সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- কর্মক্ষেত্রে এক কিশোরকে মোবাইল চুরির অপবাদ দেওয়ায় ঘটে গেল ধুন্ধুমার কাণ্ড। ফোন চুরির অপবাদে আত্মঘাতী কিশোরের দেহ নিয়ে কর্মক্ষেত্রে বিক্ষোভ দেখাল পরিবার। পাশাপাশি থানায় অভিযোগ দায়ের করে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানায় তারা। ঘটনা আসানসোলের রানিগঞ্জ থানার বাঁশরার।
জানা গেছে, অন্ডাল থানা এলাকার বাসিন্দা বছর ১৬’র কিশোর অভিরূপ প্রসাদ গত আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে রানিগঞ্জ থানার বাঁশরায় একটি বেসরকারি কোম্পানির গোডাউনে ( একটি নামী বেসরকারি কোম্পানির গোডাউন) নিরাপত্তা রক্ষীর কাজ করতো। গত ২৬ নভেম্বরে রাতে ওই গোডাউনে কাজ করা দুই রাজমিস্ত্রীর দুটি মোবাইল ফোন চুরি যায়। অভিযোগ, সেই চুরির দায় অভিরুপ প্রসাদের উপর চাপায় গোডাউনের ম্যানেজার রবীন্দ্র সিং। পরের দিন ২৭ নভেম্বর অভিরুপ বাড়ি চলে যায়। পরে ম্যানেজার অভিরুপের মাকেও ফোন করে চুরির ঘটনার কথা বলে। পরিবারের দাবি চুরির অপবাদে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করে ওই কিশোর। শুক্রবার সকালে ঘরের মধ্যেই তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিন দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে কিশোরের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত। এরপর পরিবারের সদস্যরা মৃতদেহ নিয়ে সোজা পৌঁছে যান রানিগঞ্জ থানার বাঁশরায় ওই বেসরকারি কোম্পানির গোডাউনে। তারা সেখানে মৃতদেহ রেখে গোটা ঘটনার তদন্ত চেয়ে ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছান রানিগঞ্জের তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলার জ্যোতি সিং, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায় সহ এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা। তারাও গোটা ঘটনার তদন্ত দাবি করেন। পাশাপাশি, তারা কোম্পানির আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। একইসাথে তারা প্রশ্ন তোলেন, ১৬ বছরের এক কিশোরকে দিয়ে কি করে ওই কোম্পানি গত আড়াই বছর ধরে নিরাপত্তা রক্ষীর কাজ করাচ্ছে? খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছায় রানিগঞ্জ থানার পুলিশও। পরে মৃতের পরিবারের তরফে রানিগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
শেষ পর্যন্ত কোম্পানির তরফে মৃত কিশোরের পরিবারকে ৮ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ও দেহ সৎকার এবং অন্য কাজের জন্য আরো ৪০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা জানানো হয়। এই প্রতিশ্রুতির পরে রাত আটটার সময় বিক্ষোভ তুলে নেন পরিবারের সদস্যরা। যদিও ওই কোম্পানির তরফে পুরো বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্য করা হয় নি।