অর্পিতা ঘোষ, ফলতা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা -: অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে যখন একরাশ অভিযোগ সামনে আসছে তখন দীর্ঘদিন ধরে পাঠদান, বিদ্যালয়ের সৌন্দর্যায়ন, শিশুদের জন্মদিন পালন, ইলিশ উৎসব, দুর্গাঠাকুর দর্শন থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেই বৈচিত্র্যের পরিচয় দিয়ে চলেছে বিখ্যাত বাঙালি বৈজ্ঞানিক আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুর স্মৃতিধন্য দক্ষিণ ২৪ পরগণার ফলতা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। এতদিন ওদের পৃথিবী ছিল ‘খিড়কি থেকে সিংহদুয়ার’। অন্যরা যখন শীতকালে বেড়াতে যায়, ওরা তখন আড়ালে বসে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। যেখানে দু’বেলা সন্তানদের মুখে দু’মুঠো খাবার তুলে দিতে ওদের গরীব মা-বাবা হিমশিম খায় সেখানে সন্তানদের নিয়ে বেড়াতে যাওয়াটা ছিল দুঃস্বপ্ন। ফলে ওদের মনে একটা আফসোস ছিল।
সেই আফসোস দূর করার লক্ষ্যে ওদের জন্য শিক্ষামূলক ভ্রমণের আয়োজন করল বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রিজার্ভ বাসে বিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী সবাই মিলে মহানন্দে বেড়িয়ে পড়ে শিক্ষামূলক ভ্রমণে। গন্তব্যস্থল দীঘার জগন্নাথ দেবের মন্দির দর্শন। এছাড়াও আরও একাধিক স্থান তারা দর্শন করার সুযোগ পায়। সঙ্গে ছিল খাওয়া দাওয়া। ভ্রমণের সুযোগ পেয়ে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে শিশুরা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তিলক নস্কর বললেন – বেড়াতে যাওয়ার জন্য ওদের শিশুমন ছটফট করে। কিন্তু পরিবারের আর্থিক সামর্থ্য নাই। ওদের মনস্তত্ত্ব আমরা ভালভাবেই বুঝতে পারি। ওদের অবচেতন মনের সুপ্ত ইচ্ছে পূরণ করার জন্য শিক্ষামূলক ভ্রমণের আয়োজন করা হয়। ওদের মুখের সরল ও পবিত্র হাসি আমাদের সবচেয়ে বড় পাওনা।


















