি জানিয়ে ছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেসের ওই দলদাস আইনজীবীদের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানাই, যখন নিরপরাধ গরীব মানুষের বিনা দোষে জেল হয় তখন এদের দেখা পাওয়া যায়না। আর আজ দোষীদের মুক্তির দাবীতে কোর্ট বয়কট ? আর খুনের ষড়যন্ত্রকারী ও ভোট লুটকারি অপরাধীদের যখন পুলিশ নিয়ে এসেছে আদালতের সামনে তখন তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে কোর্ট বয়কট করছেন ? আপনাদের ধিক্কার জানাই । তৃণমূল কংগ্রেসের ওইসব আইনজীবীদের আগামী দিনে মানুষ প্রত্যাখ্যান করবে এবং সময় মত যথাযথ জবাব দেবে বলে তিনি জানিয়ে ছিলেন । “

পশ্চিম বর্ধমান জেলা জাতীয় কংগ্রেস দলের আই এন টি ইউ সি, সভাপতি, সুভাষ সাহা বলে ছিলেন , “বিচারের বানী নিভৃতে কাঁদে। যেখানে সংবিধানের একটা স্তম্ভ হচ্ছে বিচার ব্যাবস্থা, সেই বিচার ব্যাবস্থা উপর জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা যদি উঠে যায় বিচার ব্যাবস্থার উপর, তাহলে মানুষ কার উপর ভরসা রাখবে।”

অন্যদিকে দুর্গাপুর মহকুমা বার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এইরকম কোর্ট বয়কটের কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েনি বলে দাবি করা হয়ছিল। শুধুমাত্র নাকি বিরোধী রাজনৈতিক দল প্রচারের ফায়দা তোলার জন্যই এই অভিযোগ করা হচ্ছে বলে দুর্গাপুর বার এসোসিয়েশনের একাধিক আইনজীবী জানিয়ে ছিলেন?

অবশেষে দীর্ঘ ছদিন টানা ধরে একাধিক রাজনৈতিক দলের মধ্যে দোষারোপের পর আজ এক সাংবাদিক সম্মেলন করে দুর্গাপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের মাননীয় সদস্যরা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেন আগামী কাল থেকেই স্বাভাবিক হবে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের সব কাজকর্ম । কথায় আছে, “যার শেষ ভালো তার সব ভালো ।” দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল ও তার আশেপাশের বহু মানুষ এই ছদিন লাগাতার দুর্গাপুর আদালতের অচল অবস্থার জন্য বিচার থেকে বঞ্চিত ছিলেন । অবশেষে সাধারণ বিচার প্রার্থীরা আবার সঠিক বিচার পাবেন এই আশাতেই বুক বাঁধছেন সবাই।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments