eaibanglai
Homeএই বাংলায়মহালয়ায় তর্পণ না করার ফল কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে জানেন তো?

মহালয়ায় তর্পণ না করার ফল কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে জানেন তো?

সঙ্গীতা চৌধুরীঃ- আগামীকাল মহালয়া। মহালয়া মানে পিতৃপক্ষের শেষ আর দেবীপক্ষের সূচনা। মহালয়া মানেই বাঙালির আবেগ, মহালয়া মানেই ভোর ভোর উঠে রেডিওতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায় মহিষাসুরমর্দিনী শোনা, মহালয়া মানেই ডিডি বাংলার পুরোনো মহালয়া দেখে নস্টালজিয়ায় ভাসা। কিন্তু এ ছাড়াও মহালয়ার সাথে জড়িয়ে আছে তর্পণের গল্প, মহালয়ার দিন তর্পণ না করার ফল হতে পারে ভয়ঙ্কর। চলুন আজ আমরা জেনে নিই তর্পণ সম্পর্কে জড়িয়ে থাকা সেই পৌরাণিক আখ্যান। মহালয়ার দিন স্বর্গত পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করতে হয়, তর্পণ মানে হলো স্বর্গবাসী পূর্বপুরুষদের স্মরণ করে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করে অঞ্জলি দেওয়া। তর্পণ করলে পিতৃপুরুষদের আশীর্বাদ লাভ করা যায় এবং তার ফলে তর্পণকারীর জীবন শুভ হয়ে ওঠে।

সনাতন ধর্ম অনুযায়ী, প্রতিটি মানুষের তর্পণ করা কর্তব্য, ব্রাহ্মণ থেকে শুদ্র সকলের তর্পনে অধিকার আছে। তবে মেয়েদের তর্পনে অধিকার নেই, কিন্তু যদি কোন বিধবা নারী নিঃসন্তান হন তিনি তর্পণ করতে পারেন। আজকে বলবো তর্পণ না করলে কোন ব্যক্তির পরিণতি কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে। পুরানে এই নিয়ে একটি গল্প আছে। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পর অর্জুনের হাতে বধ হয়ে মারা যান দানবীর কর্ণ। এরপর কর্ণের আত্মা স্বর্গে যায় কিন্তু স্বর্গে অন্যান্য আত্মাদের যখন খাবার হিসেবে খাদ্য পানীয় দেওয়া হতো, সেখানে কর্ণকে খাবার হিসেবে শুধুই সোনা দেওয়া হতো যা দেখে কর্ন অবাক হয়ে যান এবং দেবরাজ ইন্দ্রকে তিনি এর কারণ জিজ্ঞেস করেন।

তখন দেবরাজ ইন্দ্র বলেন জীবিত থাকাকালীন কর্ণ কখনো তার পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করেন নি। যেহেতু তিনি তার পূর্বপুরুষদের অভুক্ত রেখেছেন সেই কারণে মৃত্যুর পর তাকেও খাবার দেওয়া হচ্ছে না, দানবীর কর্ণ বেঁচে থাকাকালীন গরীব মানুষদের প্রচুর পরিমাণে সোনা দান করেছেন সেই কারণে মৃত্যুর পর তাকে খাবার হিসেবে সোনা দেওয়া হচ্ছে।

এই কথা শুনে কর্ন জানান, তিনি যে তর্পণ করতে পারেন নি এতে তার কোন দোষ নেই, কারণ জন্মের পর‌ই তার মা কুন্তি তাকে পরিত্যাগ করেন, নিজের জন্ম পরিচয় পর্যন্ত তিনি জানতেন না। মৃত্যুর কয়েকদিন আগে কুন্তি এসে তাকে তার জন্ম পরিচয় জানান আর এই ঘটনার কিছুদিন পরেই তার মৃত্যু হয়। তিনি নিজের জন্ম পরিচয় জানতেন না বলেই তর্পণ করতে পারেন নি। কর্ণের কোন দোষ নেই বুঝে দেবরাজ ইন্দ্র তখন কর্ণকে দ্বিতীয় সুযোগ দেন। কণর্কে তিনি ১৬ দিনের জন্য মর্ত্যে পাঠান এবং এই ১৬ দিন কর্ণ তার প্রয়াত পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করেন। ১৬ দিন পরে কর্ণ আবার আত্মা রূপে স্বর্গে ফিরে যান। এই ১৬ দিন সময়কেই পিতৃপক্ষ বলে আর এই ১৬ দিনের শেষ যেদিন কর্ণ আবার স্বর্গে ফিরে গিয়েছিলেন, সেই দিনটিই হলো মহালয়া।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments